পুলিশি হেফাজতে মৃত্যু ঠেকাতে পারছে না ভারত: এইচআরডব্লিউ

ভারতীয় পুলিশ২০১০ সাল থেকে ২০১৫ সালের মাঝামাঝি সময়ে ভারতে পুলিশি হেফাজতে প্রায় ৬০০ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। অথচ এখন পর্যন্ত একজন কারাবন্দির মৃত্যুর জন্যও কোনও পুলিশ সদস্যকে অভিযুক্ত করা হয়নি। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) এর নতুন প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।

সাধারণত অসুস্থতা, পালানোর চেষ্টা, আত্মহত্যা এবং বিভিন্ন দুর্ঘটনাকে বন্দিমৃত্যুর কারণ হিসেবে দেখিয়ে থাকে ভারতীয় পুলিশ। অন্যদিকে মানবাধিকার সংগঠনগুলো দাবি করে থাকে, পুলিশি হেফাজতে রেখে নির্যাতনের কারণেই বেশিরভাগ বন্দির মৃত্যু হচ্ছে।

এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার (১৯ ডিসেম্বর) এইচআরডব্লিউ ১১৪ পৃষ্ঠার একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। গ্রেফতারের নিয়ম-কানুনের প্রতি পুলিশের অসম্মান প্রদর্শন, হেফাজতে রেখে নির্যাতন এবং দোষীদের দায়মুক্তি দেওয়ার মতো বিষয়গুলোকে ওই প্রতিবেদনে পর্যালোচনা করা হয়েছে। ২০০৯ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে পুলিশি হেফাজতে মৃত্যু হয়েছে এমন ১৭টি ঘটনার ওপর গভীরতর অনুসন্ধান ঘটনার শিকার হওয়াদের ৭০ জনেরও বেশি স্বজন, সাক্ষী, বিচারসংক্রান্ত বিশেষজ্ঞ এবং পুলিশ কর্মকর্তাদের সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে।  

এইচআরডব্লিউ’র প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৭টি মামলার কোনওটিতেই পুলিশ সঠিক গ্রেফতারি পদ্ধতি অনুসরন করেনি। আর তাতে সন্দেহভাজনদের ওপর নির্যাতন করাটা সহজ হয়ে পড়েছে।

দক্ষিণ এশিয়ার হিউম্যান রাইট ওয়াচের পরিচালক মীনাক্ষী গাঙ্গুলি বলেন , ‘সন্দেহভাজনকে পিটিয়ে তার মুখ থেকে স্বীকারোক্তি আদায় করার কাজটি যে অগ্রহণযোগ্য তা ভারতীয় পুলিশ উপলব্ধি করতে পারবে যখন তাদেরকে বিচারের মুখোমুখি করা হবে।’

আইন অনুযায়ী, পুলিশ হেফাজতে নেওয়া প্রতিটি মানুষকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মেডিক্যাল পরীক্ষা করানো এবং ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে হাজির করতে হবে। সরকারি তথ্যের বরাত দিয়ে  হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলছে, ২০১৫ সালে পুলিশি হেফাজতে মৃত্যু হওয়া ৯৭ জনের মধ্যে ৬৭ জনের ক্ষেত্রে হয় পুলিশ সন্দেহভাজনকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে হাজির করতে ব্যর্থ হয়েছে অথবা গ্রেফতারের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই সন্দেহভাজনের মৃত্যু হয়েছে।  

/টিএম/এফইউ/