নিউ জিল্যান্ডে ভূমিকম্প

আটকা পড়া পর্যটক ও স্থানীয় বাসিন্দাদের উদ্ধারে তৎপরতা শুরু

 

nonameনিউ জিল্যান্ডের ভূমিকম্পকবলিত এলাকায় ঝড়ো বাতাস আর বৃষ্টির কারণে উদ্ধার তৎপরতা সাময়িক ব্যাহত হওয়ার পর মঙ্গলবার নতুন করে উদ্ধার কাজ শুরু হয়েছে। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা কাইকৌরায় আটকা পড়া পর্যটক ও স্থানীয় বাসিন্দাদের উদ্ধার করতে কাজ করে যাচ্ছেন উদ্ধারকর্মীরা।
উল্লেখ্য, স্থানীয় সময় রবিবার মধ্যরাতে (বাংলাদেশ সময় রবিবার বিকাল ৫টা) খ্রিস্টচার্চের উত্তরপূর্বাঞ্চলে শক্তিশালী ভূকম্পন অনুভূত হয়। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) বলছে, ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৭.৫। ভূমিকম্পের পর সুনামিও আঘাত হানে। অনুভূত হয়েছে শতাধিক আফটার শক। ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত ২ জনের প্রাণহানির ব্যাপারে নিশ্চিত হলেও দুর্গত এলাকায় এখনও অনেকে আটকা পড়ে আছেন। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় হেলিকপ্টার দিয়ে উদ্ধার কাজ চালাতে হচ্ছে। তবে প্রচণ্ড বাতাস আর বৃষ্টির কারণে উদ্ধার তৎপরতাও ব্যাহত হতে থাকে।
নিউ জিল্যান্ডে ভূতাত্ত্বিক বিপর্যয় পর্যবেক্ষণকারী প্রকল্প জিওনেট-এর হিসেব অনুযায়ী, ভূমিকম্পের কারণে দেশটিতে ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ ভূমিধস হয়েছে। কাইকৌরার আশেপাশে দুর্গম এলাকাগুলোতেই এ ভূমিধস বেশি হয়েছে। জিওনেট জানায়, ভূমিধসের কারণে যে ল্যান্ডস্লাইড ড্যাম বা লেক তৈরি হয় তা হাজার হাজার বছর থেকে যেতে পারে। সেগুলো ধীরে ধীরে ভরতে পারে আবার খুব দ্রুতও ভরতে পারে। যখন এ ড্যামগুলো দ্রুত ভরে যায় তখন রিভার সিস্টেমে ব্যাপক পরিমাণ পানি ও পলি ছাড়তে পারে। আর এ বন্যা নদী ব্যবহারকারীদের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে। আমাদের পর্যবেক্ষণ শেষ না হওয়া পর্যন্ত হুরুনুই থেকে আওয়াতেরে পর্যন্ত সাউথ আইল্যান্ডের পূর্ব উপকূলের সব নদী থেকে দূরে থাকার জন্য লোকজনকে পরামর্শ দিচ্ছি আমরা।

রবিবারের প্রথম দফা ভূমিকম্পে বেশ কিছু ভবন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে বলে জানা গেছে। বেশির ভাগ এলাকা বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। ভূমিধসে অনেক রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। অনেক মানুষের আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ভূমিকম্প ও সুনামির পর হাজার হাজার মানুষ ঘর ছেড়ে উঁচু জায়গায় আশ্রয় নেয়। তিমি দেখার জন্য কাইকৌরায় ভিড় করে থাকেন পর্যটকরা। ওই এলাকায় প্রায় ২০০০ মানুষের বসবাস। আবার, ভূমিকম্পের সময় শহরটিতে ১২০০ পর্যটক ছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান জানিয়েছে, নিজস্ব নাগরিকদের উদ্ধারে চীন চারটি হেলিকপ্টার নিয়োজিত করেছে। সোমবার ৪০ জন চীনা নাগরিককে উদ্ধার করা হয়। মঙ্গলবার আরও ৬০ জনকে উদ্ধার করা যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

নিউ জিল্যান্ড দেশটি তথাকথিত ‘রিং অব ফায়ার’-এর উপর অবস্থিত। এই ত্রুটি রেখায় ঘনঘন ভূমিকম্প এবং আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত হয়। এই রিংয়ের পরিধি পুরো প্রশান্ত মহাসাগর জুড়ে। খ্রিস্টচার্চে ২০১১ সালে ভয়াবহ ভূমিকম্পে ১৮৫ জন নিহত হয়। প্রায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় শহরটির অবকাঠামো। যা এখনও আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়নি।  

/এফইউ/বিএ/