ইথিওপিয়ায় বৈষম্যবিরোধী অহিংস বিক্ষোভ, দুই দিনে নিহত ৬

অর্থনৈতিক ও জাতিগত বৈষম্য বৃদ্ধির অভিযোগে সরকারের বিরুদ্ধে গত দুই দিনের প্রতিবাদ সমাবেশে ইথিওপিয়ার গন্দার অঞ্চলে অন্তত ছয়জন নিহত হয়েছেন। রাজধানী আদ্দিস আবাবায় সমাবেশ থেকে বেশ কয়েকজন প্রতিবাদকারীকে আটক করা হয়েছে।

সরকারি নীতির প্রতিবাদে আন্দোলন করছে ওরোমো ও আমহারা জনগোষ্ঠী

সূত্রের বরাতে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা জানিয়েছে, আদ্দিস আবাবা থেকে ৭০০ কিলোমিটার দক্ষিণের আমহারা জনগোষ্ঠী অধ্যুষিত গন্দার অঞ্চলে শনিবার (৬ আগস্ট) চারজন নিহত হয়েছেন। এর আগেরদিন আরও দুইজন নিহত হয়েছিলেন। তবে ইথিওপীয় কর্তৃপক্ষ ওই নিহতের সংখ্যা নিশ্চিত করেনি।

শনিবার ওরোমো জনগোষ্ঠীর পাঁচ শতাধিক প্রতিবাদকারী আদ্দিস আবাবায় অর্থনৈতিক ও জাতিগত বৈষম্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে সমাবেশ করেন। পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয় এবং বেশ কয়েকজন প্রতিবাদকারীকে আটক করা হয়। প্রতিবাদকারীদের স্লোগান ছিল, ‘আমরা মুক্তি চাই’, ‘আমাদের রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি দাও’। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ওই প্রতিবাদ সমাবেশে নিরস্ত্র মানুষদের ওপর পুলিশ লাঠি চার্জ করে এবং তাদের আটক করে।

এর আগে শুক্রবার দেশটির প্রধানমন্ত্রী হাইলে মারিয়াম দেসালেন ‘জাতীয় ঐক্যের জন্য হুমকিস্বরূপ’ বিক্ষোভ-সমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। আর তা যে কোনও প্রকারে বন্ধ করার জন্য পুলিশকে নির্দেশ দেন।

ওই সমাবেশের আয়োজন করেছিল, ইথিওপিয়ার সবচেয়ে বড় ওরোমো জনগোষ্ঠী। তারা গত কয়েক মাস ধরেই সরকারের নীতিকে বৈষম্যমূলক বলে অভিযোগ করে আসছে। আর এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সমাবেশ আয়োজন করছে। সম্প্রতি তাদের প্রতিবাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে আমহারা জনগোষ্ঠী। এই দুটি জনগোষ্ঠীই হলো ইথিওপিয়ার মোট জনসংখ্যার ৮০ শতাংশ।

তাদের অভিযোগ, ক্ষমতাসীন টাইগ্রায়ান জনগোষ্ঠীর সরকার ওই জনগোষ্ঠী থেকেই সরকারি ও নিরাপত্তাবাহিনীর সকল গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ দিয়েছে আর সরকারি নীতির ফলে সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠীর মানুষেরা অর্থনৈতিক ও জাতিগত বৈষম্যের শিকার হয়েছেন।

ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি-কে ইথিওপীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গত কয়েক সপ্তাহে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন প্রতিবাদকারী নিহত হয়েছেন। এএফপি-র খবরে আরও বলা হয়, ওরোমো ও আমহারা অধ্যুষিত বিভিন্ন অঞ্চলেও পুলিশের সঙ্গে প্রতিবাদকারীদের সংঘর্ষ হয়েছে।

সূত্র: আল-জাজিরা।

/এসএ/বিএ/