আইএস-এর আগুনে বিষাক্ত হয়ে উঠেছে মসুল

ইরাকি ও মার্কিন সেনা সদস্যরা মাস্ক পরতে বাধ্য হচ্ছেনইরাকের মসুল শহরের নিয়ন্ত্রণ রক্ষায় আইএস সদস্যরা একটি সালফার খনিতে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার পর থেকে বিষাক্ত হয়ে উঠেছে শহরের বাতাস। এরইমধ্যে দুই ইরাকির মৃত্যু হয়েছে। বিষাক্ত গ্যাসের কারণে অসুস্থ হয়ে পড়া শত শত মানুষকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। বাতাসে দূষণের তীব্রতা এতোটাই বেড়েছে যে মসুল পুনরুদ্ধারের লড়াইয়ে নামা ইরাকি ও মার্কিন সেনারা প্রতিরোধক মাস্ক ব্যবহার করতে বাধ্য হচ্ছেন। ইরাকের সেনাবাহিনী ও স্বাস্থ্যবিষয়ক কর্মকর্তাদের বক্তব্যকে উদ্ধৃত করে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো খবরটি নিশ্চিত করেছে।
সম্প্রতি মসুলের ২৫ মাইল দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত আল-মিশরাক সালফার খনিতে আগুন দেয় বলে দাবি করে ইরাকি বাহিনী। শনিবার ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর ইরাকের কেন্দ্রীয় পুলিশের মুখপাত্র জানান, ওইদিনও দমকল বাহিনী সালফার কারখানার আগুন নেভানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল। জ্বলন্ত ওই খনি থেকে বিষাক্ত ধোঁযা চারপাশে ছড়িয়ে পড়েছে। আর এতে শ্বাস-প্রশ্বাসে জটিলতা দেখা দিয়ে এরইমধ্যে দুই ইরাকি বেসামরিককে প্রাণ হারাতে হয়েছে। অসুস্থ হয়ে পড়েছেন হাজারো মানুষ। তাদেরকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
বিবিসি বলছে, ওই সালফার কারখানাটি যে এলাকায় রয়েছে সেই কায়ারাকে ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করে মসুল থেকে আইএস হটাতে ইরাক সরকারকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছিল যুক্তরাষ্ট্র। ২০০৩ সালে ইরাকে মার্কিন নেতৃত্বাধীন অভিযান চলার সময়ও আল-মিশরাক খনির বেশিরভাগ অংশ আগুনে পুড়ে গিয়েছিল। খনির আর ১০ শতাংশ সালফার অবশিষ্ট রয়েছে। বিষাক্ত গ্যাসের কারণে স্থানীয়দের কাশিতে ভুগতে হচ্ছে এবং তাদের চোখ দিয়ে পানি পড়ছে। অসুস্থদেরকে হাসপাতালে অক্সিজেন প্রদানের মাধ্যমে সেবা দেওয়া হচ্ছে।
উল্লেখ্য,২০১৪ সালের জুন মাসে জঙ্গিদের হাতে মসুল নগরীর পতন হয়। ইরাকের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই নগরী আইএসের হাত থেকে মুক্ত করার জন্য গত কয়েক মাস ধরে প্রস্তুতি চলছিল। সোমবার (১৭ অক্টোবর) ভোরে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে আনুষ্ঠানিকভাবে মসুল পুনরুদ্ধার অভিযান শুরুর ঘোষণা দেন ইরাকের প্রধানমন্ত্রী হায়দার আল আবাদি। বৃহস্পতিবার ইরাকের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে হায়দার আল-আবাদি বলেন, ‘সামরিক বাহিনী আমাদের ধারণার চেয়েও দ্রুত গতিতে নগরীর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, এমনকি আমরা যে পরিকল্পনা করেছিলাম, তা এর চেয়েও দ্রুতগতিতে এগোচ্ছে।’

মসুল অভিযানে ইরাকি সেনাবাহিনীর ১৮ হাজার সদস্য এবং কুর্দি পেশমেরগা বাহিনীর ১০ হাজার সদস্য অংশ নিচ্ছেন। সেই সঙ্গে পাঁচ হাজার মার্কিন সেনা সদস্যও তাদের সহযোগিতার জন্য এখন ইরাকে অবস্থান করছেন। এদিকে এ অভিযান শুরুর পর প্রথমবারের মতো বৃহস্পতিবার এক মার্কিন সেনা নিহত হওয়ার কথা জানিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। ইরাকের উত্তরাঞ্চলে রাস্তার পাশে পুঁতে রাখা বোমা হামলায় আহত হওয়ার পর মারা যান তিনি। তবে ঠিক কোন জায়গায় এ ঘটনা ঘটেছে তা জানানো হয়নি। সূত্র: আল জাজিরা, বিবিসি, এনডিটিভি
/এফইউ/বিএ/