সম্প্রতি বারতাল্লা শহরকে পুনর্দখল করা হয়েছে। মসুলের পথে এখন মাত্র দুটি গ্রাম ইসলামিক স্টেট (আইএস) এর দখলে রয়েছে।
একজন লেফটেন্যান্ট কর্নেল বলেন, ‘বাজওয়াইয়া ও জগজালি পুনরুদ্ধারে এ অভিযান চালানো হচ্ছে। মসুলের আগে সর্বশেষ এই দুটি গ্রাম জিহাদিদের দখলে রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা যদি তা করতে পারি, তবে আমরা মসুল থেকে কয়েকশ মিটার দূরে অবস্থান নিতে পারব।’
মসুল টাইগ্রিস নদী দিয়ে দুই ভাগে বিভক্ত। ইরাকি বাহিনী মসুলের উত্তর, পূর্ব ও দক্ষিণ দিক দিয়ে অগ্রসর হচ্ছে।
এদিকে মসুল নগরী পুনরুদ্ধারের অভিযান শুরুর পর থেকে ১০ হাজারেরও বেশি ইরাকি ঘর-বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। গত মাসে ইরাকি ও কুর্দি বাহিনী যৌথভাবে মধপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস)-এর নিয়ন্ত্রণে থাকা মসুল পুনরুদ্ধারের অভিযান শুরু করে।
২০১৪ সালের জুনে আইএস জঙ্গিরা মসুল নগরী দখল করে নেয়। ইরাকের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই নগরীতে এখনও প্রায় ১৫ লাখ মানুষ রয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। ১৭ অক্টোবর ভোরে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে আনুষ্ঠানিকভাবে মসুল পুনরুদ্ধার অভিযান শুরুর ঘোষণা দেন ইরাকি প্রধানমন্ত্রী হায়দার আল-আবাদি।
ইরাকি বাহিনী মসুলের কাছাকাছি জনবহুল অঞ্চলে পৌঁছানোর পর, হাজার হাজার মানুষ সেখান থেকে পালাতে শুরু করেছে। জাতিসংঘের ত্রাণকর্মীরা জানিয়েছেন, ১০ হাজার মানুষ মসুল থেকে পালিয়ে আসাটা খুবই অল্প একটা অংশ। তারা ১০ লাখেরও বেশি মানুষ মসুল ছেড়ে পালাবে বলে ধারণা করছেন।
নগরী থেকে পালিয়ে আসার কোনও মানবিক করিডোর না থাকলেও, এমনকি পালানোর ক্রসফায়ারের শঙ্কা থাকলেও মসুলবাসীরা বাধ্য হয়েই পালাচ্ছেন। গত দুইদিনে ইরাকি ও কুর্দি বাহিনী মসুলের আরও কাছাকাছি পৌঁছানোয় বিপুল সংখ্যক মানুষ মসুল থেকে পালিয়ে যাচ্ছেন। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে অনেকে পায়ে হেঁটেই পালিয়ে আসছেন।
এদিকে, মসুলের উত্তর, পূর্ব এবং দক্ষিণ দিক থেকে ইরাকি বাহিনী আইএস-এর সঙ্গে সম্মুখ যুদ্ধ শুরু করেছে। মসুলে প্রবেশের মুখে ইরাকি ও কুর্দি পেশমেরগা বাহিনী আইএস-এর প্রবল বাধার সম্মুখীন হচ্ছে। তবে আইএস-এর দখল থেকে এরইমধ্যে অন্তত ৯০টি গ্রাম উদ্ধার করেছে ইরাকি ও কুর্দি বাহিনী। মসুল নগরীর আশেপাশের বেশ কিছু অঞ্চলও ইরাকি বাহিনী নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। এখন তারা নগরীর ছয় কিলোমিটারের মধ্যে অবস্থান করছেন।
ইরাকি বাহিনী মসুলের নিকটবর্তী রুতবা শহর পুনরুদ্ধার করেছে। অপরদিকে পেশমেরগা বাহিনী উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় বাশিকা শহরটি পুনরুদ্ধার করেছে।
মার্কিন যুদ্ধবিমান শহরের কিছু কিছু এলাকায় বিমান হামলা চালিয়ে ইরাকি ও কুর্দি বাহিনীকে সহায়তা করেছে বলে জানা গেছে। তবে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী অ্যাশটন কার্টার জানিয়েছেন, অভিযানের গতি কমে আসলেও তারা আর কোনও সেনা সদস্যকে ইরাকে পাঠাবেন না। সূত্র: বিবিসি, আল জাজিরা।
/এমপি/