আমেরিকান চলচ্চিত্র পরিচালক ডেভিড লিঞ্চ মারা গেছেন। বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) বাংলাদেশ সময় দিবাগত রাত ১২টার সময় পরিবারের পক্ষ থেকে তার অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে মৃত্যুর খবর জানানো হয়েছে। এই পোস্টে বলা হয়েছে, ‘তিনি আর আমাদের মাঝে নেই। পৃথিবীতে একটি বিরাট শূন্যতা তৈরি হলো।’
ডেভিড লিঞ্চের বয়স হয়েছিলো ৭৮ বছর। গত আগস্টে তিনি জানিয়েছিলেন, অনেক বছর ধরে ধূমপানের কারণে ফুসফুসে এম্ফিসিমা রোগে ভুগছেন। সময় গড়ানোর সঙ্গে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। গত নভেম্বরে আমেরিকান ম্যাগাজিন পিপল’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি উল্লেখ করেন, হাঁটতে গেলে তার অক্সিজেনের প্রয়োজন হয়।
ডেভিড লিঞ্চের মৃত্যুতে তার পরিচালিত ‘ওয়াইল্ড অ্যাট হার্ট’ ছবির অভিনেতা নিকোলাস কেজ, আমেরিকার খ্যাতিমান নির্মাতা স্টিভেন স্পিলবার্গ, রন হাওয়ার্ডসহ অনেকে শোক প্রকাশ করেছেন।
কান উৎসব কর্তৃপক্ষ শোকবার্তায় বলেছে, ‘ডেভিড লিঞ্চ বিরল ও কালজয়ী কিছু সৃষ্টিকর্ম রেখে গেছেন, যার চলচ্চিত্রগুলো আমাদের কল্পনার চারণভূমিকে সমৃদ্ধ করবে ও যারা ছায়াছবিকে অব্যক্ত ভাষা প্রকাশের একটি শিল্প বলে মনে করেন তাদের অনুপ্রাণিত করবে।’
যুক্তরাষ্ট্রের মন্টানা রাজ্যের মিসুলা শহরে ১৯৪৬ সালের ২০ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন ডেভিড লিঞ্চ। প্রথমে চিত্রকর্মে ক্যারিয়ার গড়েন তিনি। ষাটের দশকে শ্টফিল্ম বানিয়ে নির্মাণে স্থায়ী হয়ে যান তিনি। তাকে অনেকে মনে করতেন অভিনব চলচ্চিত্র পরিচালক। তার বেশিরভাগ চলচ্চিত্রই পরাবাস্তববাদী হিসেবে বিবেচিত হয়েছে।
১৯৭৭ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত প্রথম চলচ্চিত্র ‘ইরেজারহেড’-এর মাধ্যমে নিজের জাত চিনিয়েছিলেন ডেভিড লিঞ্চ। ‘দ্য এলেফ্যান্ট ম্যান’ (১৯৮০), ‘ব্লু ভেলভেট’ (১৯৮৬), ‘মুলহল্যান্ড ড্রাইভ’ (২০০১) ছবির জন্য অস্কারে সেরা পরিচালক বিভাগে তিনবার মনোনয়ন পেয়েছেন তিনি। অসামান্য সব কাজের স্বীকৃতি হিসেবে ২০২০ সালে সম্মানসূচক অস্কার পেয়েছেন এই নির্মাতা।
প্রায় তিন দশক সময়ে মোট ১০টি চলচ্চিত্র পরিচালনা করেছেন ডেভিড লিঞ্চ। বাকিগুলো হলো– ‘ডুন’ (১৯৮৪), ‘টুইন পিকস: ফায়ার ওয়াক উইথ মি’ (১৯৯২), ‘লস্ট হাইওয়ে’ (১৯৯৭), ‘দ্য স্ট্রেইট স্টোরি’ (১৯৯৯) ও ‘ইনল্যান্ড এম্পায়ার’ (২০০৬)।