ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া বলছে, ‘ভারতীয় আগ্রাসনের’ বিরুদ্ধে এবার পথে নেমেছেন মুজাফফর আহমেদ ওয়ানি। এক প্রতিবাদী সমাবেশে নিজের মেয়েকে কাশ্মিরের মুক্তি আন্দোলনের জন্য উৎসর্গ করতে চেয়েছেন।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের এক খবরে জানা যায়, ২০১০ সালে সেনাবাহিনীর নির্যাতনের শিকার হয়েছিল মুজাফফর ওয়ানির বড় সন্তান খালিদ। বদলা নিতেই মাত্র ১৫ বছর বয়সে সশস্ত্র দলে নাম লেখায় বুরহান।অভিযোগ রয়েছে ‘এনকাউন্টার’-এর কথা বলে খালিদকে ২০১৫ সালের এপ্রিলে আসলে হত্যাই করে ভারতীয় সেনাবাহিনী। তবে সেনাবাহিনীর দাবি ছিল, খালিদ নিজেও বুরহানের মতো ‘সন্ত্রাসী’। আর এ বছর জুলাইয়ে বুরহানকে ‘হত্যা’র পর মুজাফফর ওয়ানির সন্তানদের মধ্যে শুধু তার মেয়েটিই বেঁচে আছেন।
শুক্রবার (৫ আগস্ট) পাম্পোরে এক প্রতিবাদ মিছিলের ডাক দেন বুরহানের বাবা। সেদিনই উপত্যকা দেখেছে হাজার হাজার লোক মুজাফফর আহমেদের ডাকে সাড়া দিয়ে সেই মিছিলে অংশ নিয়েছেন। দক্ষিণ কাশ্মির থেকে কারফিউ উপেক্ষা করে বুরহানের বাবার ডাকা সভায় যোগ দিতে হাজার হাজার লোক পাম্পোরের খ্রিউতে উপস্থিত হন। সেখানে আসা প্রতিবাদীদের উদ্দেশে বুরহানের বাবা জানান, কাশ্মিরের যে অংশ ভারত দখল করে রেখেছে সেখান থেকে ভারতীয় সেনাবাহিনীদের সরাতে তিনি তার দুই ছেলেকে উৎসর্গ করেছেন। এবার প্রয়োজন হলে, তিনি তার একমাত্র মেয়েটিকেও উৎসর্গ করতে প্রস্তুত।
রবিবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবর থেকে জানা যায়, মুজাফফর আহমেদের জনপ্রিয়তা সেখানকার প্রতিষ্ঠিত স্বাধীনতার দাবিতে আন্দোলনরত সংগঠনের নেতাদের থেকে কোনও অংশে কম নয়। জনগণের নিরাপত্তা বেষ্টনির মধ্যেই তিনি ওই সমাবেশে উপস্থিত হন বলে জানা গেছে।
এ বছর এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে মুজাফফর আহমেদ বলেছিলেন, ‘আমি বুরহানের মরদেহের জন্য অপেক্ষা করছি। একজন জঙ্গিবাদী কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে গেলে ৭ বছরের বেশি বাঁচে না। বুরহানের ৬ বছর হয়ে গেছে। এবার তার যাবার সময় হয়েছে।’ সময় একদিন শেষ হয়। শেষ হয় বাবার অপেক্ষা। বুরহান বিগত ইতিহাস হয়ে যায়। বুরহানের মৃত্যুর প্রতিক্রিয়ায় বাবা মুজাফফর ওয়ানি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন, ‘আল্লাহ আমাদের বলেছেন, নিপীড়নের বিরুদ্ধে লড়াই করে কেউ মরে না। শহীদ হয়।’ শত শত শিশুর চোখে তার ছেলে শহীদের মর্যাদায় উন্নীত হচ্ছে, গর্বের সঙ্গে বলেন তিনি। সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।
/এসএ/বিএ/