ইরানের জাতীয় পুরস্কার জিতেছে জয়া আহসানের ‘ফেরেশতে’

প্রতি বছর ফজর চলচ্চিত্র উৎসব শেষে ইরান সরকার জাতীয় পুরস্কার প্রদান করে থাকে সেসব ছবিকে, যেগুলোর মাধ্যমে মানবাধিকার, শিক্ষা, পরিবেশ, দাতব্য কাজ ইত্যাদি বিভাগে দেশটির ‘জাতীয় ইচ্ছার প্রতিফলন’ ঘটে। এবার সেই বিভাগে ইরান সরকারের মন জয় করেছে জয়া আহসানের প্রথম ইরানি চলচ্চিত্র ‘ফেরেশতে’।

জয়া আহসান জানান, এই পুরস্কারটি ‘খয়র-ই-মান্দেগার’ নামক একটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে প্রদান করা হয়, যা ইরানের সমস্ত দাতব্য প্রতিষ্ঠান, দাতা, এনজিও-এর প্রতিনিধিত্ব করে এবং প্রতিষ্ঠানটি ইরানে ইউনিসেফের মতো সক্রিয়।

‘ফেরেশতে’ চলচ্চিত্রের প্রধান দুই অভিনেতা জয়া আহসান এবং সুমন ফারুককেও করা হয় পুরস্কৃত। দুজনকেই ‘খয়র-ই-মান্দেগার’ স্মারক প্রদান করে সম্মানিত করা হয়। 

ফজর চলচ্চিত্র উৎসবে জয়া আহসানজয়াকে দেওয়া স্মারকপত্রে বলা হয়, ‘‘শিল্পের মাধ্যমে দানশীলতা দেখানো জীবনের সবচেয়ে সুন্দর চিত্র। যা কখনও কখনও মানুষকে তার নিজের প্রকৃতির মহাসাগরের গভীরে টেনে নিয়ে যায়। যাতে তার অস্তিত্বের মুক্তা আহরণ করতে পারে। ‘ফেরেশতে’ চলচ্চিত্রটি ভালোবাসা এবং শিল্পের এক অসাধারণ মিশ্রণ, যেখানে আপনি প্রতিটি মুহূর্তে দয়ার উজ্জ্বল আভা দেখতে পাবেন। খয়র-ই-মান্দেগার দাতব্য সংস্কৃতি কেন্দ্র এই চিরন্তন কাজে ভূমিকা রাখার জন্য ৪২তম ফজর আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের ‘জাতীয় ইচ্ছার প্রতিফলন’ বিভাগে আপনাকে পুরস্কার প্রদান করা হচ্ছে।’’

উল্লেখ্য যে, ইরানি বিখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতাদের চলচ্চিত্রগুলির পাশাপাশি ‘ফেরেশতে’ চলচ্চিত্রটি ফজর আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের প্রধান বিভাগের উদ্বোধনী চলচ্চিত্র হিসাবে আগত দর্শক, সংবাদপত্র এবং সমালোচকদের দ্বারা সমাদৃত হয়েছিল।

জয়াকে দেয়া জাতীয় স্মারকপত্রইরানে ‘ফেরেশতে’ চলচ্চিত্রটি ‘দুরুগহায়ে যিবা’ নামে পরিচিত। এ চলচ্চিত্রে জয়া আহসান ও সুমন ফারুক  ছাড়াও বাংলাদেশের আরও বেশ কজন শিল্পী অভিনয় করেছেন। যেমন রিকিতা নন্দিনী শিমু, শহীদুজ্জামান সেলিম, শাহেদ আলী, শাহীন মৃধা, শিশুশিল্পী সাথী প্রমুখ। 

পুরস্কার হাতে মুর্তজা আতশ জমজমইরানি পরিচালক মুর্তজা আতশ জমজমের সঙ্গে সিনেমাটি লিখেছেন বাংলাদেশের মুমিত আল-রশিদ। ফারসি ও বাংলা অনুবাদ করেছেন মুমিত আল-রশিদ ও ফয়সাল ইফরান।

ইরান-বাংলাদেশ যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত ‘ফেরেশতে’ সিনেমাতে সহ-প্রযোজক হিসেবে আছে ইমেজ সিনেমা, সি তে সিনেমা এবং ম্যাক্সিমাম এন্টারপ্রাইজ বাংলাদেশ।

টিম ‘ফেরেশতে’উল্লেখ্য, গত ১ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়েছিল ৪২তম ফজর আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব। রবিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) সমাপনী অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে এটি শেষ হয়েছে। এতে তাসনিয়া ফারিণ অভিনীত ‘ফাতিমা’ ছবিটি অংশ নেই। যার জন্য তাকে ‘ইস্টার্ন ভিস্তা’ বিভাগে ক্রিস্টাল সিমোর্গ পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। ছবিটি নির্মাণ করেছেন বাংলাদেশের ধ্রুব হাসান। 

ইরানের এই উৎসবে পুরস্কারের তালিকায় এবার বাংলাদেশের আরও একটি যোগসূত্র রয়েছে। তা হলো বাংলাদেশ ও গ্রিসের যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত ‘মাইটি আফরিন: ইন দ্য টাইম অব ফ্লাডস’ ছবির জন্য সিনেমা স্যালভেশন বিভাগে ক্রিসটাল সিমোর্গ পুরস্কার পেয়েছেন এর নির্মাতা অ্যাঞ্জেলো রালিস।ফজর চলচ্চিত্র উৎসবে জয়া আহসান