পশ্চিমতীরে ইসরায়েলি বসতি সম্প্রসারণে বিতর্কিত বিল পাস

ইসরায়েলি বসতিদখলকৃত পশ্চিম তীরে স্থাপিত ইসরায়েলি বসতি সম্প্রসারণকে বৈধতা দিয়ে একটি বিতর্কিত বিল পাস করেছে ইসরায়েলি পার্লামেন্ট। এ আইনের আওতায় পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের ব্যক্তি মালিকানার জমিতে ইসরায়েলি বসতিস্থাপনকারীদের চার হাজার বাড়িঘর তৈরিকে বৈধতা দেওয়া হবে। ক্ষতিপূরণ হিসেবে ফিলিস্তিনি জমির মালিকদের অর্থ কিংবা বিকল্প জমি দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এদিকে বিতর্কিত এ বিলটি পাসের নিন্দা জানিয়েছে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, সরকারের এক শীর্ষ আইনজীবীর সতর্কতা উপেক্ষা করেই সোমবার বিলটি পাস হয়। বিলটিকে অসাংবিধানিক বলে উল্লেখ করেছিলেন ওই আইনজীবী। তবে তাতে সায় না দিয়ে সোমবার পার্লামেন্টের ৬০ সদস্যের মধ্যে ৫২ জন বিলটিতে 'হ্যাঁ' ভোট দেন।

বিলটি পাসের পরই এর নিন্দা জানিয়েছে প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশন (পিএলও)।তাদের অভিযোগ এই আইন পাসের মাধ্যমে ইসরায়েলিরা তাদের জমি চুরিকে বৈধ করলো। এ ধরনের পদক্ষেপ দুই দেশের মধ্যে কোনও রাজনৈতিক ফয়সালার পথকে রুদ্ধ করে দেবে বলেও সতর্ক করেছে তারা।।

ফিলিস্তিনের পশ্চিমতীরে ইসরায়েলি বসতি স্থাপন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অবস্থান তার পূর্বসূরি বারাক ওবামার তুলনায় অনেকটাই নরম। আর এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ফিলিস্তিনে বসতি স্থাপনের বিষয়ে আন্তর্জাতিক নিন্দা ও চাপকেও উপেক্ষা করছে ইসরায়েল। ট্রাম্প প্রশাসনের হাতে ক্ষমতা যাওয়ার পর গত কয়েক সপ্তাহে বেশ কয়েকটি বসতিতে নতুন করে ঘর-বাড়ি নির্মাণের প্রস্তাব অনুমোদন করেছে ইসরায়েল।

উল্লেখ্য, ১৯৯০ এর দশকের শুরু থেকে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে বেশ কয়েক দফায় শান্তি আলোচনা হয়েছে। ফিলিস্তিনিরা চায় পশ্চিম তীরে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে এবং পূর্ব জেরুজালেমকে এর রাজধানী বানাতে। ১৯৬৭ সালের আরব যুদ্ধের পর থেকে ইসরায়েল পূর্ব জেরুজালেম দখল করে রেখেছে। পূর্ব জেরুজালেমকে নিজেদের অবিভাজ্য রাজধানী বলে দাবি করে থাকে ইসরায়েল। অবশ্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় পূর্ব জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি। ১৯৬৭ সালের পর পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমে ১শরও বেশি বসতি স্থাপন করেছে ইসরায়েল। পশ্চিম তীর এবং পূর্ব জেরুজালেমে স্থাপিত প্রায় ১৪০টি বসতিতে ৬ লাখেরও ইসরায়েলি বসবাস করে। আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় এ বসতি স্থাপনকে অবৈধ বলে বিবেচনা করা হলেও ইসরায়েল তা মানতে চায় না। 

/এফইউ/