ব্রিটেনে রাজনৈতিক আশ্রয়ে মালদ্বীপের সাবেক প্রেসিডেন্ট

রাজনৈতিক শরণার্থী হিসেবে মালদ্বীপের সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ নাশিদকে যুক্তরাজ্যে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। নাশিদের আইনজীবীর বরাত দিয়ে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।

বর্তমানে মালদ্বীপের বিরোধীদলীয় নেতা নাশিদকে গতবছর সন্ত্রাসবিরোধী আইনে ১৩ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। তবে ওই দণ্ড প্রদানের বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। মেরুদণ্ডের চিকিৎসা করানোর জন্য মোহাম্মদ নাশিদকে যুক্তরাজ্যে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল।

নাশিদের আইনজীবী হাসান লতিফ জানিয়েছেন, তাকে রাজনৈতিক শরণার্থীর মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। তবে এ বিষয়ে ব্রিটিশ সরকার কোনো মন্তব্য করেনি বলে জানিয়েছে বিবিসি।

সাবেক মানবাধিকারকর্মী নাশিদ ২০০৮ সালে মালদ্বীপের গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রথম প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন। ওই নির্বাচন দ্বীপদেশটির সাবেক ‘লৌহমানব’ মামুন আব্দুল গাইয়ুমের তিন দশকব্যাপী শাসনের অবসান ঘটে। তবে কয়েক সপ্তাহের সরকারবিরোধী বিক্ষোভ এবং কিছু পুলিশ কর্মকর্তার বিদ্রোহের মুখে ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারিতে তিনি পদত্যাগে বাধ্য হন। মূলত সেনা কর্মকর্তারা একজন জ্যেষ্ঠ বিচারককে গ্রেফতারের প্রেক্ষাপটে নাশিদের পদত্যাগ ত্বরান্বিত হয়।

মোহাম্মদ নাশিদ

পদত্যাগের আগে টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণে মোহাম্মদ নাশিদ বলেন, ‘চলমান পরিস্থিতিতে আমি পদত্যাগ করলে দেশের জন্য মঙ্গলজনক হবে। আমি কঠোর হাতে দেশ পরিচালনা করতে চাই না, তাই পদত্যাগ করছি।’ পরে প্রেসিডেন্টের দফতর থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে জনগণকে শান্ত থাকার আহ্বান জানানো হয়। পরে নাশিদ অভিযোগ করেন, অভ্যুত্থান ঘটিয়ে তাকে ক্ষমতা থেকে সরানো হয়েছে।

মালদ্বীপের বর্তমান প্রেসিডেন্ট আব্দুল্লাহ ইয়ামিন ২০১৩ সালে এক বিতর্কিত নির্বাচনে জয়ী হয়ে ক্ষমতাসীন হন। তিনি সাবেক প্রেসিডেন্ট গাইয়ুমের সৎ ভাই।

সোমবার নাশিদের কার্যালয় থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়, মালদ্বীপ স্বৈরশাসকদের কবলে চলে যেতে থাকায় আমি এবং অন্যান্য বিরোধীদলীয় রাজনৈতিকরা অনুভব করছি এই সময়ে কাজ অব্যাহত রাখতে আমাদের নির্বাসনে যাওয়া ছাড়া অন্য কোনও উপায় নেই।

মালদ্বীপের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, কারাদণ্ডের মেয়াদ এড়ানোর জন্য নাশিদ চিকিৎসার অনুরোধটি ব্যবহার করতে পারেন বলে আশঙ্কা করছেন তারা।

নাশিদকে যুক্তরাজ্যে রাজনৈতিক আশ্রয় দেওয়া হয়েছে, এটি নিশ্চিত হওয়ার জন্য মালদ্বীপ সরকার অপেক্ষা করছে বলেও জানিয়েছে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বিষয়টি নিশ্চিত করা হলে মালদ্বীপ সরকার ‘যুক্তরাজ্য সরকারের উপর অসন্তুষ্ট হতে পারে’ বলেও সতর্ক করেছে মালদ্বীপ। সূত্র: বিবিসি।

/এমপি/