বার্লিনে লরি হামলার পর বড়দিনে সর্বোচ্চ সতর্কতায় ইউরোপ

জার্মানিতে লরি হামলার পর সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে ইউরোপজার্মানির বার্লিনে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলার পর বড় দিন উদযাপনের সময় যেকোনও ধরনের জঙ্গি হামলা ঠেকাতে সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় রয়েছে ইউরোপ। ইতালি, জার্মানি, ফ্রান্স ও ব্রিটেনসহ বিভিন্ন দেশে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, বার্লিনে লরি হামলার ঘটনায় সন্দেহভাজন আনিস আমরিকে পুলিশ শনিবার মিলানের কাছের একটি শহরে হত্যা করার পর ইতালি ও ভ্যাটিকানে জঙ্গি হামলার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এইসব এলাকায় নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। ইউরোপের অন্য শহরগুলোও সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। অতীতে জঙ্গি হামলার শিকার হওয়া দেশ ফ্রান্স, ব্রিটেন ও জার্মানির পর্যটন এলাকা ও অন্য ঘনবসতির এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।  

বার্লিন হামলার ঘটনায় সন্দেহভাজন আনিস আমরি তিউনিসীয় নাগরিক। পুলিশের দাবি, শুক্রবার রুটিন চেকের সময় আনিস পুলিশের দিকে গুলি তাক করলে তাকে হত্যা করে পুলিশ। এই প্রেক্ষাপটে জঙ্গি হামলার আশঙ্কায় সতর্কতা বাড়ানো হয়েছে। কোনও ভ্যান কিংবা ট্রাকের শহরের প্রাণকেন্দ্রে প্রবেশের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে রোম কর্তৃপক্ষ। সন্ত্রাসবিরোধী পুলিশ মাস্ক লাগিয়ে এব মেশিন গান নিয়ে পর্যটন এলাকাগুলোতে পাহারায় রয়েছে। বড় দিন উদযাপনকে কেন্দ্র করে ব্যাটিকানে প্রতি ১০০ মিটার পর পর রাস্তার পাশে সামরিক জিপ মোতায়েন করা হয়। মিলানের প্রাণকেন্দ্রে এবং ইতালির অন্য শহরগুলোতে বিশেষ করে বড় বড় গীর্জাগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

ফ্রান্সের প্যারিসে গত বছরের নভেম্বরে বন্দুকধারীর হামলা ও বোমা হামলায় ১৩০ জন নিহত হয়েছিল। বড়দিন উদযাপনকে কেন্দ্র করে এ দেশটিও সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে। কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, ৯১ হাজারেরও বেশি পুলিশ ও সেনা সদস্য মোতায়েন করছে কর্তৃপক্ষ। এছাড়া গীর্জাগুলোতে অতিরিক্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্যারিস হামলার পর থেকেই দেশটিতে জরুরি অবস্থা বজায় রয়েছে এবং ফরাসি সেনারা রাস্তায় সতর্ক অবস্থায় রয়েছে। নিরাপত্তার জন্য হুমকি তৈরিকারী সন্দেহভাজনদের ধরতে পুলিশকে অতিরিক্ত তল্লাশি ও গ্রেফতারি ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।

ভ্যাটিকানে পুলিশের টহল গাড়ি
জার্মানির বিমানবন্দর ও রেল স্টেশনে সশস্ত্র টহল জোরালো করেছে ফেডারেল পুলিশ। ইন্টারন্যাশনাল ফ্রন্টিয়ারের ৩০ কিলোমিটারের করিডোর দিয়ে যারা জার্মানিতে প্রবেশ করছে তাদের তল্লাশি করা হচ্ছে। জার্মান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী থমাস দে মাইজিয়েরে বলেন, ‘বার্লিনের সন্দেহভাজন হামলাকারী নিহত হওয়ার পর প্রচণ্ডরকমের হামলার ঝুঁকিতে রয়েছে জার্মানি।’

ব্রিটেনও দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পর্যায়ের হুমকিতে রয়েছে। অর্থাৎ দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পর্যায়ের ঝুঁকির মানে হলো এখানে জঙ্গি হামলার সম্ভাবনা অনেক বেশি। আর সে ঝুঁকির কথা মাথায় রেখে রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের লন্ডনের বাসভবন বাকিংহাম প্যালেসসহ বেশ কিছু পর্যটন এলাকায় নিরাপত্তা বাড়িয়ে পুলিশ। নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মকর্তারা বড় বড় শপিং সেন্টার, ক্রিসমাস মার্কেট ও উপসনালয়গুলোতে টহল দিচ্ছেন।

/এফইউ/