লন্ডন হামলার দায় স্বীকার করলো আইএস

06লন্ডনের পার্লামেন্ট ভবনের বাইরে বুধবারের সন্ত্রাসী হামলার পর সোশ্যাল মিডিয়ায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছে জঙ্গিরা। তাদের দাবি, আইএস এর পক্ষ থেকেই এই হামলা চালানো হয়েছে। হামলাকে ইরাক এবং সিরিয়ায় ব্রিটিশ সামরিক বাহিনীর হামলার ‘বদলা’ বলেও দাবি করছে আইএস সমর্থকরা। রাতভর এমন প্রচারণার পর শেষ পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে দায় স্বীকার করেছে আইএস। সাইট ইন্টেলিজেন্স গ্রুপের পরিচালক রিটা কাটর্জ টুইটারে দেওয়া এক পোস্টে জানিয়েছেন, জঙ্গিদের নিজস্ব সংবাদমাধ্যম আমাক নিউজ এজেন্সি’তে এ হামলার দায় স্বীকার করেছে আইএস।

এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টেলিগ্রামের আইএস-সমর্থক চ্যানেলগুলোতে ছুরি হাতে থাকা সন্দেহভাজনের ছবি প্রকাশ করেছে জঙ্গিরা। আইএসের মুখপাত্র আবু মোহাম্মদ এক অডিও বার্তায় ইউরোপীয় সমর্থকদের হামলা চালানোর আহ্বান জানিয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘আপনাদের কাছে যদি বন্দুক বা গুলি না থাকে, তাহলে মার্কিনিদের অথবা তাদের মিত্রদের  পাথর দিয়ে মাথায় আঘাত করে হত্যা করুন কিংবা ছুরি ব্যবহার করুন। কিংবা তাদের উপর গাড়ি চালিয়ে দিন।’

২০১৬ সালে ফ্রান্সের নিসে ও জার্মানির বার্লিনেও এরকম হামলা হয়েছে। গত ১৮ মাস ধরে ব্রিটেনে হামলার হুমকি দিয়ে আসছে আইএস।  ২০১৫ সালের নভেম্বরে প্যারিস হামলার পর এক ভিডিওতে আইএস বলেছিলো তাদের পরবর্তী টার্গেট লন্ডন। সিরিয়া ও ইরাকে ফ্রান্সের পর ব্রিটেনেরই সবচেয়ে বেশি সৈন্য দায়িত্বপালন করছে। হ্যারি সারফো নামে এক জার্মান আইএস সেনা বলেন, যুক্তরাজ্যে হামলার জন্য তাদের জঙ্গি নিয়োগ করতে সমস্যা হচ্ছিল। বর্তমানে সাজা ভোগ করা এই জঙ্গি নিউইয়র্ক টাইমসকে বলেন, ইউরোপের দেশগুলোতে তাদের অবস্থান শক্তিশালী হলেও ব্রিটেন ও জার্মানিতে তাদের আলাদা করে নিয়োগ দিতে হচ্ছিল।

হামলার পরদিন বৃহস্পতিবার হাউস অব কমন্সে দেওয়া বক্তব্যে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে বলেন, হামলাকারী ব্যক্তি একজন ব্রিটিশ নাগরিক। পুলিশ ও গোয়েন্দা বিভাগ তাকে চিনতো এবং কয়েক বছর আগে সহিংস উগ্রপন্থার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে তদন্তও করা হয়েছিল। সে ইসলামি দর্শন দ্বারা অনুপ্রাণিত ছিল।

এমপিদের উদ্দেশে থেরেসা মে বলেন, ‘গতকাল সন্ত্রাসবাদী কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে আমাদের গণতন্ত্রকে নীরব করার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু একটি বার্তা দিতে আজ আমরা স্বাভাবিকভাবে একত্রিত হয়েছি। যেভাবে আমাদের পূর্ববর্তী প্রজন্ম একত্রিত হয়েছিলেন এবং যা পরবর্তী প্রজন্ম বজায় রাখবে। বার্তাটি হলো: আমরা ভীত নই এবং সন্ত্রাসবাদ দিয়ে আমাদেরকে সংকল্প থেকে সরিয়ে আনা যাবে না।’

/এমপি/