আইএসের চালাকি ও নিষ্ঠুরতার নমুনার হরেক রকম বিস্ফোরক

4000

একটি ঝকঝকে আর আদুরে টেডি বিয়ার দেখে প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ হয়তো চোখ ফিরিয়ে হেঁটে চলে যাবেন, কিন্তু শিশুদের জন্য আত্মসম্বরন করা কঠিনই হবে। তেমন সব ফুটফুটে টেডি বিয়ার দিয়ে বিস্ফোরক ঢেকে রাখছে আইএস।   

কুর্দি বাহিনীর কর্নেল নওয়াজ কামিল হাসান বলেন, ‘ওরা জানে, খেলনা দেখে কুর্দি যোদ্ধারা ভ্রুক্ষেপমাত্র না করলেও শিশুরা অবশ্যই সেসব হাতে নিয়ে দেখতে চাইবে।’  

মসুল থেকে আইএস হঠাতে গঠিত হয়েছে এক যৌথ বাহিনী, সেই বাহিনীর সদস্য হিসেবে আছেন হাসান।তিনি বলেন, আইএস নতুন যোগদান করা সদস্যদের প্রশিক্ষণের জন্য ব্যবহার করছে এই সমস্ত হাতে তৈরি বোমা।

যে সকল এলাকায় বহুদিন ধরে আধিপত্য করে আসছে আইএস, সে সব স্থানে তৈরি হয়েছে সমান্তরাল আরেকটি অন্ধকার জগত, যেখানে সামান্য উপাদানও মানুষ হত্যা করতে সক্ষম। খেলনা, তাস ও ফেলে দেওয়া ঘড়িও হয়ে ওঠে প্রাণঘাতী।

এমনকি ফেলে দেওয়া মোজা, পুরানো কাপড়ের গাদাও প্রাণঘাতী অস্ত্র, যেসব কুকুর বিড়াল সহজেই ডিঙ্গিয়ে যেতে পারে, কিন্তু মানুষ কিছু করতে গেলেই বিস্ফোরিত হয়ে যায়। কাদা ও পাথরের তলায় লুকানো থাকে মর্টার।

বিস্ফোরক ও আত্মঘাতী বোমা তৈরি ও ব্যবহার করার ক্ষেত্রে আইএসের দক্ষতা এখানেই। এই সকল অস্ত্র বিশেষভাবে ভয়ঙ্কর, কেননা, সাজানো গোছানো এই অস্ত্র কার্যকর হয় যখন যুদ্ধ শেষ হয়ে যায় ও নাগরিকরা শহরে ফিরে আসেন।  

ইয়াজিদি সংখ্যালঘুদের বাসস্থান সিনজার নগরে আইএস বীভৎসতম নৃশংসতা ঘটিয়েছে। হাসান জানান, তার বাহিনী সেখানকার একটি মাত্র স্কুল ভবন থেকে পাঁচ টন বিস্ফোরক উদ্ধার করেছে।  

4000 (1)

এই উদ্ধারের সময় তাদের প্রতিটি দরজা জানালা এমনকি সকল আবর্জনা পর্যন্ত বার বার পরীক্ষা করে দেখতে হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘প্রতিদিনই আসছে নতুন যন্ত্র, আমাদের বাহিনীর সদস্যরা এমন সব জিনিস পেয়েছে যা কেউ আগে কখনো দেখেনি।’  

তিনি আরও জানান, অভিযানে ২ সদস্য নিহত এবং ১৫ সদস্য আহত হয়েছেন।

এই সব বিস্ফোরকের বেশিরভাগই তৈরি করা হয় ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস থেকে। অনভিজ্ঞ চোখে এসবকে জড়ো করা তারের কুণ্ডলী মনে হতে পারে। কিছু কিছু বিস্ফোরক প্রেসার কুকার ও বল বিয়ারিং দিয়েও তৈরি করা হয়।  

হাসান বলেন, ‘বুবি ট্র্যাপগুলো এমনভাবে মাটির তলায় পোতা থাকে যে সেগুলো অকেজো করতে হলে কাছাকাছি যেতে হয়, তাতে সেগুলো মাইনের মতো বিস্ফোরিত হয়ে যায়।’   

হাসান আরও বলেন, ‘এরা পশুও নয়, পশুরও অধম।’

সূত্র: গার্ডিয়ান 

/ইউআর/