মনিরুজ্জামান মনির: জন্মদিনে জানালেন বই প্রকাশের খবর

একুশে পদকপ্রাপ্ত গীতিকবি মনিরুজ্জামান মনির সংগীতের দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে এবারই প্রথম প্রকাশ করতে যাচ্ছেন একটি বই। আর সেই ঘোষণাটি দিলেন ৭২তম জন্মদিনে এসে। জানালেন, এবারের অমর একুশে গ্রন্থমেলায় প্রকাশ পাচ্ছে তার লেখা ৩শ গানের একটি সংকলন। যার নাম রেখেছেন তারই লেখা একটি বিখ্যাত গানের নামে, ‘সূর্যোদয়ে তুমি’।

তার আগে বলে রাখা, মনিরুজ্জামান মনির ১৯৫২ সালের এই দিনে (২৮ জানুয়ারি) সিলেটের সুনামগঞ্জ জেলার তেঘরিয়া গ্রামে এক মুসলিম পরিবারে জন্ম নেন। ঢাকায় এসে প্রফেশনালি প্রথম গান লেখেন বাংলাদেশ বেতারের জন্য। ১৯৭২ সালে লেখা সেই গানের নাম ‘ও রূপসী ও ষোড়শী’। প্রণব দাশের সুরে গানটি গেয়েছিলেন আকরামুল ইসলাম। ঢাকা বেতারের কমার্শিয়াল সার্ভিসে গানটি প্রচার হয়। এরপর ১৯৭৩/৭৪ সালের দিকে কিংবদন্তি সংগীত পরিচালক আলাউদ্দিন আলীর সুরে বিটিভিতে গান লেখার শুরু মনিরুজ্জামান মনিরের। এরপর ১৯৮০ সালের দিকে আলাউদ্দিন আলীর সুরেই ‘সন্ধিক্ষণ’ সিনেমায় প্রথম গান লেখেন। এরমধ্যে সাবিনা ইয়াসমিনের কণ্ঠে ‘চলতে পথে বাধা আসে’ গানটি ভালো জনপ্রিয়তা পায়।

সেই শুরু। এরপর আর থামতে হয়নি মনিরুজ্জামান মনিরকে। গানের স্বীকৃতি হিসেবে পেয়েছেন তিনটি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, ‘দুই জীবন’ (১৯৮৮), ‘চেতনা’ (১৯৮৯) ও ‘দোলনা’ (১৯৯০) ছবিতে গান লেখার সুবাদে। যদিও তিনটি পদকই গত বছর চুরি হয়েছে তার ঢাকার বাসা থেকে। যা উদ্ধার হয়নি এখনও। গীতিকবি গানের জন্য ২০০৪ সালে পেয়েছেন একুশে পদকও।

৭২তম জন্মদিনে এসেও গীতিকবি ব্যস্ত সময় পার করছেন তার প্রথম বই ‘সূর্যোদয়ে তুমি’র পাণ্ডুলিপি নিয়ে। এটি আসছে আজব প্রকাশ থেকে।

মনিরুজ্জামান মনির বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘গত প্রায় তিন মাস ধরে আমি বইটি গোছাচ্ছি। এতো এতো গান, সেখান থেকে তিনশ গান বাছাই করা এবং সেগুলোর সঠিক লিরিক সংগ্রহ করা, বেশ কঠিন কাজ। তবে এরমধ্যে আমার সব কিছু প্রায় শেষের পথে। বইটি ছাপা হওয়ার অপেক্ষায় আছি। আমার জন্য দোয়া করবেন, যেন সুস্থতার সঙ্গে বাকি জীবনটা বাঁচি। ইচ্ছে আছে আরও একটি বই প্রকাশের।’ 

মনিরুজ্জামান মনিরযে ছিলো দৃষ্টির সীমানায়/ সে হারালো কোথায় কোন দূর অজানায়...; আলাউদ্দিন আলীর সুরে শাহনাজ রহমতুল্লাহর কণ্ঠে বিটিভির জন্য এমন কালজয়ী সমৃদ্ধ কথার গান যিনি রচনা করেছেন, তিনিই আবার লিখেছিলেন সিনেমার সুপারহিট গান ‘কি যাদু করিলা/ পিরিতি শিখাইলা...’। আলম খানের সুরে গানটি গেয়েছেন এন্ড্রু কিশোর ও সাবিনা ইয়াসমিন। রেডিও, টেলিভিশন ও সিনেমায় এমন অসংখ্য উদাহরণ সৃষ্টি করে অনেকটা সাদামাটা জীবন নিয়ে প্রায় নিঃসঙ্গ সময়ে বসে আছেন এই কিংবদন্তি গীতিকবি। এখনও যিনি রোজ অপেক্ষায় থাকেন, গান লেখার প্রস্তাব নিয়ে কেউ হয়তো ফোন করবেন কিংবা সিনেমার জন্য সুরকার-প্রযোজক-পরিচালকদের নিয়ে জমাটি আড্ডায় মাতবেন নতুন সৃষ্টির আশায়।

আমার কোনও সুরকার বেঁচে নেই, গান লেখাবে কে: মনিরুজ্জামান মনির