মসুলের কারাগারে গণকবর খুঁজে পেয়েছে ইরাকি বাহিনী

বুধবার বাদাউশ কারাগার পুনরুদ্ধার করে ইরাকি বাহিনীইরাকের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মসুলের নিকটস্থ বাদাউশ কারাগারে প্রায় ৫০০ জন মানুষের দেহাবশেষসহ একটি গণকবর পাওয়া গেছে। ইরাকি বাহিনীর বরাত দিয়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।

শিয়া নেতৃত্বাধীন হাশদ আল-শাবি বাহিনী জানায়, মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস)-এর গণহত্যার শিকার ব্যক্তিরা বেসামরিক বন্দি ছিলেন।

অভিযোগ রয়েছে, আইএস ২০১৪ সালে মসুল দখল করার পর ছয় শতাধিক বন্দিকে হত্যা করেছে। এদের বেশিরভাগই শিয়া মুসলিম। চলতি সপ্তাহের শুরুর দিকে বাদাউশ কারাগারটি পুনরুদ্ধার করে ইরাকি বাহিনী।

শনিবার আধাসামরিক বাহিনী হাশদ আল-শাবি বলেছে, বিশাল ওই গণকবরে প্রায় ৫০০ জন বেসামরিক বন্দির দেহাবশেষ পাওয়া গেছে। মসুল দখলে নেয়ার পর আইএস জঙ্গিরা তাদের হত্যা করে।

গণকবর খুঁজে পাওয়ার কথা তাৎক্ষণিকভাবে যাচাই বাছাই করা সম্ভব হয়নি। তবে মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচের (এইচআরডব্লিউ) ২০১৪ সালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, আইএসের বন্দুকধারীরা সেসময় শত শত বন্দিকে হত্যা করেছে।

এর আগে গতবছর নভেম্বরে জাতিসংঘ মসুলে গণকবর খুঁজে পাওয়ার কথা জানিয়েছিল।

বুধবার ইরাকি বাহিনীর ৯ম আর্মার্ড ডিভিশন ও মিত্র বাহিনী উত্তর-পশ্চিম মসুলের বাদাউশ গ্রামটি পুনরুদ্ধার করে।

মসুল শহর থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরবর্তী বাদাউশ কারাগারটি থেকে বেঁচে ফেরা ব্যক্তিরা এইচআরডব্লিউ-কে জানান, ২০১৪ সালে বাদাউশ কারাগার দখলের পর আইএস জঙ্গিরা ১৫০০ বন্দিকে হাত-পা বেঁধে লরিতে করে মরুভূমির বিচ্ছিন্ন এলাকায় নিয়ে যায়।

এইচআরডব্লিউ-এর প্রতিবেদন বলা হয়, আইএস জঙ্গিরা সুন্নি ও খ্রিস্টান বন্দিদের থেকে শিয়াদের পৃথক করে। এরপর তাদের নদীর পাড়ে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে শিয়া বন্দিদের মাথায় বা পেছন থেকে গুলি করে হত্যা করা হয়।

উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের জুনে আইএস জঙ্গিরা মসুল নগরী দখল করে নেয়। ইরাকের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই নগরীতে তখন প্রায় ১৫ লাখ মানুষ ছিলেন বলে ধারণা করা হয়। ২০১৬ সালের ১৭ অক্টোবর ভোরে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে আনুষ্ঠানিকভাবে মসুল পুনরুদ্ধার অভিযান শুরুর ঘোষণা দেন ইরাকি প্রধানমন্ত্রী হায়দার আল-আবাদি। এরপর ইরাকি সেনা ও পুলিশ বাহিনী, শিয়া মিলিশিয়া এবং কুর্দি বাহিনী যৌথভাবে মসুল পুনরুদ্ধারের অভিযান শুরু করে।

সূত্র: বিবিসি।

/এসএ/