ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরে কারফিউ প্রত্যাহার, ১৪৪ ধারা বহাল

ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরজুড়ে জারি থাকা কারফিউ প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। তবে উপত্যকায় জনগণকে সমাবেশের অধিকার দেওয়া হচ্ছে না। বহাল থাকছে ১৪৪ ধারা।

কারফিউ প্রত্যাহারের পর কাশ্মিরের অনন্তনাগ শহর

শনিবার কাশ্মির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পরিস্থিতির ‘উল্লেখযোগ্য উন্নতি’ হওয়ায় কারফিউ উঠিয়ে নেওয়া হয়েছে। তবে পরিস্থিতি এখনও স্বাভাবিক অবস্থায় না আসায় এখনও জারি থাকবে ১৪৪ ধারা। এই আইন অনুসারে, জনগণের সমাবেশের অধিকার রদ করা হয়।

এক পুলিশ কর্মকর্তা ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু-কে জানিয়েছেন, ‘কাশ্মিরের কোথাও কারফিউ নেই। জনগণের চলাচলের ওপর থেকেও সকল বিধি-নিষেধ তুলে নেওয়া হয়েছে।’ অবস্থার উন্নতির হওয়ার কারণেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

তবে সমগ্র উপত্যকায় ১৪৪ ধারা বহান থাকবে। ওই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘সংবেদনশীল স্থানগুলোতে আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের জন্য নিরাপত্তাবাহিনী উপস্থিত থাকবে। যেন লোকজন নির্ভয়ে চলাচল করতে পারেন, নিজেদের নিত্যদিনের কাজ করতে পারেন।’

শুক্রবার রাত থেকেই প্রিপেইড মোবাইলের আউটগোয়িং কলের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছেন। তবে মোবাইল ইন্টারনেট এখনও বন্ধ রয়েছে।

তবে কারফিউ প্রত্যাহারের পরও কাশ্মিরের জন-জীবন পুরোপুরি স্বাভাবিক ধারায় ফেরেনি। তবে রাস্তায় আগের চেয়ে বেশি যানবাহন দেখা গেছে।

শনিবার চলমান উত্তাল আন্দোলনের ৯৯তম দিন। এদিকে, কাশ্মিরের স্বাধীনতার দাবিতে আন্দোলনরত সংগঠনগুলোর জোট হুরিয়ত কনফারেন্স-এর ডাকা হরতাল রবিবারও বহাল থাকবে। ধারণা করা হচ্ছে আন্দোলনের শততম দিনেও বেশিরভাগ দোকান, অফিস-আদালতই বন্ধ থাকবে।

প্রসঙ্গত, ৮ জুলাই অনন্তনাগের কোকেরনাগ এলাকায় সেনা ও পুলিশের বিশেষ বাহিনীর যৌথ অভিযানে হিজবুল কমান্ডার বুরহান ওয়ানিসহ তিন হিজবুল যোদ্ধা নিহত হন। বুরহান নিহতের খবর ছড়িয়ে পড়লে কাশ্মির জুড়ে উত্তেজনা শুরু হয়। বিক্ষুব্ধ কাশ্মিরিদের দাবি, বুরহানকে ‘ভুয়া এনকাউন্টারে’ হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে প্রথমে পুলওয়ামা ও শ্রীনগরের কিছু অঞ্চলে কারফিউ জারি করা হয়। পরবর্তীতে বিক্ষোভ আরও জোরালো হলে পুরো কাশ্মিরজুড়ে কারফিউ সম্প্রসারিত হয়।

ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং-এর কাশ্মির সফরকে কেন্দ্র করে ৩০ আগস্ট কাশ্মিরের বেশিরভাগ এলাকা থেকে কারফিউ সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাতেও আন্দোলনের উত্তাপ কমেনি। এর সপ্তাহখানের মধ্যেই ঈদুল আজহার দিনে আবারও স্বাধীনতার আন্দোলন দমন করতে জারি করা হয় উপত্যকাজুড়ে কারফিউ। চলমান সংঘর্ষে ৮৪ জনেরও বেশি কাশ্মিরি বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন প্রায় সাড়ে ১৩ হাজার মানুষ। এর মধ্যে সাড়ে সাত হাজারেরও বেশি কাশ্মিরি বিক্ষোভকারী।

সূত্র: দ্য হিন্দু।

/এসএ/