আলেপ্পোতে বিমান হামলায় একই পরিবারের ১৪ জনসহ নিহত ৪৭

আলেপ্পোতে বিমান হামলাসিরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় আলেপ্পো শহরের বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত এলাকায় বিমান হামলায় একই পরিবারের ১৪ জন নিহত হয়েছে। আর এ নিয়ে আলেপ্পোতে ২৪ ঘণ্টায় সরকারি বাহিনীর বিমান হামলায় নিহতের সংখ্যা ৪৭ জনে দাঁড়িয়েছে। স্থানীয় মানবাধিকার সংগঠন ও উদ্ধারকারীদের বরাত দিয়ে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা খবরটি নিশ্চিত করেছে।
সিরিয়ায় অনুসন্ধান ও উদ্ধার তৎপরতা পরিচালনাকারী সংগঠন হোয়াইট হেলমেটসের আলেপ্পোভিত্তিক মুখপাত্র ইব্রাহিম আবু লেইথ সোমবার বলেন, ‘সকালে নতুন একটি গণহত্যার ঘটনা ঘটেছে। রাশিয়ার যুদ্ধবিমান মারজেহ এলাকায় বোমা হামলা চালালে একই পরিবারের ১৪ জন নিহত হয়, তাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।’
ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়া কয়েকজনকে উদ্ধারের চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক মানবাধিকার পর্যবেক্ষক সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস এর পক্ষ থেকে বলা হয়, নিহতদের মধ্যে ৫ জন শিশু রয়েছে।
সিরিয়ান অবজারভটরির প্রধান রামি আব্দুর রহমান জানান, নিহত ৪৭ জনের মধ্যে অনেকেই কাতেরজি এলাকার। রাতভর ওই এলাকায় রুশ বিমান হামলায় ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এক স্বেচ্ছাসেবক ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, আরও বিমান হামলা হওয়ার আশঙ্কায় তারা রাতভর উদ্ধার অভিযানও চালাতে পারছিলেন না।

সিরিয়ার আলেপ্পোর পূর্বাঞ্চলে বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত এলাকায় গত মাসে অস্ত্রবিরতি ভেস্তে যাওয়ার পর রাশিয়া সমর্থিত অভিযানে কয়েকশো মানুষ নিহত হয়েছে। সিরিয়ান অবজারভেটরির হিসেব অনুযায়ী, তখন থেকে আলেপ্পোতে বিমান হামলায় ৪৪৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এরমধ্যে ৮২ জন শিশু। তবে রাশিয়া আর সিরিয়ার বাহিনীর দাবি, তারা কেবল ‘সন্ত্রাসীদের’ লক্ষ্যবস্তু করে থাকে।

সিরিয়ায় ২০১১ সালে শুরু হওয়া গৃহযুদ্ধে আড়াই লাখ মানুষ নিহত হয়েছেন। বাস্তুচ্যুত হয়েছেন ১০ লাখের বেশি মানুষ। সিরিয়ার চলমান সংকট নিয়ে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান বিপরীত ধর্মী। বর্তমান প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। এ জন্য তারা আসাদ সরকারের বিদ্রোহ ঘোষণাকারী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে অস্ত্র দিয়ে সহযোগিতা করছে এবং ইসলামিক স্টেটের (আইএস) বিরুদ্ধে বিমান হামলা চালাচ্ছে। তবে আসাদ সরকারের দাবি, আইএসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের নামে যুক্তরাষ্ট্র মূলত বিদ্রোহীদের সহযোগিতা করতে সরকারি বাহিনীর ওপর হামলা চালাচ্ছে। আর রাশিয়া বাশার আল আসাদকে ক্ষমতায় দেখতে চায়। আসাদ সরকারের সমর্থনে রাশিয়াও আইএস ও বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে বিমান হামলা চালাচ্ছে। সিরিয়া সংকটকে কেন্দ্র করে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র প্রক্সি যুদ্ধে মেতে ওঠেছে বলে অনেকেই মনে করেন। সূত্র: আল জাজিরা, রয়টার্স

/এফইউ/