লেবার পার্টি হেরে গেলেও দলের নেতৃত্বে থাকার ইঙ্গিত করবিনের

জেরেমি করবিনযুক্তরাজ্যের পরবর্তী সাধারণ নির্বাচনে লেবার পার্টি হেরে গেলে দলের নেতৃত্ব থেকে সরে দাঁড়ানোর ‘অপরিহার্য’ সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়েছেন ব্রিটিশ লেবার নেতা জেরেমি করবিন। নির্বাচনে লেবার পার্টি হেরে গেলেও দলকে নেতৃত্ব দিয়ে যাওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।
সম্প্রতি লেবার পার্টির ছায়া মন্ত্রিসভার চ্যান্সেলর জন ম্যাকডোনেল বলেছিলেন, নির্বাচনে হেরে গেলে তিনি এবং তার দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক মিত্র জেরেমি করবিন তাৎক্ষণিক পদত্যাগ করবেন। অতীতের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি ইঙ্গিত দিয়েছিলেন ‘এমনটা অপরিহার্য’। ম্যাকডোনেল বলেছিলেন, ‘সাধারণত যেসকল লেবার নেতারা নির্বাচনে হেরে যান তারা পদত্যাগ করে থাকেন’।
তবে হাফিংটন পোস্ট-এর ব্রিটিশ সংস্করণকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সেই সম্ভাবনা নাকচ করে দেন করবিন। তিনি বলেন, ‘দেখুন, কোনও কিছুই অপরিহার্য নয়। চার বছর পর যে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে তার ফলাফলের আভাস এখনই দেওয়া ঠিক নয়।’
হাফিংটন পোস্টের পক্ষ থেকে তখন জেরেমি করবিনের কাছে জানতে চাওয়া হয়, বর্তমান জরিপের ফলাফলে যদি কোনও পরিবর্তন না হয় এবং লেবার পার্টি যদি কাউন্সিলের আসনগুলোতে হেরে যায় তবে তিনি পদত্যাগ করবেন কিনা। জবাবে করবিন বলেন, ‘দলের সদস্যরাই সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করেন। তারাই সিদ্ধান্ত নেবেন।’
নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পর লেবার পার্টির নেতৃত্ব থেকে সরে দাঁড়ানোর কোনও বাধ্যবাধকতা নেই। তবে সাধারণত প্রধান প্রধান দলে হেরে যাওয়ার পর তাদের নেতাদের পদত্যাগ করতেই দেখা যায়। অবশ্য নির্বাচনি লড়াইকে সামনে রেখে দলের নেতাদের পদত্যাগ করার প্রতিশ্রুতি দিতে দেখা যায় না বললেই চলে। হেরে যেতে পারেন বলে স্বীকার করলেও পদত্যাগের সম্ভাবনার কথা তারা বলেন না।

করবিন
নিজের নেতৃত্ব নিয়ে সমালোচনার জবাব দিতে গিয়ে হাফিংটন পোস্টকে করবিন বলেন, ‘সবকিছু হও, সবাইকে জান, সবকিছু দেখ, সবকিছু করো এবং সবাইকে নিয়ন্ত্রণে রাখ-ধরনের মানসিকতায় বিশ্বাসী নেতারা গণতন্ত্রের জন্য সুখকর নন। গণতন্ত্র হলো কমিউনিটি ও জনগণের বিষয়।’

উল্লেখ্য,দলের তৃণমূল কর্মীদের নিরঙ্কুশ সমর্থন নিয়ে লেবারদের নেতা নির্বাচিত হয়েছিলেন করবিন। ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে যুক্তরাজ্যের আলাদা না হওয়ার পক্ষে অর্থাৎ ‘রিমেইন’ শিবিরের হয়ে প্রচারণা চালিয়েছিলেন লেবার নেতা জেরেমি করবিন। তবে ব্রিটিশ জনগণের রায় এর বিপক্ষে যাওয়ার পর দলীয় নেতৃত্বের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েন তিনি। করবিন মনে করেন, ব্রেক্সিট প্রশ্নে জনগণের এই অবস্থান লেবার রাজনীতির জন্য ইতিবাচক ভূমিকা নিয়ে এসেছে। আবাসন, কর্মসংস্থান, সুরক্ষা, ইউরোপীয় দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্কের প্রশ্নসহ বিভিন্ন ইস্যুতে বিকল্প হাজির করার সুযোগ তৈরি হয়েছে। জুনে ছায়া পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি বেনকে বরখাস্ত করার বিষয়টি মূলত করবিনের বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোট আহ্বান করার ক্ষেত্রে লেবার এমপিদের জন্য অনুঘটক হিসেবে কাজ করেছিল। করবিনের বিপক্ষে দলীয় নেতৃত্বের চ্যালেঞ্জে নামেন ঈগল এবং ওয়েন স্মিথ। পরে অবশ্য স্মিথকে সমর্থন জানিয়ে ঈগল এ লড়াই থেকে সরে দাঁড়ান। করবিন আর স্মিথের মধ্যেই এখন নেতৃত্বের লড়াই হবে।  সূত্র: ইন্ডিপেনডেন্ট, হাফিংটন পোস্ট ইউকে

/এফইউ/