দলীয় সদস্যদের রায়ে আবারও লেবার নেতা করবিন

দুই বছর সময়ের মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো যুক্তরাজ্যের লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিন বুঝিয়ে দিলেন, তিনিই দলীয় সদস্যদের আস্থার কেন্দ্রবিন্দু। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ইন্ডিপেনডেন্ট-এর এক খবর থেকে জানা গেছে, লেবার পার্টির নেতা নির্বাচনের দ্বিতীয় ভোটেও বিপুল ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন তিনি।

গত দুই বছরের মধ্যে এটা দ্বিতীয়বার লেবার পার্টির নেতা নির্ধারণের জন্য ভোটাভুটি হলো। বিগত সাধারণ নির্বাচনে লেবার পার্টি পরাজিত হবার পর পূর্বতন নেতা এড মিলিব্যান্ড পদত্যাগ করেছিলেন। এরপর দলীয় সদস্যরা করবিনের ওপর তাদের আস্থার ভার অর্পণ করেন।

ইন্ডিপেনডেন্ট বলছে, দলের সদস্যদের ভোটে নেতা নির্বাচনের ফলাফল অনুযায়ী জেরেমি করবিন মোট ৩ লাখ ১৩ হাজারের কিছু বেশি ভোট পান - যা মোট প্রদত্ত ভোটের ৬১ দশমিক ৮ শতাংশ। তার প্রতিদ্বন্দ্বী ওয়েন স্মিথ ১ লাখ ৯৩ হাজার ভোট পেয়েছেন, যা প্রদত্ত ভোটের ৩৮ দশমিক ২ ভাগ।

জেরেমি করবিন

উল্লেখ্য,দলের তৃণমূল কর্মীদের নিরঙ্কুশ সমর্থন নিয়ে লেবারদের নেতা নির্বাচিত হয়েছিলেন করবিন। নব্য উদারবাদী অর্থনীতির পক্ষের নিও লেবারদের বিরুদ্ধেই তার অবস্থান। লেবার পার্টির জনমুখী পুরনো ধারার রাজনীতিকেই উপজীব্য করেন এই বামপন্থী নেতা। ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে যুক্তরাজ্যের আলাদা না হওয়ার পক্ষে অর্থাৎ ‘রিমেইন’ শিবিরের হয়ে প্রচারণা চালিয়েছিলেন লেবার নেতা জেরেমি করবিন। তবে ব্রিটিশ জনগণের রায় এর বিপক্ষে যাওয়ার পর দলীয় নেতৃত্বের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েন তিনি। জুনে ছায়া পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি বেনকে বরখাস্ত করার বিষয়টি মূলত করবিনের বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোট আহ্বান করার ক্ষেত্রে লেবার এমপিদের জন্য অনুঘটক হিসেবে কাজ করেছিল। করবিনের বিপক্ষে দলীয় নেতৃত্বের চ্যালেঞ্জে নামেন ঈগল এবং ওয়েন স্মিথ। পরে অবশ্য স্মিথকে সমর্থন জানিয়ে ঈগল এ লড়াই থেকে সরে দাঁড়ান। করবিন আর স্মিথের মধ্যেই নেতৃত্বের লড়াই হয় শেষ পর্যন্ত।

noname

লেবার পার্টির সাধারণ সদস্যদের মধ্যে করবিন অনেক বেশী জনপ্রিয় হলেও এমপিদের মধ্যে একটি বড় অংশই তার বিরোধী। তাই তিনি নির্বাচন জিততে পারবেন না বলে প্রচার করতে চায় তার বিরোধীরা। তবে করবিনের সমর্থকরা মনে করেন, গত কয়েক দশকে লেবার পার্টি তার প্রকৃত মূল্যবোধ ও চরিত্র হারিয়ে ফেলেছিল, এবং করবিনের নেতৃত্বেই তারা আগামি নির্বাচন জিততে পারবেন। দলীয় নেতৃত্ব নির্ধারণের এই নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর লেবার নেতা করবিন হুঁশিয়ার করেছিলেন, এমপিদের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের চেষ্টা করবেন তিনি। তবে নির্বাচন পূর্ববর্তী অবস্থায় তিনি বলেছিলেন, দলীয় গঠনতন্ত্র এবং গণতান্ত্রিকতার পরিসরেই এমপিদের কাজ করতে হবে।

নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর সংক্ষিপ্ত বক্তৃতায় দলকে ঐক্যবদ্ধ করার ওপর জোর দেন করবিন।

/বিএ/