ঘড়ির কাঁটায় রাত আটটা ত্রিশ বাজার একটু আগে মঞ্চে উঠলেন উপমহাদেশে অন্যতম জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী অরিজিৎ সিং। এটি তার দ্বিতীয় বাংলাদেশ সফর। উঠেই আগের সফরের স্মৃতিচারণ করলেন, ‘আমি আগেও এসেছি। তখনও আপনাদের ভালোবাসা পেয়েছি- এবারও পাবো আশা করি।’
অরিজিৎ যখন কথা বলছিলেন তখন মঞ্চে প্রস্তুত ‘সিম্পনি অর্কেস্ট্রা টিম’-এর ৭০ জন সদস্য। বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি স্টেডিয়াম উপস্থিত ভক্তদের। শুরু করলেন সম্প্রতি মুক্তি পাওয়া ‘ফিতুর’ এর শিরোনাম গান দিয়ে।
এরপর ভক্তদের বুঝতে বাকি নেই কোন গান বাজতে চলেছে। অরিজিতের আগেই দর্শকরা গাওয়া শুরু করলেন। ‘আশিকি-২’ তো এ প্রজন্মের কাছে প্রেমের বাইবেল। তাই ‘আশিকি’ গানটি যখন গাওয়া শুরু করলেন তখন সবার মনে ভালোবাসা উঁকি দিবে এটাইতো স্বাভাবিক।
‘দোয়া’, ‘হার কিসকো’, ‘আজ পীর’, ‘মে রাঙ সারবতো কা’, ‘মন মাস্ত’ গাইলেন এক এক করে। ‘কাবি যো বাদল হে’ যখন অরিজিতের গলায় তখন স্টেডিয়াম জুড়ে হর্ষধ্বনি। এরপর ‘কি করে তোকে বলব’ গেয়ে সাময়িক বিরতিতে গেলেন।
আবার মঞ্চে এলেন অরিজিৎ। এবার একটু ভিন্নভাবে। মঞ্চের এক কোনায় রাখা পিয়ানোতে হাত রাখলেন, আর গাইলেন ‘সাইয়া’। এরপর শুরু করলেন বাংলাদেশি বেশকিছু জনপ্রিয় গানের কোরাস। শুরুটা রুদ্র মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ’র ‘ভালো আছি ভালো থেকো’ দিয়ে। হাবিবের ‘ভিতর বলে’, ‘ঢেউ যেন এক’র পর অর্ণবের ‘সে যে বসে আছে একা একা’। তপুর ‘এক পায়ে নূপুর’ গাওয়ার পর চলে গেলেন ‘বোঝে না সে বোঝে না’র টাইটেল গানে।
পিয়ানো রেখে এবার গিটার হাতে নিলেন। গাইলেন ‘তালাশ’ এর ‘ধীরে যারা’ গানটি। সবাইকে চমকে দিয়ে আরও গাইলেন জেমস এর ‘আলবিদা’। ‘এক সুরুজ’, ‘সাথিয়া কাফি নেহি’ গাওয়ার সময় স্টেডিয়াম জুড়ে হিমশীতল হাওয়া বয়ে যাচ্ছিল প্রচন্ড গরমের মাঝেও।
‘তেরি দিওয়ানি’, ‘ভিগি ভিগি’, ‘হামারি আধুরি কাহানি’, ‘সানামরে’, ‘গেরুয়া’ গাওয়ার পর গাইলেন ‘খামোশিয়া’। ঘড়ির কাঁটায় তখন রাত এগারোটা। তখনও বিরামহীন চলছে অরিজিতের পরিবেশনা। ক্লান্তিহীন মন্ত্রমুগ্ধকর পরিবেশনা- থামার কোনও লক্ষণ নেই। অতঃপর, মধ্য রাতে প্রায় ১২টার কাছে গিয়ে থেমেছেন অরিজিৎ, ভেঙ্গেছেন অন্য এক গানের মেলা।
কনসার্টের শুরুতে দেশীয় শিল্পী অদিত ও তার দল খানিক হেরে গেলেও শেষ বিচারে ঠিকই জিতেছে বাংলাদেশ। কারণ অরিজিতের কণ্ঠে ঘুরে ফিরেই এসেছে জেমস, অর্ণব কিংবা হাবিবের গান।