অভিবাসন ইস্যুতে কঠোর হওয়ার অঙ্গীকার অ্যাঙ্গেলা মার্কেলের

German Chancellor and leader of the conservative Christian Democratic Union party CDU Angela Merkel (C) poses with CDU leaders ahead a CDU party convention in Essen,অভিবাসন ইস্যুতে কঠোর হওয়ার অঙ্গীকার করেছেন জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেল। চ্যান্সেলর পদে চতুর্থ মেয়াদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে রক্ষণশীলদের সমর্থন পেতে এসব কথা বলেছেন বলে  মঙ্গলবার বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।

খবরে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার দেশটির এসেন শহরে অনুষ্ঠিত ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্রেটিক ইউনিয়ন (সিডিইউ) পার্টির কংগ্রেসে দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে মার্কেল বলেন, ‘আমাকে আপনারা সহায়তা করতে হবে। অনেক অভিজ্ঞ কেউও এককভাবে জার্মানি, ইউরোপ বা বিশ্বের জন্য ভালো কোনও পরিবর্তন আনতে পারবেন না। এককভাবে জার্মান চ্যান্সেলরও তা নিশ্চিতভাবেই পারবেন না।’

গত বছর ইউরোপ শরণার্থী সংকটের মুখে পড়লে মার্কেল জার্মানির দরজা শরণার্থীদের জন্য খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নেন। অভ্যন্তরীণভাবে এই নীতির কারণে সমালোচিত হলেও মার্কেল এই নীতি থেকে সরে দাঁড়াননি। অভিবাসনবিরোধী নীতি নিয়ে এর মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে ডানপন্থী অলটারনেটিভ ফর জার্মানি (এএফডি) পার্টি। মার্কেলের জনপ্রিয়তাও কমে যায়। শেষ পর্যন্ত এই নীতি থেকে সরে এলেন মার্কেল।

দলীয় কংগ্রেসে মার্কেল বলেন, গত বছর জার্মানিতে যে পরিমাণ শরণার্থী প্রবেশের সুযোগ পেয়েছে, আগামী বছর সেই পরিমাণ শরণার্থী প্রবেশ করতে পারবেন না। তাছাড়া মুসলিম নারীদের মুখমণ্ডল আবৃত করা পোশাক জার্মান সংস্কৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় বলে তা নিষিদ্ধেরও আহ্বান জানান মার্কেল। তিনি বলেন, ‘আমরা এখানে বলে থাকি, ‘তোমার মুখমণ্ডল দেখাও’। কাজেই সম্পূর্ণ মুখ ঢেকে রাখা নেকাব এখানে উপযুক্ত নয়। যেখানেই সম্ভব এটাকে নিষিদ্ধ করা উচিত।’ অথচ এক বছর আগেও এ ধরনের নিষেধাজ্ঞার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে সিডিইউ।

কংগ্রেসে প্রায় সোয়া এক ঘণ্টা বক্তব্য রাখেন মার্কেল। তাতে বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতিও তুলে ধরেন তিনি। সিরিয়ার আলেপ্পোতে অব্যাহত বোমাবর্ষণকে তিনি ‘লজ্জাজনক’ বলে অভিহিত করেন। ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বৃটেনের বেরিয়ে যাওয়া ‘সহজ কাজ’ হবে না বলেও মন্তব্য করেন মার্কেল। অনেকেই মনে করছেন যে বর্তমান বিশ্ব ‘বিপথে চালিত হচ্ছে।’। বিষয়টি স্বীকার করে নিয়ে মার্কেল বলেন, ‘বিশেষ করে মার্কিন নির্বাচনের পর আমরা এমন একটি বিশ্বের মুখোমুখি হয়েছি যাকে ন্যাটো ও রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ককে মাথায় রেখেই নতুন করে সাজাতে হবে।’ ২০১৭ সালের নির্বাচনকে দুই জার্মানি একীভূত হওয়ার পরের সময়ের সবচেয়ে কঠিন নির্বাচন বলে মন্তব্য করেন মার্কেল।

১৬ বছর আগে এই শহরেই সিডিইউ পার্টির নেতা নির্বাচিত হয়েছিলেন অ্যাঙ্গেলা মার্কেল। ওই শহরেই দলের কংগ্রেসে অনিশ্চয়তাপূর্ণ বিশ্বে নিজেকে স্থিতিশীলতার নিশ্চায়ক হিসেবে উপস্থাপন করেছেন মার্কেল।  মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত কংগ্রেসে আরও একবারের মতো সিডিইউ পার্টির প্রধান নির্বাচিত হন মার্কেল। এর আগে নভেম্বর মাসে মার্কেল জানিয়েছিলেন, চতুর্থ মেয়াদের জন্য তিনি চ্যান্সেলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। এর আগে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে কেবল কনরাড অ্যাডেনয়ের এবং হেলমুট কোহলই চার মেয়াদে চ্যান্সেলরের দায়িত্ব পালন করেছেন।

/টিআর/এমএনএইচ/