ভুক্তভোগীদের বরাত দিয়ে ওই প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, তাদেরকে নিরাপত্তাবাহিনীর হেফাজতে নিয়ে গুলি করে বলা হয়েছে ‘ভুয়া ক্রসফায়ারে’ সশস্ত্র অপরাধীদের, অথবা সহিংস বিক্ষোভ চলাকালে আত্মরক্ষার্থে নিরাপত্তাবাহিনী গুলি করতে বাধ্য হয়েছে।
‘বাঁচার অধিকার নেই: বাংলাদেশের নিরাপত্তাবাহিনী দ্বারা পায়ে গুলি এবং বিকলাঙ্গ করা হচ্ছে’ শীর্ষক ৪৫ পৃষ্ঠার এক প্রতিবেদনে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের প্রতি সকল ঘটনা দ্রুততার সঙ্গে, নিরপেক্ষ ও স্বতন্ত্র তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে।
এইচআরডব্লিউ-র মতে, নিরাপত্তাবাহিনী কর্তৃক বিচারবহির্ভুত হত্যাকাণ্ড, পায়ে গুলি করা এবং নিরাপত্তা হেফাজতে অন্যান্য নির্যাতনের অভিযোগ তদন্তে বাংলাদেশ সরকারের উচিত জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক সংস্থাকে আমন্ত্রণ জানানো। প্রতিবেদনে ন্যায়বিচার, দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করতে নিরাপত্তাবাহিনী পুনর্গঠনেরও আহ্বান জানিয়েছে এইচআরডব্লিউ।
ওই প্রতিবেদনে এইচআরডব্লিউ ২৫ জন ‘ভুক্তভোগীর’ বক্তব্য প্রকাশ করেছে। যার মধ্যে বেশিরভাগই বিএনপি এবং জামায়াতের কর্মী-সমর্থক। অভিযোগ রয়েছে, নিরাপত্তাবাহিনী বেশ কয়েকজনের পায়ে গুলি করে। কয়েকজন অভিযোগ করেন, গুলি করার আগে তাদের পেটানো হয়। বেশিরভাগ ভুক্তভোগীই নিজেদের পরিচয় প্রকাশে ভয় পান বলেও ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ-এর এশিয়া বিষয়ক পরিচালক ব্র্যাড অ্যাডামস অভিযোগ করেন, ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার আগে বর্তমান সরকারের প্রতিশ্রুতি ছিল, বিচারবহির্ভুত হত্যাকাণ্ড বন্ধ করা হবে, কিন্তু ক্ষমতায় আসার পর সে পরিস্থিতির কোনও উন্নতি হয়নি।
ব্র্যাড বলেন, “বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনী দীর্ঘদিন ধরে ‘ভুয়া ক্রসফায়ারে’ বন্দিদের হত্যা করছে, যেখানে প্রতিবারই দাবি করা হয়, ওই ভুক্তভোগীকে অপরাধ সংঘটনের স্থানে নেওয়ার পর তার সহযোগীরা আক্রমণ করলে আত্মরক্ষার্থে নিরাপত্তাবাহিনীও গুলি চালায়, তাতে ওই ব্যক্তি নিহত হন।”
বিচারবহির্ভুত হত্যাকাণ্ড এবং নিরাপত্তা হেফাজতে নির্যাতনের বিষয়গুলো বন্ধে উদ্যোগ নেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ব্র্যাড অ্যাডামস। তিনি বলেন, ‘কেবল একটি ভিন্ন রাজনৈতিক দলকে সমর্থনের জন্য নাগরিকদের হত্যা এবং বিকলাঙ্গ করার পর যেন নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্যরা পার না পেয়ে যায়, সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে প্রধানমন্ত্রীকেই।’
/এসএ/