'জর্ডানে ৩০ হাজার শরণার্থী শিশুর দিন কাটছে অনাহারে'

জর্ডানে থাকা সিরীয় শরণার্থীরা.jpg-small৬০ হাজার-৭০ হাজার শরণার্থীকে ত্রাণ সহায়তা দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে জর্ডান সরকার। আর সেকারণে জর্ডানের শরণার্থী শিবিরে থাকা ৩০ হাজারেরও বেশি সিরীয় শিশুকে অনাহারে দিন কাটাতে হচ্ছে। আম্মান কর্তৃপক্ষ সিরিয়া সংলগ্ন উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সীমান্তে বসবাসরত শরণার্থীদের জন্য খাবার এবং চিকিৎসা সহায়তা বন্ধ করে দেওয়ার পর এ সংকট তৈরি হয়েছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা খবরটি নিশ্চিত করেছে।
গত মাসে ‘বার্ম’ এলাকায় আইএসের হামলার পর সেখানে জরুরি ত্রাণ সরবরাহ বন্ধ করে দেয় জর্ডান কর্তৃপক্ষ। সীমান্ত এলাকাটিতে কড়াকড়ি শুরু হয়। ওই এলাকায় গতিবিধি নিষিদ্ধ করে বলা হয়, কেউ সেখানে চলাচল করতে চাইলে তাদের প্রশ্রয় না দিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বার্ম এলাকাতে রুকবান শরণার্থী শিবিরটি অবস্থিত। কর্তৃপক্ষের ওই ধরনের সিদ্ধান্ত শরণার্থীদের জীবনকে ঝুঁকির মুখে ফেলবে বলে মানবাধিকারকর্মীদের সতর্কবার্তার পরও এলকাটিতে ত্রাণ বন্ধ করে দেওয়া হয়।
একদিকে পানির অভাব আর অন্যদিকে ৩৫ ডিগ্রি তাপমাত্রায় অসহ্য হয়ে অনেক সিরীয় দেশে ফিরে যাওয়ার কথা ভাবছেন।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের শরণার্থীবিষয়ক গবেষক গেরি সিম্পসন আল জাজিরাকে বলেন, ‘লোকজন সিরিয়ায় ফেরত যেতে চাইছেন বলে এমন ভয়াবহ তথ্যও আমরা পাচ্ছি। এ দুর্গম মরুভূমি এলাকায় তাদেরকে যে ধরনের অবস্থায় কাটাতে হচ্ছে তাতে শরণার্থীরা এমন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হচ্ছেন। এ মুহূর্তে শরণার্থীদের যা প্রয়োজন তাহল খাবার ও পানি। জর্ডান এসব মানুষের জন্য সব ধরনের খাবার ও চিকিৎসা সহায়তা বন্ধ করে দিয়েছে। এসব শরণার্থীর অর্ধেকেরও বেশি শিশু। ওই এলাকায় জর্ডান সীমিত পরিমাণে পানি সরবরাহ অনুমোদন করলেও তা যথেষ্ট নয়।’

চিকিৎসা সহায়তা প্রদানকারী সংগঠন ডক্টরস উইদাউট বর্ডার এ ধরনের পরিস্থিতিকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বড় ধরনের ব্যর্থতা হিসেবে উল্লেখ করেছে। সংগঠনটির হিসেব অনুযায়ী, শরণার্থী অধ্যুষিত এলাকাটিতে ১৩শ শিশু অপুষ্টিতে ভুগছে, ২০৪ জন মাঝারি ধারা অপুষ্টিতে ভুগছেন এবং ১০ জন মারাত্মক ধরনের অপুষ্টিতে ভুগছেন।

জর্ডানে প্রচুর সংখ্যক শরণার্থীর বসবাস। জাতিসংঘের হিসেব অনুযায়ী দেশটিতে সাড়ে ছয় লাখ নিবন্ধনকৃত সিরীয় শরণার্থী রয়েছেন।  বিভিন্ন শরণার্থী শিবিরে তিন লাখ ফিলিস্তিনি শরণার্থীও রয়েছেন। তাছাড়া ২০০৩ সালে ইরাকে মার্কিন অভিযানের পর অনেক ইরাকিও আশ্রয়ের জন্য জর্ডানকে বেছে নিয়েছেন।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের শরণার্থীবিষয়ক গবেষক গেরি সিম্পসন বলেন কেবল জর্ডানেই যে শরণার্থীরা খারাপ অবস্থায় রয়েছেন তা নয়, লেবানন আর তুরস্কের অবস্থাও একই। এসব দেশ যেন আরও বেশি করে সিরীয় শরণার্থীদের আশ্যয় দেয় এবং তাদের বাসস্থানের ব্যবস্থা করে তা নিশ্চিত করতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। সূত্র: আল জাজিরা

/এফইউ/