মিয়ানমারে রোহিঙ্গা নাগরিকত্বের বিরুদ্ধে উগ্র বৌদ্ধদের বিক্ষোভ

ক্ষুব্ধ বৌদ্ধ ভিক্ষুরাসংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিম সম্প্রদায়ের কয়েকজনকে নাগরিকত্ব দিতে মিয়ানমার সরকার পরিকল্পনা করার পর রাখাইন রাজ্যে তুমুল বিক্ষোভ হয়েছে। রবিবার (১৯ মার্চ) এ বিক্ষোভ হয়। এদিন সরকারের পরিকল্পনার বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানিয়ে রাস্তায় নেমে আসেন শত শত কট্টরপন্থী বৌদ্ধ। 

রাজ্যের রাজধানী সিত্তেতে বিক্ষোভের নেতৃত্ব দেয় রাখাইনের কর্তৃত্বে থাকা আরাকান ন্যাশনাল পার্টি। ওই এলাকায় একসময় অনেক রোহিঙ্গার বসতি থাকলেও ২০১২ সালে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার পর অনেকে ঘর-বাড়ি ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন।
রোহিঙ্গাবিরোধী বিক্ষোভের আয়োজকদের একজন হলেন অং হোতে। তিনি বলেন, ‘আমরা বিক্ষোভ করে সরকারকে বোঝানোর চেষ্টা করছি যেন সরকার সঠিকভাবে ১৯৮২ সালের নাগরিকত্ব আইন অনুসরণ করে। সরকারকে এসকল অবৈধ অভিবাসীদের নাগরিকত্ব প্রদান করতে আমরা দেব না।’

জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনানের নেতৃত্বাধীন কমিশনের পক্ষ থেকে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব প্রদানের বিষয়টি পুনর্বিবেচনার জন্য মিয়ানমার সরকারকে আহ্বান জানানোর তিন দিন পর রবিবার এ বিক্ষোভ হলো। রোহিঙ্গাদের স্বাধীনভাবে চলাফেরার ওপর যে কড়াকড়ি রয়েছে তাও তুলে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিল ওই কমিশন। রাখাইন অ্যাডভাইজরি কমিশন নামের ওই দলটির সদস্য ঘাসান সালামে গত সপ্তাহে বলেন, ‘আমরা নাগরিকত্বের প্রশ্নটি দেখছি। যারা নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন তারাও যেন নাগরিকত্বের সকল সুযোগ সুবিধা পান সে বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্যও আহ্বান জানাচ্ছি আমরা।’

কমিশনের প্রস্তাবটিকে স্বাগত জানায় মিয়ানমার সরকার।

গত বছর অক্টোবর মাসের ৯ তারিখে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ এলাকায় সন্ত্রাসীদের সমন্বিত হামলায় ৯ পুলিশ সদস্য নিহত হওয়ার পর তার দায় চাপানো হয় রোহিঙ্গাদের ওপর। আর তখন থেকেই শুরু হয় সেনাবাহিনীর দমন প্রক্রিয়া। মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের দাবি, এরপর থেকেই রাখাইন রাজ্যে 'ক্লিয়ারেন্স অপারেশন' চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। রোহিঙ্গা মুসলমানদের ইসলামি চরমপন্থা দমনে কাজ করছেন বলে দাবি করছিলেন তারা। আর চলতি সপ্তাহের বুধবার মিয়ানমারে নবনিযুক্ত জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা থাউং তুনকে উদ্ধৃত করে স্টেট কাউন্সেলর কার্যালয় থেকে  প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়, রাখাইনে পরিস্থিতি বর্তমানে স্থিতিশীল হয়েছে। সেনাবাহিনী কর্তৃক পরিচালিত ‘ক্লিয়ারেন্স অপারেশন’ শেষ হয়েছে। কারফিউ শিথিল করা হয়েছে এবং শান্তি রক্ষার্থে কেবল পুলিশ নিয়োজিত রাখা হয়েছে।

/এফইউ/