রানওয়ের দখল নিলো বর্ণবাদবিরোধীরা, লন্ডনের সিটি বিমানবন্দরে অচলাবস্থা

কৃষ্ণাঙ্গদের জীবনে বিক্ষোভকারীরা একে অপরের সঙ্গে গা ঘেঁষে রানওয়েতে অবস্থান নেনজলবায়ু পরিবর্তনের ভয়াবহ অভিঘাতকে সামনে আনতে লন্ডন সিটি এয়ারপোর্টে রানওয়ের দখল নিয়েছে   বর্ণবাদবিরোধী সংগঠন দ্য ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার ইউকে-এর বিক্ষোভকারীরা। তাদের অবস্থানের কারণে লন্ডন সিটি এয়ারপোর্টে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে।  বন্ধ হয়ে গেছে ফ্লাইট চলাচল। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম খবরটি নিশ্চিত করেছে।
মেট্রোপলিটন পুলিশের বরাত দিয়ে বিবিসি জানায়, স্থানীয় সময় মঙ্গলবার ভোর ৫টা ৪০ মিনিটের দিকে ৯ বিক্ষোভকারী রানওয়েতে একে অপরের সঙ্গে লেগে শুয়ে পড়ে। তারপর পুলিশকে খবর দেয় বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। এরইমধ্যে সাত বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করা হলেও দুই বিক্ষোভকারী এখনও রানওয়েতে অবস্থান করছেন। তাদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে কর্তৃপক্ষ বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, অবতরণের অপেক্ষায় থাকা বিমানগুলোকে অন্য বিমানবন্দরের দিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার ইউকে’র পক্ষ থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘স্থানীয় ও বিশ্বের কৃষ্ণাঙ্গদের ওপর যুক্তরাজ্যের পরিবেশগত প্রভাবকে সামনে নিয়ে আসতে তাদের বিক্ষোভকারীরা এমন পদক্ষেপ নিয়েছেন। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘যখন লন্ডন সিটি এয়ারপোর্টে অভিজাতরা বিমানে চলাচল করতে পারছেন, তখন কেবল ২০১৬ সালেই ৩,১৭৬ জন অভিবাসী ভূমধ্যসাগরে নিখোঁজ হয়েছেন কিংবা মারা গেছেন। এ বর্ণবাদী জলবায়ু সংকটের দিনে কৃষ্ণাঙ্গদেরকেই প্রথমে মরতে হয়, তারা সর্বপ্রথম উড়তে পারাদের তালিকায় নেই।’

৯ বিক্ষোভকারীর মধ্যে ৭ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ
বিবিসি লন্ডনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটারের সদস্য জোশুয়া ভিরাসামি বলেন, ‘এ বিমানবন্দরটি কৃষ্ণাঙ্গ কমিউনিটি অধ্যুষিত এলাকায় অবস্থিত। জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী এমন কারখানাগুলোর সবচেয়ে কাছে ব্রিটেনের ২৮ শতাংশ কৃষ্ণাঙ্গের বসবাস।’

তিনি দাবি করেন, বিমানবন্দরে বিক্ষোভকারীদের অবস্থানের কারণে যে ঝামেলা হয়েছে তা কৃষ্ণাঙ্গদের প্রতিদিনকার পোহানো ঝামেলার তুলনায় সামান্য। জোশুয়া বলেন, ‘কৃষ্ণাঙ্গদেরকে প্রতিদিন যে পরিমাণ ভোগান্তির মধ্য দিয়ে যেতে হয়, তা চিন্তা করলে ফ্লাইট চলাচলে সাময়িক এ বিশৃঙ্খলাকে সামান্যই ঝামেলা বলে মনে হবে।’

যতক্ষণ সম্ভব বিক্ষোভকারীরা রানওয়েতে থাকবে বলেও ঘোষণা দেন তিনি।

স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বিক্ষোভকারীরা কিভাবে বিমান চলাচলের এলাকায় প্রবেশ করতে সক্ষম হলো তা জানতে তদন্ত চলছে। কেউ কেউ বলছে, বিক্ষোভকারীরা টেমস নদীতে সাঁতার কেটে কিংবা নৌকায় চড়ে ওই জায়গায় যেতে সক্ষম হয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে।

এদিকে সাময়িক অসুবিধা তৈরি হওয়ায় বিমান যাত্রীদের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন লন্ডন সিটি এয়ারপোর্টের এক মুখপাত্র। লন্ডন ডকল্যান্ডের ক্যানারি হোয়ার্ফের নিকটে হওয়ার কারণে ব্যাংকার ও ব্যবসায়ীদের কাছে বিমানবন্দরটি জনপ্রিয়। গত বছর ৪৩ লাখ যাত্রী বিমানবন্দরটি ব্যবহার করেছিল। সূত্র: বিবিসি

/এফইউ/বিএ/