ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে আলেপ্পোর পূর্বাঞ্চল: জাতিসংঘ দূতের সতর্কতা

মিস্তুরাসিরিয়ার আলেপ্পোর বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত অংশে রাশিয়ার সমর্থনে সরকারি বাহিনীর বোমা হামলা চলতে থাকলে বড়দিন উৎসব নাগাদ তা পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যাবে বলে সতর্ক করেছেন জাতিসংঘের বিশেষ দূত। সেইসঙ্গে সিরিয়ায় সেব্রেনিংসা ও রুয়ান্ডার মতো আরও একটি গণহত্যার ঘটনা প্রতিহত করতে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে আকুল আবেদন জানিয়েছেন তিনি। বৃহস্পতিবার জেনেভা থেকে জাতিসংঘের সিরিয়াবিষয়ক বিশেষ দূক স্ট্যাফান ডে মিস্তুরা এ আবেদন জানান।
সিরিয়ার আলেপ্পো শহরে রাশিয়ার সমর্থনপুষ্ট সরকারি বাহিনীর বোমা হামলাকে নির্মম ও অবিরত উল্লেখ করে তিনি শহরটির বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত অংশ ধ্বংস হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা জানান। মিস্তুরা বলেন, ‘আলেপ্পোর পূর্বাঞ্চলে যে হারে বোমা হামলা হচ্ছে তাতে বড়জোর আড়াই মাস সময় আছে। এরমধ্যে আলেপ্পোর পূর্বাঞ্চল পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যাবে। হাজার হাজার বেসামরিক মানুষ মারা যাবে। পালাতে গিয়ে অনেকে আহত হবে আবার অনেকে শরণার্থী হবে।’
বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত এলাকায় সাবেক জাভাত আল নুসরা যোদ্ধাদের উপস্থিতিকে কারণ সিরিয়া ও রাশিয়া তাদের অপরাধ থেকে রেহাই পাবে না বলে সতর্ক করেন মিস্তুরা। তার মতে, ৯০০ নুসরা যোদ্ধাকে ধ্বংস করার প্রচেষ্টাকে কারণ হিসেবে দেখিয়ে হাজার হাজার নিরীহ মানুষকে হত্যা করা হলে ইতিহাসই সিরিয়ার সরকার ও রাশিয়ার বিচার করবে।
বিধ্বস্ত আলেপ্পো
আলেপ্পোতে কোনও সংস্কারপন্থী বিদ্রোহী নেই এবং যুক্তরাষ্ট্র আল নুসরাকে আলোচনার ক্ষেত্রে দর কষাকষির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে বলে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ অভিযোগ করার পর মিস্তুরা এমন মন্তব্য করলেন। ড্যানিশ টিভিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আসাদ বলেছিলেন আলেপ্পোতে সিরিয়ার সরকারের অভিযানের তীব্রতা কমবে না। বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত অংশে লড়াইরতদের এবং তাদের পরিবারকে চরম পরিণতি ভোগ করার জন্য প্রস্তুত থাকতেও বলেন তিনি।  
সিরিয়ায় ২০১১ সালে শুরু হওয়া গৃহযুদ্ধে আড়াই লাখ মানুষ নিহত হয়েছেন। বাস্তুচ্যুত হয়েছেন ১০ লাখের বেশি মানুষ। সিরিয়ার চলমান সংকট নিয়ে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান বিপরীত ধর্মী। বর্তমান প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। এ জন্য তারা আসাদ সরকারের বিদ্রোহ ঘোষণাকারী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে অস্ত্র দিয়ে সহযোগিতা করছে এবং ইসলামিক স্টেটের (আইএস) বিরুদ্ধে বিমান হামলা চালাচ্ছে। তবে আসাদ সরকারের দাবি, আইএসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের নামে যুক্তরাষ্ট্র মূলত বিদ্রোহীদের সহযোগিতা করতে সরকারি বাহিনীর ওপর হামলা চালাচ্ছে। আর রাশিয়া বাশার আল আসাদকে ক্ষমতায় দেখতে চায়। আসাদ সরকারের সমর্থনে রাশিয়াও আইএস ও বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে বিমান হামলা চালাচ্ছে। সিরিয়া সংকটকে কেন্দ্র করে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র প্রক্সি যুদ্ধে মেতে ওঠেছে বলে অনেকেই মনে করেন। সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

/এফইউ/