পুতুল আর কাপড়ের পুঁটলিটি নৌকায় তোলেন লোপেজ। তিনি ও তার ডুবুরি দল ডাঙায় পৌঁছানোর পর পরই কাপড়ের পুঁটলিটি খোলার পর অবাক হন তারা। এর ভেতর আবর্জনা নেই, বরং আছে একটি বৌল, কাঠি, পাখির পালক এবং অনেকগুলো হাড়। আর সে হাড়গুলো গাঢ় বাদামি রং ধারণ করেছে।
লোপেজ বলেন, ‘প্রথম হাড়টি দেখেই বুঝতে পারলাম এটি মানুষের পায়ের ফিমার। এরপর দেখলাম একটি পাঁজর। আমি ভয় পাইনি। বরং আমার মধ্যে আরও কৌতুহল ভর করলো।’
গত মাসের শেষে পানির তলদেশে হাড়ের সন্ধান পাওয়ার পর থেকে কেবল লোপেজই নয়, স্প্যানিশ পুলিশের মধ্যেও কৌতুহল তৈরি হয়। কেননা, লোপেজ যেদিন হাড়ের পুঁটলিটি উদ্ধার করেছে তার একদিন পরই গার্ডিয়া সিভিলের একটি বিশেষ ডুবুরি দল ৩০০ মিটার দূর থেকে আরেক গুচ্ছ হাড় উদ্ধার করে। সেই হাড়ের সঙ্গে উদ্ধার হয়, একটি ছুরি এবং একটি পুতুল। ওই হাড়গুলোর কিছু কিছু মানুষের হাড় বলে মনে করা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে আলিকান্তের কালপে শহরের পানিসীমা থেকে এ ধরনের তৃতীয় আরেকটি প্যাকেজ উদ্ধার হয়। তার মধ্যেও হাড় ছিল। কী কারণে এসব হাড়গুলো সেখানে এলো, কারাই বা হাড়গুলো পানিতে ফেললো এগুলো নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
গত ১ সেপ্টেম্বর ভ্যালেন্সিয়ায় নিয়োজিত স্প্যানিশ সরকারের প্রতিনিধি জুয়ান কার্লোস মোরাগুয়েস বলেন, ‘ওই হাড়গোড়ের সঙ্গে বিভিন্ন ছবি ও স্পেনের অভ্যন্তরীণ রাজস্বের কাগজপত্র পাওয়া গেছে।’
মোরাগুয়েস জানান, কিছু কিছু প্রথা অনুযায়ী জিনিসপত্র সাগরের তলদেশে ফেলার প্রচলন রয়েছে। তিনি বলেন, ‘কিছু কিছু প্রচলিত প্রথা আছে যা পালনের পর ওই কাজে ব্যবহৃত জিনিসপত্রগুলো কাপড়ের পুঁটলিতে ভরে সাগরে ছুড়ে দেওয়া হয়।’
এ পর্যন্ত উদ্ধার হওয়া হাড়গুলো তিনটি কঙ্কালের বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ নিয়ে আরও বিস্তারিতভাবে তদন্ত চলছে। এ হাড়গুলো শনাক্ত করার জন্য ডিএনএ পাওয়া যায় কিনা তা নিয়েও বিশ্লেষণ চলছে।
এই ঘটনার সঙ্গে আফ্রিকান-ক্যারিবিয়ানভিত্তিক সানতেরিয়া ধর্মের অনুসারীদের সংযোগ রয়েছে কিনা আপাতত তা খতিয়ে দেখছে গার্ডিয়া সিভিল। অবশ্য এ ব্যাপারে স্পেনের সানতেরিয়া অনুসারীরা ক্ষোভ জানিয়েছেন। দাবি করেছেন, তাদের ধর্মে ওই ধরনের কোনও প্রথা নেই। সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান
/এফইউ/বিএ/