মোদি যেখানে রাম, নওয়াজ সেখানে রাবণ!

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে রামচন্দ্রের এবং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফকে রাবণের ভূমিকায় রেখে উত্তর প্রদেশে ব্যানার টানিয়েছে ক্ষমতাসীন বিজেপির জোটভুক্ত দল শিব সেনা। আর কথিত সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের প্রমাণ চাওয়ায় দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীকে শত্রুর কাতারেই রাখা হয়েছে ব্যানারে। কেজরিওয়ালকে সেখানে রাবণের ছেলে মেঘনাদের রূপে উপস্থাপন করা হয়েছে। 

মোদি ও নওয়াজকে নিয়ে ব্যানার

পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরে জঙ্গি ঘাঁটি লক্ষ্য করে ভারতীয় সেনাবাহিনীর দাবিকৃত সার্জিক্যাল স্ট্রাইক নিয়ে বেশ উৎসবমুখর আমেজে রয়েছেন উত্তর প্রদেশের বিজেপি ও শিব সেনা দলের কর্মীরা। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পারিকর ও ভারতীয় সেনাবাহিনীকে ধন্যবাদ জানিয়ে বিভিন্ন ব্যানার ও পোস্টারে উত্তর প্রদেশকে ছেয়ে দিচ্ছেন তারা। তবে এবার ধন্যবাদ জ্ঞাপনকে ছাপিয়ে অন্যরকম এক ব্যানার টানিয়েছে শিব সেনা। লক্ষ্ণৌ, বারানসি আগ্রা ও মুজাফফরনগরে লাগানো ওই ব্যানারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যেন রামচন্দ্রের মতো পরাক্রমশালী ভূমিকায় অবতীর্ণ এবং রামের মতই রাবণের বিনাশ করেছেন তিনি l ওই পোস্টারে মোদিকে যেমন রাম হিসেবে দেখানো হচ্ছে তেমনি রাবণ করা হয়েছে পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফকে l  

এদিকে এক দিকে মোদি আর আরেকদিকে প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পারিকর এবং মাঝখানে সেনাবাহিনীর ছবি ব্যবহার করে একটি ব্যানার তৈরি করেছে বিজেপি। সার্জিক্যাল স্ট্রাইক পরিচালনার জন্য ওই ব্যানারে সেনাবাহিনীকে স্যালুট জানানো হয়েছে। মনোহর পারিকরের উত্তর প্রদেশ সফর উপলক্ষ্যে ওই ব্যানারটি তৈরি করা হয় বলে জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি। 

সার্জিক্যাল স্ট্রাইক

উল্লেখ্য, পাঠানকোটের সেনাঘাঁটিতে জঙ্গি হামলা এবং পরবর্তীতে হিজবুল নেতা বুরহান ওয়ানিকে কথিত এনকাউন্টারে হত্যার পর থেকেই ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা বাড়তে থাকে। সাম্প্রতিক উরি সেনাঘাঁটিতে জঙ্গি হামলার পর আবারও জয়েশ ই মোহাম্মদের সংশ্লিষ্টতার প্রসঙ্গ তুলে পাকিস্তানকে দায়ী করতে শুরু করে ভারত। পারস্পরিক দোষারোপ এবং এ নিয়ে আন্তর্জাতিক তৎপরতার এক পর্যায়ে ২৮ সেপ্টেম্বর (বুধবার) রাতে নিয়ন্ত্রণ রেখা পেরিয়ে ভারতের সেনারা সন্ত্রাসী ঘাঁটিগুলোতে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালানোর দাবি করে। ওই অভিযানে ৯ পাকিস্তানি সেনা ও ৩৫ থেকে ৪০ জঙ্গি নিহত হয়েছে বলে দাবি করা হয়। ঘটনার পর থেকে দুই সেনা সদস্য নিহত হওয়ার খবর নিশ্চিত করে পাকিস্তান দাবি করে আসছে এটি সার্জিক্যাল স্ট্রাইক ছিল না, সীমান্ত সংঘর্ষ বা আন্তঃসীমান্ত গোলাগুলির ঘটনা ছিল। এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, নিয়ন্ত্রণরেখার ওপারে সংঘটিত 'সার্জিক্যাল স্ট্রাইক' নিয়ে মাতামাতি না করতে মন্ত্রিসভার সদস্যদেরকে সাবধান করে দিয়েছিলেন মোদি। কিন্তু উত্তর প্রদেশের বিজেপি নেতারা তার সেই নির্দেশে কর্ণপাত করেননি। সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের প্রশংসা করে ব্যানার তৈরি করেছেন তারা। সূত্র: এনডিটিভি, ডন

/এফইউ/