সাইবার ডাকাতির শিকার বিশ্বের আরও কয়েকটি ব্যাংক: সুইফট

সুইফটের লোগোর ইলাস্ট্রেশনবাংলাদেশ ব্যাংকে সাইবার ডাকাতির পর বিশ্বের অন্য ব্যাংকগুলোকে নিরাপত্তা জোরদারের জন্য বার বার সতর্ক করার পরও সাইবার হ্যাকিং ঠেকানো যাচ্ছে না বলে জানিয়েছে আন্ত:ব্যাংক লেনদেনের বৈশ্বিক সংগঠন সুইফট। মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) নতুন করে আরও কয়েকটি সদস্য ব্যাংকে সাইবার হামলা হওয়ার খবর প্রকাশ করেছে এ বৈশ্বিক সংগঠনটি। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স খবরটি নিশ্চিত করেছে।
ব্রাসেলসভিত্তিক প্রতিষ্ঠান সুইফট মঙ্গলবার তাদের ক্লায়েন্টদের কাছে দেওয়া চিঠিতে ইঙ্গিত দিয়েছে, নতুন করে যারা সাইবার হামলার শিকার হয়েছে তাদের কারও কারও অর্থ খোয়া গেছে। তবে হামলার শিকার ব্যাংকগুলোর কী পরিমাণ অর্থ খোয়া গেছে কিংবা কতবার হ্যাক করার চেষ্টা হয়েছে এবং কতটিতে হ্যাকাররা সফল হয়েছে সে ব্যাপারে বিস্তারিত জানায়নি সুইফট।
তবে সুইফট বলছে, প্রতিটি হামলার ক্ষেত্রেই যে জিনিসটি স্পষ্টভাবে উঠে এসেছে, তা হলো স্থানীয় সাইবার নিরাপত্তাব্যবস্থার দুর্বলতা।
সুইফটের মতে বাংলাদেশ ব্যাংকে সাইবার ডাকাতিতে সফল হওয়ার পর এ ধরনের সাইবার হামলার প্রচেষ্টা বেড়ে গেছে। ব্যাংকগুলোর নিরাপত্তা সুরক্ষায় ঘাটতি থাকার কারণে হ্যাকাররা সফল হচ্ছে বলেও উল্লেখ করেছে সু্‌ইফট।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ ব্যাংকের সিস্টেম হ্যাকড করে চলতি বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকে থাকা বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট থেকে হ্যাকাররা ৯৫১ মিলিয়ন ডলার চুরির চেষ্টা করে। পরে বেশ কিছু পেমেন্ট বন্ধ করে দিয়ে বেশিরভাগ অর্থচুরি ঠেকানো গেলেও ৮১ মিলিয়ন ডলার ফিলিপাইনে স্থানান্তরে সক্ষম হন হ্যাকাররা। ওই অর্থ ফিলিপাইনের আরসিবিসি ব্যাংকের জুপিটার ব্রাঞ্চের চারটি অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করা হয়। পরে তা চলে যায় ক্যাসিনোতে। ওই ঘটনার পর থেকে সুইফটের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। বাংলাদেশ ব্যাংকে সাইবার হামলার পর যুক্তরাষ্ট্রের বড় বড় ব্যাংকগুলোও তাদের সুইফট ম্যাসেজিং নেটওয়ার্কের নিরাপত্তা জোরদার করে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সিস্টেম হ্যাক হওয়ার পর নতুন সাইবার হামলার ঝুঁকির কথা জানিয়ে ক্লায়েন্টদেরকে চিঠি পাঠিয়েছিল সুইফট। গত ৩ মে গ্রাহক ব্যাংকগুলোকে চিঠি পাঠায় সুইফট। ওই চিঠিতে সুইফট সিস্টেম ব্যবহারকারীদের উদ্দেশে বলা হয়,‘নিরাপদ সাইবার ব্যবস্থার জন্য ফায়ারওয়াল বাছাই করা, স্থাপন করা কিংবা রক্ষণাবেক্ষণ কিংবা অভ্যন্তরীণ নেটওয়ার্কের বিচ্ছিন্নকরণের কাজ আপনাদের। এর জন্য সুইফটকে দায়ী করা যাবে না।’

ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ সাইবার নিরাপত্তা বাড়াতে পূর্ব-সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়ারও আহ্বান জানানো হয় ওই চিঠিতে। বলা হয়, ‘একজন সুইফট ব্যবহারকারী হিসেবে সুইফট নেটওয়ার্ক ও নিজেদের পরিবেশের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নিরাপদ সিস্টেম গড়ে তোলার দায়িত্ব আপনাদেরই নিতে হবে। আমরা পূর্ব-সতর্কতা অবলম্বনের জন্য আপনাদের সবাইকে আহ্বান জানাচ্ছি।’

তবে সুইফট এখন বলছে, ওই সতর্কতার পরও যথাযথ ব্যবস্থা নিতে পারেনি গ্রাহক ব্যাংকগুলো।

/এফইউ/