রাফসানজানি’র জানাজায় মানুষের ঢল

আলী আকবর হাশেমি রাফসানজানি’র জানাজাতেহরান ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত হয়েছে ইরানের সাবেক প্রেসিডেন্ট আলী আকবর হাশেমি রাফসানজানি’র জানাজা। এতে ইমামতি করেছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী। জানাজায় যোগ দিতে তেহরান ইউনিভার্সিটি প্রাঙ্গনে মানুষের ঢল নামে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা’র খবরে বলা হয়েছে, প্রিয় নেতাকে শেষ বিদায় জানাতে মঙ্গলবার সেখানে উপস্থিত হন প্রায় ১০ হাজার মানুষ।

স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশ নেন প্রেসিডেন্ট ড. হাসান রুহানি, মন্ত্রিপরিষদের সদস্য ও সরকারের বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তা, নীতি নির্ধারণী পরিষদের সদস্যরা, পার্লামেন্টের স্পিকার ড. আলী লারিজানি, গুরুত্বপূর্ণ পার্লামেন্টারিয়ানসহ শীর্ষ পর্যায়ের সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তারা।

জানাযা শেষে ইরানের ইসলামি বিপ্লবের নেতা মরহুম ইমাম খোমেনীর মাজার প্রাঙ্গনে তাকে দাফনের কথা রয়েছে।

গত রবিবার সকালের দিকে রাফসানজানি বুকে ব্যথা অনুভব করলে তাকে তেহরানের শোহাদা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওই দিনই সন্ধ্যার দিকে তিনি ইন্তেকাল করেন। এ সময় তার বয়স হয়েছিল ৮২ বছর। ১৯৮৯ থেকে ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত তিনি টানা দুই দফায় ইরানের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ইসলামি বিপ্লবের সময় তিনি ছিলেন অন্যতম প্রধান নেতা এবং মরহুম ইমাম খোমেনীর ঘনিষ্ঠ সহযোগী।

মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ইরানের গুরুত্বপূর্ণ একপেডিয়েন্সি কাউন্সিলের (পার্লামেন্ট ও গার্ডিয়ান কাউন্সিলের বিরোধ মীমাংসার ক্ষমতাপ্রাপ্ত) প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন রাফসানজানি। দায়িত্ব পালন করছিলেন ‘অ্যাসেম্বলি অব এক্সপার্ট’-এর সদস্য হিসেবেও। ‘অ্যাসেম্বলি অব এক্সপার্ট’ ইরানের সর্বোচ্চ নেতা নির্বাচন করে থাকে; যিনি দেশটির সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর ব্যক্তি হন।

১৯৮০-এর দশক থেকেই ইরানের রাজনীতিতে অন্যতম ব্যক্তিত্ব ছিলেন রাফসানজানি। ১৯৮৯ সাল থেকে ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত তিনি ইরানের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরে ২০০৫ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে মাহমুদ আহমাদিনেজাদের কাছে হেরে যান। ২০১৩ সালেও প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চেয়েছিলেন রাফসানজানি। কিন্তু তাকে প্রার্থী হিসেবে অযোগ্য ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ।

রাফসানজানিকে ইরানে ১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবের ‘অন্যতম খুঁটি’ হিসেবে বিবেচনা করা হলেও তিনি ‘বাস্তববাদী রক্ষণশীল’ হিসেবে পরিচিত ছিলেন। পশ্চিমাদের সঙ্গে ইরানের সম্পর্ক স্থাপন ও তা এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

/এমপি/