দুয়ার্তের চীন সফরে ম্যানিলা-বেইজিং নতুন সম্পর্কের আভাস

ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুয়ার্তে প্রায় আড়াইশ’ জনের এক বিশাল ব্যবসায়িক প্রতিনিধিদল নিয়ে চীন সফরে যাচ্ছেন। দীর্ঘদিনের বিরোধ মিটিয়ে দেশ দুটির মধ্যে শুরু হতে যাচ্ছে এক নতুন সম্পর্ক। ব্যবসায়িক মিত্র হতে যাচ্ছে দেশ দুটি।

রদ্রিগো দুয়ার্তে

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কে অবনতি ঘটে দুয়ার্তের। চলতি বছরের জুনে ক্ষমতায় আসার পর প্রতিশ্রুতি অনুসারে মাদক-বিরোধী অভিযান শুরু করেন দুয়ার্তে। এতে সহস্রাধিক মানুষ নিহত হওয়ার পর বিশ্বের অনেক নেতারাই দুয়ার্তের সমালোচনা করেন। আর এর বিপরীতে দুয়ার্তে ওই নেতাদের গালাগালি করতেও ছাড়েননি। এতে বাদ যাননি মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি-মুন, বা পোপ ফ্রান্সিস। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি ঘটার সঙ্গে সঙ্গে রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে দুয়ার্তের সম্পর্ক ঘনিষ্ঠও হয়েছে।

এরই ফলশ্রুতিতে আগামী ১৯ থেকে ২১ অক্টোবর আনুষ্ঠানিক চীন সফরে যাচ্ছেন দুয়ার্তে। এই সফরে তার সঙ্গে প্রতিনিধিদলে কারা থাকছেন, এবিষয়ে কোনও ঘোষণা দেওয়া হয়নি। তবে ফিলিপাইনের সরকারি কর্মকর্তা ও ব্যবসায়িক সংগঠনগুলো জানিয়েছে, প্রতিনিধিদলে যোগ দেওয়ার রেজিস্ট্রেশন ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে।

সূত্রের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ফিলিপাইনের কর্মকর্তারা চীনা ব্যবসায়িক ও সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন। রেল, পর্যটন, কৃষি, বিদ্যুৎ এবং শিল্পোৎপাদন আলোচনায় প্রাধান্য পাবে।

ফিলিপাইনের বাণিজ্য সচিব জানিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে দুয়ার্তের সঙ্গে ২৪ জনের মতো ব্যবসায়িক প্রতিনিধি চীনে যাওয়ার কথা থাকলেও পরে সংখ্যাটা বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় ২৫০ জনে। আরও ১০০ জন এতে যোগ দেওয়ার অপেক্ষার রয়েছেন বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

চীনা প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াং এবং ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুয়ার্তে

দুয়ার্তের এই সফর সম্পর্কের ভিন্ন মাত্রা নির্দেশ করছে। বিশেষত ফিলিপাইনের মতো একটা দেশ, যেখানে লক্ষ্যণীয় মাত্রায় মার্কিন সামরিক-বেসামরিক উপস্থিতি রয়েছে, সেখানে বৈরিতাপূর্ণ চীনে দুয়ার্তের সফরকে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।

দুয়ার্তে আগেই জানিয়েছেন, তিনি চীনের সঙ্গে দক্ষিণ চীন সাগরে চীনা কৃত্রিম দ্বীপ এবং আঞ্চলিক সমস্যা নিয়ে আলোচনা করবেন। সূত্রের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, দুয়ার্তের সঙ্গে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করবেন।  

এদিকে, মঙ্গলবার এক আঞ্চলিক প্রতিরক্ষা ফোরামে চীন জানিয়েছে, দক্ষিণ চীন সাগরে মার্কিন সামরিক মহড়া, দক্ষিণ কোরিয়ায় ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা স্থাপনসহ আঞ্চলিক বিভিন্ন দেশে মার্কিন উপস্থিতি বৃদ্ধিকে চীন এশিয়ার আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্য হুমকি বলে বিবেচনা করছে।

সূত্র: রয়টার্স।  

/এসএ/