চীনের সংবাদমাধ্যম যেভাবে দেখছে জিনপিংয়ের বাংলাদেশ সফর

চাইনা ডেইলিচীনের সংবাদমাধ্যমগুলো দেশটির প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বাংলাদেশ সফরকে ‘গুরুত্বপূর্ণ’ হিসেবে দেখছে। দেশটির দৈনিক চাইনা ডেইলিতে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনের প্রেসিডেন্ট নিজেই দক্ষিণ এশিয়া ও ভারত মহাসাগর এলাকার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশকে ‘গুরুত্বপূর্ণ’ মনে করছেন। শুক্রবার দুইদিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ঢাকায় পৌঁছে এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা জানিয়েছেন।

প্রতিবেদনে জানানো হয় শি জিনপিং বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ‘দুই দেশের রাজনৈতিক ঘনিষ্টতা, সম্পর্ক এবং সহযোগিতা সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিতে আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত আছি। গত ৪১ বছর ধরে চীন-বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।’

সিনহুয়াঅন্যদিকে চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যম সিনহুয়ার এক বিশ্লেষণধর্মী প্রতিবেদনে শি জিনপিংয়ের এশিয়া (বাংলাদেশ, কম্বোডিয়া ও ভারত) সফরকে ‘নতুন ধরনের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক’ (new type of international relations) এবং ‘একই লক্ষ্যের সম্প্রদায়’ (a community of common destiny) হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছ।

ওই প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়েছে, ২০১২ সালের পর থেকে শি জিনপিং ‘একই লক্ষ্যের সম্প্রদায়’ ধারণাটি প্রতিষ্ঠা করতে প্রতিবেশী দেশ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে সম্পর্ক বাড়ানোর চেষ্টা করছেন। এ বিষয়ে চাইনা ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যাডিজের গবেষক ডং মানিউং বলেছেন, ‘জিনপিংয়ের এশিয়া সফর ‘একই লক্ষ্যের সম্প্রদায়’ ধারণা প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টাকে এগিয়ে নেবে।

সিনহুয়ার অন্য এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে শি জিনপিং বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক খুবই ইতিবাচক হয়েছে এবং অনেকগুলো বিষয়ে তাঁরা চুক্তি সই করেছেন।’

তিনি আরও জানিয়েছেন, ‘ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার অংশীদারিত্ব থেকে চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ককে সহযোগিতার কৌশলগত অংশীদারিত্বে এবং দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও উচ্চমাত্রায় নিয়ে যেতে দু’টি দেশই একমত হয়েছে।’

সিনহুয়া১সিনহুয়ার প্রতিবেদনে উল্লখ করা হয়েছে শি জিনপিং বলেছেন, ‘আমরা আমাদের উন্নয়ন কৌশল, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সুবিধা বাড়াতে যৌথ সম্ভাব্য সমীক্ষা চালানো এবং বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অবকাঠামো, উৎপাদন সক্ষমতা, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ পরিবহনে সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং বাংলাদেশে বড় প্রকল্পে সহযোগিতা প্রদানে সম্মত হয়েছি।’

চীনের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আমরা বিসিআইএম অর্থনৈতিক করিডোর প্রতিষ্ঠা এবং পারস্পরিক স্বার্থে আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক ইস্যুতে যোগাযোগ ও সমন্বয় বৃদ্ধিতেও সম্মত হয়েছি।

কম্বোডিয়া সফর শেষে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং দুইদিনের রাষ্ট্রীয় সফরে শুক্রবার বেলা ১১টা ৪০ মিনিটের দিকে ঢাকায় পৌঁছান। গত ৩০ বছরের মধ্যে চীনের কোনও প্রেসিডেন্ট প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ সফর করলেন। এরপর সপ্তাহব্যাপী ব্রিকস সম্মেলনে অংশ নিতে শনিবার তিনি ভারতের গোয়ার উদ্দেশ্যে অংশ নেবেন।

চীনের প্রেসিডেন্টের সফরে মোট ২৭টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। এসব চুক্তি ও সমঝোতা স্মারকগুলো হয়েছে একে-অপরের মধ্যে ব্যবসা ও বিনিয়োগ, ব্লু-ইকোনমি, বিসিআইএম-ইসি, সড়ক ও সেতু, রেলপথ, বিদ্যুৎ, সমুদ্র আইসিটি, শিল্পোৎপাদন সক্ষমতা বৃদ্ধি ও দক্ষতার উন্নয়ন ইত্যাদি বিষয়ে।

/এসএনএইচ/