ট্রাম্পের টুইটে টিকে গেল কংগ্রেসের আচরণ পর্যবেক্ষণকারী কর্তৃপক্ষ!

বব গুডলেট ও ডোনাল্ড ট্রাম্পমার্কিন কংগ্রেস সদস্যদের আচরণ পর্যবেক্ষণকারী নির্দলীয় কর্তৃপক্ষের (কংগ্রেসনাল এথিক্স) ক্ষমতা সীমিত করার প্রস্তাবটি পাশ হয়নি। রিপাবলিকান নিয়ন্ত্রিত হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভ (প্রতিনিধি পরিষদ) সদস্যরা সোমবার ওই প্রস্তাবে একমত পোষণ করার কথা জানালেও শেষ পর্যন্ত বেশিরভাগ সদস্য প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দেন। একে ট্রাম্পের জয় বলেই মনে করা হচ্ছে। কারণ ট্রাম্প ওই প্রস্তাবের বিপক্ষে একাধিক টুইট করেছেন।  

উল্লেখ্য, কংগ্রেস সদস্যদের বেশ কয়েকটি দুর্নীতিজনিত কেলেঙ্কারির ঘটনার প্রেক্ষাপটে ২০০৮ সালে এথিকস অফিস গঠন করা হয়। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বেশ কয়েকজন আইনপ্রণেতাকে অভিযুক্তও করা হয়।

এথিকস কর্তৃপক্ষ জনসমক্ষে তাদের প্রতিবেদন প্রকাশ করতে পারে। তবে তাদের ক্ষমতা কমানোর প্রস্তাব পাশ হলে ওই প্রতিবেদন প্রতিনিধি পরিষদের অনুমতি সাপেক্ষে জনসমক্ষে প্রকাশ করতে হতো। কারণ ওই প্রস্তাবে, কংগ্রেসনাল এথিকসের দফতরকে প্রতিনিধি পরিষদের এথিকস কমিটির আওতায় নিয়ে আসার সুপারিশ ছিল।  

সোমবার রুদ্ধদ্বার বৈঠকের পর প্রতিনিধি পরিষদের রিপাবলিকান সদস্যদের মধ্যে ওই প্রস্তাবের বিষয়ে সমঝোতা হয়। প্রথমে ওই প্রস্তাব সমর্থন না করলেও পরে হাউসের স্পিকার পল রায়ানও তাতে সমর্থন দেন।  

ওই প্রস্তাব উত্থাপনকারী রিপাবলিকান সদস্য বব গুডলেট জানান, ‘প্রস্তাবটি অনুমোদন পাওয়ার পর এথিকস কর্তৃপক্ষকে তাদের প্রতিবেদন আইন প্রণেতাদের সরবরাহ করতে হবে, যা আগে প্রকাশ্যে উপস্থাপন করা হতো। এছাড়া দফতরটির নাম পাল্টে কংগ্রেসনাল কমপ্লেইন্ট রিভিউ করা হবে।’ গুডলেট আরও দাবি করেন, ‘এ সংশোধনীর কারণে অফিস অব কংগ্রেসনাল এথিকস-এর কাজ বাধাগ্রস্ত হবে না।’

রিপাবলিকানদের এমন সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন হাউস ডেমোক্র্যাটিক নেতা ন্যান্সি পেলোসি। হাউস স্পিকার থাকাকালীন তিনিই এথিকস অফিস গড়ে তুলেছিলেন। তার অভিযোগ, নিজেদের আচরণ পর্যবেক্ষণকারী একমাত্র স্বাধীন কর্তৃপক্ষকেও বিলুপ্ত করছে রিপাবলিকানরা।’ 

এক বিবৃতিতে পেলোসি বলেন, ‘এটা প্রমাণিত যে নতুন রিপাবলিকান কংগ্রেসের প্রথম বলি নীতি-নৈতিকতা।’

রিপাবলিকান নেতৃত্ব ওই প্রস্তাবে সমর্থন দিলেও তার বিরুদ্ধে অবস্থান নেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি এক টুইট বার্তায় বলেন, ‘স্বাধীন কংগ্রেসনাল কর্তৃপক্ষকে দুর্বল করাটা সঠিক নয়।’

অপর টুইট বার্তায় ট্রাম্প বলেন, ‘কর সংস্কার, স্বাস্থ্য সুরক্ষা এবং এমন অনেক কাজ রয়েছে, যা এর থেকেও গুরুত্বপূর্ণ।’

এই প্রস্তাব পাশ না হওয়াকে প্রতিনিধি পরিষদের রিপাবলিকান নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ট্রাম্পের জয় বলেই মনে করা হচ্ছে। বিভিন্ন ইস্যুতে ট্রাম্পের অন্যতম প্রধান সমালোচক পল রায়ানও ওই প্রস্তাবে সমর্থন দিয়েছিলেন। কিন্তু তার সমর্থনও কাজে আসেনি। বরং ট্রাম্পের টুইট বার্তার পর প্রতিনিধি পরিষদে তার সমর্থন বৃদ্ধির বিষয়টিই স্পষ্ট হয়েছে। উল্লেখ্য, ট্রাম্পের নির্বাচনি প্রচারণার অন্যতম দাবি ছিল, রাজনীতিবিদ ও কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে দুর্নীতি দূর করা।

সূত্র: বিবিসি, রয়টার্স।

/এসএ/