ট্রাম্পের 'নতুন মুসলিম নিষেধাজ্ঞা'ও চ্যালেঞ্জের মুখে

nonameইরাককে বাদ দিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের জারিকৃত নতুন মুসলিম নিষেধাজ্ঞাও আইনি প্রতিরোধের মুখে পড়তে যাচ্ছে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ইউএস নিউজ এবং কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা খবর দিয়েছে, হাওয়াই অঙ্গরাজ্য এই নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে আদালতে যেতে পারে। চাইতে পারে স্থগিতাদেশ।

৬ মার্চ সাত মুসলিম-প্রধান দেশের নাগরিকদের ওপর স্থগিত হয়ে যাওয়া নিষেধাজ্ঞা সংশোধন করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সোমবার নতুন নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন। আগের নিষেধাজ্ঞার তালিকায় থাকা দেশগুলোর মধ্য থেকে ইরাককে বাদ দিয়ে নতুন নিষেধাজ্ঞায় বাকি ছয়টি দেশকেই রাখা হয়েছে। নিষেধাজ্ঞায় বলা হয়েছে, ইরান, লিবিয়া, সোমালিয়া, সুদান, সিরিয়া ও ইয়েমেনের যেসব নাগরিকদের বৈধ ভিসা নেই, তারা আগামী ৯০দিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে পারবেন না। নিষেধাজ্ঞায় ১২০ দিনের জন্য সব ধরনের মার্কিন শরণার্থী কার্যক্রম বন্ধ রাখার কথা বলা হয়েছে। মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তায় সন্ত্রাসীদের হুমকির মোকাবিলার তৎপরতাকে জোরদার করার কারণ দেখিয়ে এই নিষেধাজ্ঞা জারি করেন ট্রাম্প।

আল জাজিরা এবং ইউএস নিউজের খবরে বলা হয়েছে, তার এ আদেশ অস্থায়ী ভিত্তিতে স্থগিত করার জন্য হাওয়াই রাজ্যের পক্ষ থেকে বুধবার আদালতে আবেদন করার কথা রয়েছে। ওয়াশিংটনের অ্যাটর্নি জেনারেল বব ফার্গুসন বলেন, ‘নতুন নির্বাহী আদেশের কি প্রভাব ওয়াশিংটনে পড়বে সতর্কতার সঙ্গে আমরা তা পর্যালোচনা করছি। এরপর আমরা আমাদের আইনগত পদক্ষেপ চিন্তা করবো।’

অভিবাসন বিষয়ে কাজ করেন এমন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নতুন ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞায়ও মুসলিমদের বিরুদ্ধে বৈষম্য স্পষ্ট। প্রথমবার নিষেধাজ্ঞা দেয়ার পর মুসলিমরা যেসব উদ্বেগের কথা বলেছিলেন, সেসবের কোনও সুরাহা করা হয়নি বলে মনে করছেন তারা।

নিউ ইয়র্কে সেন্টার ফর কনস্টিটিউশনাল রাইটসের অভিবাসন বিষয়ক এটর্নি নূর জাফর বলেন, নতুন নির্বাহী আদেশের মাধ্যমেও যুক্তরাষ্ট্র থেকে মুসলিমদের পৃথক রাখা হয়েছে। ফলে বৈষম্য ও বিদ্বেষের অবসান হয়নি।

নিউ ইয়র্ক ইমিগ্রেশন কোয়ালিশনের পরিচালক ক্যামিলে ম্যাকলার বলেছেন, ‘ট্রাম্পের নতুন নির্বাহী আদেশ হলো মুসলিমদেরকে ‘দরজার’ ওপাশে রাখা।  একইভাবে নিউ ইয়র্কের অ্যাটর্নি জেনারেল এরিক স্নেইডারম্যান বলেছেন, নিষেধাজ্ঞায় হোয়াইট হাউজ কিছু পরিবর্তন এনেছে।  তবে এতে বৈষম্য নিরসন হয়নি।

উল্লেখ্য, ট্রাম্পের নতুন এই নিষেধাজ্ঞায় জাতিসংঘের শরণার্থী পুনর্বাসন কার্যক্রমও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্র্যানডি বলেন, ‘বৈশ্বিক স্থিতিশীলতা পক্ষে এবং একইসঙ্গে মানবতাবাদি কার্যক্রমে যুক্তরাষ্ট্র সবসময়ই উদাহরণ তৈরি করে এসেছে। শরণার্থীদের সুরক্ষায় এটি শক্তিশালী একটি মডেল। বর্তমান সময়ে যখন উদ্বাস্তু ও শরণার্থীদের সংখ্যা যখন রেকর্ড ছাড়িয়েছে, তখন আগের যেকোনও সময়ের তুলনায় মানবিক নেতৃত্ব প্রয়োজন।’ ট্রাম্পের কাছেও শরণার্থী পরিস্থিতি মোকাবিলায় একই ধরনের সহায়তা বজায় রাখার আহ্বান জানান তিনি।

/বিএ/