রাজার মৃত্যুতে এক বছর শোক করবেন থাইল্যান্ডের সরকারি কর্মকর্তারা

ভূমিবলের মৃত্যুতে কাঁদছেন থাই জনগণথাইল্যান্ডের রাজা ভূমিবল আদুল্যাদেজের মৃত্যুতে দেশটির সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য এক বছরের শোক ঘোষণা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার থাই রাজপ্রাসাদ থেকে রাজা ভূমিবলের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করার পর পরই দেশটির প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া ৩০ দিনের জন্য জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখার কথা বলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (১৩ অক্টোবর) বিশ্বের সবথেকে দীর্ঘ সময়ের রাজতন্ত্র ধরে রাখা থাইল্যান্ডের রাজা ভূমিবল আদুল্যাদেজ-এর জীবনাবসান হয়। এদিন, রাজপ্রাসাদ থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘সিরিরাজ হাসপাতালে রাজা মহোদয়ের জীবনাবসান হয়েছে।’ স্থানীয় সময় দুপুর ৩টা ৫২ মিনিটের দিকে তার মৃত্যু হয় বলেও উল্লেখ করা হয় বিবৃতিতে। এর আগে গত রবিবারই জানানো হয়েছিল, তার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল নেই।
রাজপ্রাসাদের বিবৃতি আসার কিছুক্ষণ পরই থাই প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে এক বছরের জন্য সরকারি কর্মকর্তাদের শোক পালনের ঘোষণা দেওয়া হয়। ১৪ অক্টোবর (শুক্রবার) থেকে এক মাসের জন্য সরকারি অফিস ও শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখার কথাও বলা হয়। আর এ শোকে সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে সামিল হতে জনগণের প্রতিও আহ্বান জানানো হয়েছে।
ভূমিবলের প্রতিকৃতির সামনে দুইজন বসে আছে
এদিকে সদ্য প্রয়াত রাজা ভূমিবল আদুল্যাদেজকে ব্যাংককের সিরিরাজ হাসপাতাল থেকে গ্র্যান্ড প্যালেসে নিয়ে যাওয়ার পর ধর্মীয়ভাবে তাকে গোসল করানো হবে। ধারণা করা হচ্ছে, শুক্রবার (১৪ অক্টোবর) এ ধর্মীয় আচারটি পালন করা হবে। এরপর তার মরদেহ ১০০ দিনের জন্য ওইভাবে শুইয়ে রাখা হবে এবং বড় আকারে শেষকৃত্য অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি শুরু হবে। ওই শেষকৃত্য অনুষ্ঠান হতে এক বছর লেগে যেতে পারে।  
থাই রাজপরিবারের শেষকৃত্য অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি নিতেই কয়েক মাস সময় লেগে যায়। ২০০৮ সালে রাজা ভূমিবলের বোন যখন মারা যান তখনও ১০০ দিনের শোক ঘোষণা করা হয়েছিল। মৃত্যুর দশ মাস পর তার সৎকার করা হয়। থাইল্যান্ডের নিয়ম অনুযায়ী, শোককালীন সময় শেষ না হওয়া পর্যন্ত পরবর্তী রাজার অভিষেক হয় না।

১৯২৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটসের কেমব্রিজে জন্মগ্রহণ করেন ভূমিবল। ১৯৪৬ সালে ভাইয়ের মৃত্যুর পর রাজা ভূমিবল মাত্র ১৮ বছর বয়সে থাইল্যান্ডের সিংহাসনে আরোহণ করেন। ১৭৮২ সাল থেকে ক্ষমতাসীন ও থাইল্যান্ডের সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী চক্রি রাজবংশের নবম রাজা তিনি। থাইল্যান্ডের অধিকাংশ নাগরিকই তাকে মহারাজা হিসেবে সম্বোধন করে থাকেন। চলতি বছরের জুনে তার সিংহাসনে আরোহনের ৭০তম বার্ষিকী পালন করা হয়। সূত্র: বিবিসি, ব্যাংকক পোস্ট

/এফইউ/