পাঁচজন খুন হলেও বেঁচে যায় শিশুটি

nonameযুক্তরাষ্ট্রের আলাবামা অঙ্গরাজ্যের এক গ্রামের বাড়িতে পাঁচ ব্যক্তির মরদেহ পাওয়া গেছে। তবে হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়া থেকে বেঁচে যায় ওই পরিবারের তিন মাস বয়সী এক শিশু।

ডেরিক ডিয়ারম্যান নামের এক ব্যক্তি ওই হামলা চালান। তিনি মিসিসিপির বাসিন্দা। বয়স ২৭ বছর। মার্কিন পুলিশের দাবি, সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যাওয়া প্রেমিকা এবং তার ৩ মাসের সন্তানকে অপহরণ করার আগে ওই ৫ জনকে হত্যা করেন তিনি। হারানো সেই প্রেমিকাকে ফিরে পেতেই ওই হত্যাকাণ্ড চালান ডেরিক।

উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের আলাবামা অঙ্গরাজ্যের গ্রাম্য এলাকা চিতরোনেলের এক বাড়িতে শনিবার ৫টি মরদেহ পায় পুলিশ। পুলিশ জানায়, তারা সবাই হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। স্থানীয় মোবাইল কাউন্টি শেরিফের কার্যালয় থেকে টুইটারে জানানো হয়, শনিবার এলাকার এক বাড়ি থেকে মৃতদেহগুলো উদ্ধার করা হয়। শনিবার উদ্ধারকৃত মরদেহগুলোর পরিচয় শনাক্ত হয় রবিবার। মোবাইল কাউন্টি শেরিফ কার্যালয় জানায়, হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন শ্যামনন মেলিসা র্যাসন্ডাল (৩৫), জোসেফ অ্যাডাম টার্নার (২৬), রবার্ট লি ব্রাউন (২৬), জাস্টিন কালেব রিড (২৩) এবং চেলসি ম্যারি রিড (২২)।

মোবাইল কাউন্টি শেরিফ কার্যালয়-এর ভাষ্য, যে বাড়িতে হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে, সেই বাড়িতে ডেরিক ডিয়ারম্যানের সাবেক প্রেমিকা আশ্রয় নিয়েছিলেন। ডিয়ারম্যানের অত্যাচার থেকে বাঁচতেই ওই বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন তিনি। কাউন্টি শেরিফ কার্যালয় বলছে, ৫ জনকে হত্যা করলেও ৬ জনের হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত হতে যাচ্ছেন ডেরিক ডিয়ারম্যান। কেননা হত্যাকাণ্ডের শিকার চেলসি ম্যারি রিড গর্ভবতী ছিলেন। সেই গর্ভাবস্থায় থাকা সন্তানকেও হত্যাকাণ্ডের শিকার বলে বিবেচনা করা হবে।

বরিবার প্রথমে কাউন্টি শেরিফ অফিস থেকে জানানো হয়, শনিবার দুপুরে চিতরোনেলের পুলিশ স্টেশনে এক নারী এসে দাবি করেন, তিনি আগের রাতে অপহরণের শিকার হওয়ার পর পালিয়ে এসেছেন। সেখানে কয়েকজনকে হত্যা করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। নিহতদের সবাই প্রাপ্তবয়স্ক বলে জানানো হয়েছে। পরে পুলিশের তরফ থেকে বিস্তারিত জানানো হয়। পুলিশ জানায়, ডেরিকের প্রেমিকার নাম লেনিটা লেস্টার। তার বয়স ২৪ বছর। যে বাড়িতে হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়, সেটি তার বোনের বাড়ি। শুক্রবার ডেরিকের হাত থেকে বাঁচতে সেখানে আশ্রয় নিয়েছিলেন তিনি। তবে এখনও পুলিশ জানাতে পারেনি খুন হওয়াদের মধ্যে কে লেনিটার বোন।

পুলিশ বলছে, ৯১১ নম্বের ফোন করে ওই বাড়ির বাসিন্দারা শনিবার মধ্যরাতে টেলিফোনে জানান, ডেরিক জোর করে ওই বাড়িতে ঢুকেছেন। তবে পুলিশ সেখানে পৌঁছানোর আগেই ডেরিক পালিয়ে যেতে সম্ভব হয়। পরে, রাতে পুলিশ জানায়, ডেরিক আবারও ওই বাড়িতে ফিরে আসেন। ঘুমের মধ্যে আক্রমণ চালান বন্দুকসহ নানা ধরনের অস্ত্র দিয়ে। খুন করেন ওই ৫ জনকে।

৫ জনকে খুনের পর ডেরিক লেস্টার আর তার ৩ মাসের সন্তানকে অপহরণ করেন। এরপর তাদের মিসিসিপিতে নিজের বাবার বাড়িতে নিয়ে যান ডেরিক। একপর্যায়ে অপহৃত সাবেক প্রেমিকা আর তার সন্তানকে ছেড়ে দেন ডেরিক। ওদিকে তার বাবা যান, ছেলেকে পুলিশের হাতে তুলে দিতে।

ছাড়া পেয়ে লেস্টার নিজের এলাকায় ফিরে আসেন। পুলিশকে বিস্তারিত জানান তিনি।

এর আগে কর্তৃপক্ষের বরাতে সিএনএন জানিয়েছিল, লাশ উদ্ধারের কয়েক ঘন্টার পর নিজ রাজ্যস মিসিসিপিতে ডেরিক রায়ান ডিয়ারম্যানন নামে ২৭ বছর বয়সী এক ব্যরক্তি আত্মসমর্পণ করেছেন। তার সঙ্গে নিহতদের সম্পর্ক বের করতে তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। পরে শেরিফ অফিসের মুখপাত্র পল ব্রুচ জানান, ডেরিক তদন্তকাজে সহায়তা করছেন। তাকে মিসিসিপিতে পুলিশি হেফাজতে রাখা হয়েছে। পরে তাকে আলাবামায় নেওয়া হবে।

/এমপি/