গুরুতর আহত ফিলিস্তিনিকে হত্যার দায়ে ইসরায়েলি সেনার কারাদণ্ড

ইলোর আজারিয়াগুরুতর আহত এক ফিলিস্তিনি তরুণকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় এক ইসরায়েলি সেনাকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। দণ্ডপ্রাপ্ত ওই ইসরায়েলি সেনার নাম ইলোর আজারিয়া। মঙ্গলবার ইসরায়েলের আদালত তাকে ১৮ মাসের কারাদণ্ড প্রদান করে।

তার বিরুদ্ধে চার্জশিটে লেখা ছিল, ‘সন্ত্রাসী ... মাটিতে পড়েছিলেন, তিনি তখনও জীবিত এবং আশেপাশের মানুষ ও সেনাদের জন্য কোনও রকম হুমকির কারণ ছিলেন না।’

এদিকে ইলোর আজারিয়া’র এ দণ্ডের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা দফতরের বাইরে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন দেশটির উগ্রপন্থীরা। অন্যদিকে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, ইলোর আজারিয়াকে ক্ষমা করার যে কোনও সিদ্ধান্ত তিনি সমর্থন করবেন।

ইলোর আজারিয়া’র হাতে নিহত ফিলিস্তিনি নাম ফাতাহ আল-শরিফ (২১)। ইলোর আজারিয়া’র দাবি, ওই তরুণ ইসরায়েলের দখলকৃত পশ্চিম তীরের হেবরনে ছুরি হাতে হামলা চালানোর চেষ্টা করেছিল। এ সময় সেনাদের গুলিতে গুরুতর আহত হয়ে অসাড় অবস্থায় রাস্তায় পড়েছিলেন ফাতাহ আল-শরিফ। এর কিছুক্ষণ পর মাথায়  গুলি করে তাকে হত্যা করেন ২০ বছরের সার্জেন্ট ইলোর আজারিয়া।

২০১৬ সালের মার্চে এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়। হত্যাকাণ্ড চালানোর সময় ইলোর আজারিয়া বলেন, সে আমার বন্ধুকে ছুরিকাঘাতে হত্যার চেষ্টা করেছে। মৃত্যু তার পাওনা।

সামরিক প্রধানদের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা এর নিন্দা করলেও অন্যরা তার এ কাজের ব্যাপক প্রশংসা করেন।

ইসরায়েলে ওই সেনার বিচার নিয়ে বিভক্ত মত পাওয়া গেছে। উগ্রপন্থীরা ওই ফিলিস্তিনি তরুণকে হত্যা করাকে ন্যায্যতা দিচ্ছে। অপরদিকে, অনেকে তাকে বিচারের মুখোমুখি করাকে স্বাগত জানাচ্ছেন।

ফিলিস্তিনি ও ইসরায়েলি মানবাধিকার কর্মীরা জানিয়েছেন, গত বছর জুড়ে ইসরায়েলি বাহিনীর বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনিরা ছুরি দিয়ে আঘাত করার বহু ঘটনা সামনে আসে। কিন্তু এসব ঘটনায় যে ফিলিস্তিনিদের ওপর অত্যধিক বল প্রয়োগ করা হয় এবং ফিলিস্তিনিদের বিচারবহির্ভুত হত্যা করা হয়, এই ঘটনা তারই প্রমাণ।

এক গবেষণায় দেখা যায়, ইসরায়েলিরা মনে করেন, হামলাকারীকে গুলি করাটা আইনসম্মত। তবে সামরিক আইনজীবীরা জানিয়েছেন, সার্জেন্ট আজারিয়া আইন ভঙ্গ করে মাটিতে পড়ে থাকা একজন আহত হামলাকারীকে গুলি করে হত্যা করে।

ঘটনার বিবরণে জানা যায়, গত বছরের ২৪ মার্চ শরিফ এবং রমিজ আজিজ আল-কাসরাওই নামক দুই ফিলিস্তিনি যুবক এক ইসরায়েলি সেনাকে ছুরিকাহত করে। পরে ইসরায়েলি বাহিনী গুলি চালালে রমিজ আল-কাসরাওই নিহত হন এবং শরিফ গুরুতর আহত হন। ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, মাটিতে পড়ে গেলেও শরিফ তখনও বেঁচে ছিলেন। পরে সার্জেন্ট আজারিয়া তার মাথায় গুলি করে হত্যা করেন। সূত্র: বিবিসি।

/এমপি/