মূলত নারীদের আয়োজনে এ বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হলেও এ ‘নারী পদযাত্রা’র প্রতি সংহতি জানিয়ে বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন পুরুষরাও। ফলে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে নারীদের পদযাত্রা রূপ নিয়েছে গণবিক্ষোভে। ফলে বিবিসি, আল জাজিরা, সিএনএন, দ্য গার্ডিয়ানের মতো বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর চোখ এখন ওয়াশিংটনের রাজপথে।
এদিকে ওয়াশিংটনের বাইরে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য শহরগুলোতেও অনুষ্ঠিত হচ্ছে ব্যাপক বিক্ষোভ। নিউ ইয়র্কে বড় ধরনের জমায়েত করেছেন বিক্ষোভকারীরা। যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে লন্ডন, সিডনি, টোকিও, বার্লিন, ডাবলিন, দিল্লি’র মতো বিশ্বের বড় বড় শহরগুলোতে ট্রাম্পবিরোধী বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন লাখ লাখ নারী।
বিশ্বের সাতটি মহাদেশেই এ বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বিক্ষোভের কারণ হিসেবে আয়োজকরা মূলত ট্রাম্পের বিরুদ্ধে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক যৌন নিপীড়নের অভিযোগ তথা নারীর প্রতি তার সহিংস দৃষ্টিভঙ্গির কথা উল্লেখ করেছেন। নারীর প্রতি কেবল সহিংস দৃষ্টিভঙ্গিই নয়, সরাসরি ধর্ষণের অভিযোগও রয়েছে বিতর্কিত এই মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে।
শুরুতে নিউ ইয়র্কে এই সমাবেশ আয়োজনের কথা ছিল। কিন্তু পরে এ দাবিতে দুনিয়ার নানা প্রান্ত থেকে সংহতির সুর ভেসে এলে এই আয়োজন বিশ্বব্যাপী করার সিদ্ধান্ত হয়।
বাল্টিমোর থেকে বাসযোগে ২৮ জন বন্ধুকে নিয়ে ওয়াশিংটনের ট্রাম্পবিরোধী নারী পদযাত্রায় অংশ নেন ৪১ বছরের লেক্সি মিলানি। তিনি বলেন, ‘আমাদের অধিকারের প্রতি সম্মান দেখানোটা গুরুত্বপূর্ণ। মানুষ অধিকারের জন্য লড়াই করছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এটা পরিষ্কার করেছেন যে, তাদের প্রতি তার কোনও সম্মান নেই।’
বন্ধুদের নিয়ে ক্যালিফোর্নিয়া থেকে এ নারী পদযাত্রায় অংশ নিয়েছেন ৫৯ বছরের এলিজাবেথ নিউটন। এতে তার খরচ হয়েছে ১০৬ ডলার। শুক্রবার রাতভর বাল্টিমোরে অবস্থান করেন এলিজাবেথ নিউটন। তিনি বলেন, এটা অভূতপূর্ব।
২১ জানুয়ারি ২০১৭ শনিবার ওয়াশিংটনের বিক্ষোভে যারা অংশ নিয়েছেন তাদের একটা বড় অংশের চোখেই ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের অবৈধ প্রেসিডেন্ট। কারণ তিনি সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের রায়ে নির্বাচিত হননি। প্রতিদ্বন্দ্বী হিলারি ক্লিনটনের চেয়ে ৩০ লাখ ভোট কম পেয়েও ইলেকটোরাল কলেজ ব্যবস্থার কারণে তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। ফলে ট্রাম্পের এ বিজয়কে সহজে মেনে নিতে পারেননি নারী অধিকারকর্মী, মুসলিম, অভিবাসী ও বিশেষ করে মেক্সিকো থেকে আসা অভিবাসীরা। নির্বাচনি প্রতিশ্রুতিতে ট্রাম্প শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যের ধারণা দিয়েছেন, বিভিন্ন গোষ্ঠীকে আক্রমণ করে বক্তব্য দিয়েছেন। সংগত কারণেই হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পকে দেখতে রাজি নন তারা। আর তারই প্রতিফলন দেখা গেছে শনিবার যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে বিশেষ করে রাজধানী ওয়াশিংটনে ট্রাম্পবিরোধী লাখো মানুষের সমাবেশে। আর এই সমাবেশের প্রতি সংহতি জানিয়েছেন দুনিয়ার নানা প্রান্তের মানুষেরা। সূত্র: রয়টার্স, দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট।
/এমপি/