কলম্বিয়ায় সরকার ও ফার্কের মধ্যে ঐতিহাসিক অস্ত্রবিরতি শুরু

৫২ বছর ধরে চলা সংঘাতে লাখ লাখ মানুষ ঘর হারিয়েছেকলম্বিয়ায় সরকার ও ফার্ক বিদ্রোহীদের মধ্যকার অস্ত্রবিরতি কার্যকর শুরু হয়েছে। চার বছরের শান্তি আলোচনা শেষে কলম্বিয়ার সরকার ও ফার্ক বিদ্রোহীদের মধ্যে হওয়া এ অস্ত্রবিরতি স্থানীয় সময় সোমবার মধ্যরাত থেকে কার্যকর করা শুরু হয়। তবে ৫২ বছরের সংঘাতের অবসানের জন্য দুই পক্ষের মধ্যে চূড়ান্ত শান্তি চুক্তি হচ্ছে কি হচ্ছে না তার জন্য ২ অক্টোবরের গণভোটের রায় পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির সোমবারের (২৯ আগস্ট) প্রতিবেদনে বলা হয়, অস্ত্রবিরতি কার্যকরের জন্য টিমোচেঙ্কো নামে পরিচিত ফার্ক নেতা রদ্রিগো লোন্দোনো গুলি ছোড়া বন্ধ করতে নিজের সংগঠনকে নির্দেশ দিয়েছেন। এর আগে কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট হুয়ান ম্যানুয়েল সান্তোস ফার্কের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান স্থগিত করার আদেশ দিয়ে একটি ডিক্রিতে স্বাক্ষর করেন। এ অস্ত্রবিরতিকে ‘ঐতিহাসিক পদক্ষেপ’ উল্লেখ করে রবিবার এক টুইটে তিনি বলেন, ‘দেশের বেদনাদায়ক অধ্যায়গুলোর একটির সমাপ্তি ঘটতে যাচ্ছে।’
উল্লেখ্য, বুধবার (২৪ আগস্ট) কিউবার রাজধানী হাভানায় ৫২ বছর ধরে চলে আসা বিদ্রোহের অবসান ঘটাতে ফার্ক বিদ্রোহী এবং কলম্বিয়া সরকারের মধ্যে শান্তি সমঝোতা  হয়। সেই সঙ্গে অস্ত্রবিরতিও ঘোষণা করা হয়। এই সমঝোতা অনুযায়ী,  ফার্ক সশস্ত্র বিদ্রোহের পথ ত্যাগ করে কলম্বিয়ার নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করবে। সেই সঙ্গে বিদ্রোহীদের পুনর্বাসনের জন্য উদ্যোগ নেবে সরকার। চলতি বছর সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি ফার্ক নেতারা ওই সমঝোতা চুক্তি অনুমোদন নিয়ে বৈঠকে বসবেন। ১৩ থেকে ১৯ সেপ্টেম্বর ফার্ক-এর নিয়ন্ত্রণে থাকা কলম্বিয়ার দক্ষিণাঞ্চলে ওই ‘কনফারেন্স’ অনুষ্ঠিত হবে। আগামী ২ অক্টোবর শান্তি চুক্তি গ্রহণ করা না করার বিষয়ে গণভোটের ডাক দিয়েছে কলম্বিয়া সরকার।

ফার্ক-এর সঙ্গে গত চার বছর ধরে শান্তি আলোচনা চলছিল। আর এতে মধ্যস্থতা করেছেন নরওয়ের নাগরিক ড্যাগ নায়ল্যান্ডার এবং কিউবা সরকার।

১৯৬৪ সাল থেকে ফার্ক বিদ্রোহীরা কলম্বিয়া সরকারের বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রাম শুরু করেন। এতে এখন পর্যন্ত প্রায় দুই লাখ ৬০ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন। লাখ লাখ মানুষ হয়েছেন ঘরহারা। এটি লাতিন অঞ্চলে সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী বিদ্রোহের ইতিহাস। সূত্র: বিবিসি

/এফইউ/