গত অক্টোবরে ক্যান্সারে আক্রান্ত এই কিশোরী মারা যায়। এরপর তার দেহ কবর দেওয়ার পরিবর্তে হিমায়িত করে সংরক্ষণ করা হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রে। এভাবে মৃতদেহ সংরক্ষণের প্রক্রিয়াটিকে বলা হয় 'ক্রায়োনিকস'। যারা এই পদ্ধতিতে মৃত্যুর পর তাদের দেহ সংরক্ষণ করতে চান, তারা বিশ্বাস করেন, বিজ্ঞানের অগ্রগতির ফলে একদিন মৃত মানুষকে পুনরুজ্জীবিত করা যাবে এবং যে রোগে তারা মারা গেছেন তারও নিরাময় খুঁজে পাওয়া যাবে।
মৃত্যুর আগে এই কিশোরী আদালতের বিচারকের কাছে চিঠি লিখে জানিয়েছিল, সে আরও বাঁচতে চায় এবং তার দেহ মাটিতে কবর দেওয়া হোক সেটা সে চায় না।
ওই কিশোরী লিখেছে, ‘আমি মনে করি আমার দেহ যদি সংরক্ষণ করা হয় তাহলে ভবিষ্যতে আমার অসুখ সারিয়ে আমাকে পুনরুজ্জীবিত করা যাবে, বহু শত বছর পরে হলেও।’ তবে মেয়েটির শেষ ইচ্ছে নিয়ে বিরোধ দেখা দিয়েছিল তার বাবা-মায়ের মধ্যে। মেয়েটির মা তার এই সিদ্ধান্ত সমর্থন করলেও তার বাবা ছিলেন এর বিপক্ষে। তাই শেষ পর্যন্ত বিষয়টি আদালতে গড়ায়।
বিচারক মেয়েটির পক্ষে রায় দিয়ে বলেন, তাদের এই সিদ্ধান্ত 'ক্রায়োনিক্স’ এর পক্ষে বা বিপক্ষে নয়। মেয়েটির মৃতদেহ নিয়ে কী করা হবে, সেটা নিয়ে বাবা-মায়ের মধ্যে যে বিরোধ দেখা দিয়েছে, সেটারই মীমাংসা করেছেন তারা।
মৃত্যুর আগেই মেয়েটি আদালতের এই রায় জেনেছিল। এই মামলায় তার মায়ের পক্ষের আইনজীবী জানিয়েছেন, আদালতের রায় শুনে মেয়েটি খুশি হয়েছিল।
ক্রায়োনিক্স এক বিতর্কিত বিষয়। এখনো পর্যন্ত কেউ নিশ্চিত নন, আসলেই এভাবে সংরক্ষণ করা দেহ কোনওদিন পুনরুজ্জীবিত করা যাবে কীনা। তবে যুক্তরাষ্ট্র এবং রাশিয়ায় এই পদ্ধতিতে বহু মানুষের মৃতদেহ সংরক্ষণ করা হয়। তরলায়িত নাইট্রোজেনে হিমাংকের ১৩০ ডিগ্রির নিচের তাপমাত্রায় এসব দেহ হিমায়িত করে রাখা হয়। একটি দেহ এভাবে অসীম সময় পর্যন্ত রেখে দিতে খরচ হয় ৩৭ হাজার ডলারের কাছাকাছি। সূত্র: বিবিসি বাংলা।
/এমপি/