দশ/বারো গানে সাজানো আস্ত একটা অ্যালবাম পরের কথা, একক গানই এখন আর সচরাচর প্রকাশ হয় না। সেই অসময়ে ৯ ভাগে ৬৩টি মৌলিক গান প্রকাশের উদ্যোগ নেওয়া চাট্টিখানি কথা নয়। যেগুলোতে কণ্ঠ দিয়েছেন ৫৪ জন শিল্পী। সবগুলো গানের কথা ও সুর স্থপতি ও চিত্রনির্মাতা এনামুল করিম নির্ঝরের।
গানের এই অসামান্য সংকলনের নাম ‘যেটা আমাদের নিজের মতোন’।
৮ জুন রাজধানীর বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ইসফেনদিয়ার জাহেদ হাসান মিলনায়তনে সংকলনটির প্রথম পর্ব প্রকাশ উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠান আয়োজন হয়। এতে সংকলনের শিল্পী ও কলাকুশলীবৃন্দ, গণ্যমান্য ব্যক্তিত্ব ছাড়াও প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের ধারাবাহিক প্রক্রিয়ায় এনামুল করিম নির্ঝর ‘নয় বছরের বড়’ নামের শৈল্পিক প্রজেক্টের অংশ হিসেবে স্থাপত্য, চলচ্চিত্র ও সংগীত এবং অন্যান্য সৃজনশীল-সামাজিক উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। তারই ধারাবাহিকতায় উক্ত অ্যালবামটির গানগুলো ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করতে চলেছেন তিনি।
সংকলনটির ৯টি পর্বে ৭টি করে গান রয়েছে। এই প্রকল্পে সংগীতায়োজক হিসেবে কাজ করেছেন ১৩ জন সংগীত পরিচালক। অ্যালবামের গানগুলো তৈরি ও প্রকাশ করছে ইকেএনসি (এক নির্ঝর কোলাবরেশানস) ও গানশালা। ৯টি পর্বের সবগুলো গান ধারাবাহিকভাবে অন্তর্জালে উন্মুক্ত হবে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত। যার শুরুটা হলো ৮ জুন রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যার গাওয়া গান দিয়ে।
৮ জুন থেকে ধারাবাহিকভাবে প্রথম পর্বে প্রকাশিতব্য গানগুলোতে আরও কণ্ঠ দিয়েছেন শুভেন্দু দাস, অবন্তী সিঁথি, সাগর দেওয়ান, সায়ন্তিনী ত্বিষা, আদনান রুশদি ও পুনম ঘোষ। গানগুলোতে সংগীত পরিচালক হিসেবে কাজ করেছেন লাবিক কামাল গৌরব, শুভেন্দু দাস, সৈয়দ কামরুজ্জামান সুজন, আদনান রুশদি, অটমনাল মুন।
ব্যক্তিগত মেধা ও প্রাতিষ্ঠানিক দায়বদ্ধতার পারস্পরিক ঐক্যচর্চা হিসেবে ইকেএনসি বিভিন্ন সৃজনশীল মাধ্যমে তরুণ পেশাজীবীদের নিয়ে কাজ করছে। তারই ধারাবাহিকতায় এই প্রজেক্টের জন্ম ও প্রকাশ।
অনুষ্ঠানে নির্ঝর তার বক্তব্যে বলেন, “নয় বছরের বড়’ উদ্যোগের প্রধানতম উদ্দেশ্য বিভিন্ন সৃজনশীল মাধ্যমের পেশাজীবীদের জন্য আত্মনির্ভরশীল ও ভবিষ্যতমুখী প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা। গানশালা মৌলিক গান নির্মাণের নিয়মিত চর্চা করে যাচ্ছে। যার ভিত গড়তে প্রাতিষ্ঠানিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক সামাজিক দায়বদ্ধতাকে ঐক্যবদ্ধ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এই প্রক্রিয়ার উদ্দেশ্য কণ্ঠশিল্পী, বাদ্যযন্ত্রী, গীতিকার, সুরকার, শব্দ প্রকৌশলী, সংগীতায়োজক ও প্রযোজকদের জন্য একটি ছাউনি তৈরি করা। যার মাধ্যমে তারা সৎভাবে অর্থ উপার্জন করবে এবং একসময় তারাই এই প্রতিষ্ঠান পরিচালনার দায়িত্ব নেবে।”
তিনি আরও জানান, স্বাধীনতার চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে যারাই কাজ করে তাদের পীঠে হাত চাপড়িয়ে উৎসাহ দিতে উনি কখনও কার্পণ্য করেন না। এনামুল করিম নির্ঝরের এই উদ্যোগ তার মধ্যে অন্যতম।
বলা দরকার, বাংলাদেশের ইতিহাসে এতোগুলো গান একসাথে প্রকাশের ঘটনা বিরল। এর আগে ২০১৫ সালে এক নির্ঝরের গান উদ্যোগের মাধ্যমেই প্রকাশিত হয় ১০১টি মৌলিক বাংলা গানের সংকলন- ‘এক নির্ঝরের গান: ১০১’।