ভূমিকম্পের পর জাপানে সুনামির আঘাত, পারমাণবিক চুল্লি ক্ষতিগ্রস্ত

nonameপূর্ব এশিয়ান দ্বীপরাষ্ট্র জাপানে শক্তিশালী ভূমিকম্প এবং পরবর্তী দুই আফটার শকের পর এর উপকূলে সুনামি আঘাত হেনেছে।  জাপান মেট্রোলজিক্যাল এজেন্সির বরাত দিয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন উপকূলে সুনামির আঘাতের খবর নিশ্চিত করেছে।  এ ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

এদিকে  ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম টেলিগ্রাফ জাপানের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার সংস্থার বরাত দিয়ে সেন্দাইয়ে ১.৪ মিটার উচ্চতার সুনামি শনাক্তের কথা জানিয়েছে।  ফুকুশিমার পারমাণবিক চুল্লিতেও পড়েছে ভূমিকম্প ও সুনামির প্রভাব। তবে ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে জানা যায়নি।

প্রথমে রিকটার স্কেলেভুমিকম্পের মাত্রা ৭.৩  বলা হলেও তা পরিবর্তন করেছে জাপান মেট্রোলজিক্যাল এজেন্সি। রিকটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ৭.৪ ছিল বলে জানিয়েছে তারা। এদিকে মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএস ভূমিকম্পের মাত্রা ৬.৯ বলে জানিয়েছে। পর ৫.৮ এবং ৪.৮ মাত্রার ২টি আফটার শক অনুভূত হওয়ার খবর দিয়েছে।

জাপানের মেট্রোলজিক্যাল এজেন্সির বরাত দিয়ে টেলিগ্রাফ বলছে, এরইমধ্যে উপকূলীয় অঞ্চলে সুনামি আঘাত দেখা গেছে।  ফুকুশিমার পারমাণবিক চুল্লির কাছাকাছি প্রথম আঘাতটি ছিল জাপানের স্থানীয় সময় সাল সাড়ে ছয়টার দিকে। সেন্দাইয়ে আঘাত হানা ১.৪ মিটার উচ্চতার সুনামিকেই এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ বলছে জাপানের মেট্রোলজিক্যাল এজেন্সি। জাপানের স্থানীয় সময় সকাল ৮টার দিকে ওই আঘাত অনুভূত হয়।  ইউএসজিএস আভাস দিয়েছে, সুনামির মাত্রা ৩ মিটার পর্যন্ত হতে পারে।

ভূমিকম্পের পরপরই ওই অঞ্চলে সুনামি সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এলাকার বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরে যেতে বলা হয়েছে। সুনামির আঘাতের পর আরও বেড়ে গেছে শঙ্কা।    

এরআগে বার্তা সংস্থা এএফপি ও এপি জানিয়েছে, ভূমিকম্পটির ১০ কিলোমিটার গভীর উৎপত্তিস্থলের কাছাকাছি এলাকায় তিন মিটার বা ১০ ফুটের কাছাকাছি জলোচ্ছ্বাস আঘাত হানতে পারে। ঘটনার পরপরই ফুকুশিমাসহ পূর্ব উপকূলে সুনামির আশঙ্কা করা হচ্ছে। তাই ওই অঞ্চলে সুনামি সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

এর  আগে সর্বশেষ ২০১১ সালে ভয়াবহ সুনামিতে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়ে জাপান। ওই বছরের ১১ মার্চ রিখটার স্কেলে ৯ মাত্রার ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছিল জাপান; উপকূল ছাপিয়ে উঠে আসা সাগর ভাসিয়ে নিয়েছিল পূর্ব জাপানের বেশ কয়েকটি প্রদেশের জীবন আর জনপদ। ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ফুকুশিমার পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের একটি চুল্লি।

ভয়াবহ সেই ধ্বংসযজ্ঞে প্রাণ হারান ১৫ হাজার ৮৯৪ জন। আরও ২ হাজার ৫৬১ জনের কোনো খোঁজ মেলেনি। তেজস্ক্রিয়ায় ভারি হয়ে ওঠে বাতাস, উদ্বাস্তু হয় লাখো মানুষ।

/বিএ/