২০১৪ সালে গড়ে উঠা ‘আমব্রেলা প্রটেস্ট’ নামের ওই আন্দোলনে হংকংয়ের সংবিধান পরিবর্তনের আহ্বান জানানো হয়েছিল। ক্রমেই দানা বাঁধতে শুরু করে স্বাধিকারের স্বপ্ন, কিভাবে চীনের কর্তৃত্ব-বলয় থেকে বের হয়ে আসা যায়। আন্দোলনের সময় বিশ্বের অন্যতম বাণিজ্যিক রাজধানী হংকং কার্যত অচল হয়ে পড়েছিল। হংকংয়ের রাজনীতি-অর্থনীতিসহ যাবতীয় বিষয়ে চীন ‘মাত্রাতিরিক্ত নাক গলাচ্ছে’ বলে অভিযোগ তুলেছিল আন্দোলনকারীরা। তবে চীন ওই আন্দোলনের স্বীকৃতি দেয়নি।
বিক্ষোভকারীদের নেতা ও সামাজিক বিজ্ঞান বিষয়ের শিক্ষক চান কিন মান অভিযোগ করেন, হংকং পুলিশ তাকে অভিযুক্ত করার ইঙ্গিত দিয়েছে। কিন মান আরও জানান, বেআইনি কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ ও অন্যদের অংশগ্রহণে উসকানি দেওয়াসহ তাকে তিনটি অপরাধে অভিযুক্ত করা হতে পারে বলে জানতে পেরেছেন। কিন মান রয়টার্সকে বলেন, ‘আমি এর জন্য মানসিকভাবে পুরোপুরি প্রস্তুত আছি। কিন্তু আমি হংকং-এর ভবিষ্যত নিয়ে উদ্বিগ্ন।’
তবে ২০১৪ সালের সেইসব অভিযোগ দায়েরের জন্য কর্তৃপক্ষ কেন এতোদিন পর্যন্ত অপেক্ষা করে ছিল তা তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এমনকি এ ব্যাপারে পুলিশের কাছ থেকে জানতে চেয়েও সাড়া পাওয়া যায়নি। তানইয়া চ্যান নামের এক আইনজীবী রয়টার্সকে বলেন, অন্তত ৯ বিক্ষোভকারী পুলিশের কাছ থেকে ফোন পেয়েছেন। তাদেরকে তাদের অভিযোগগুলো সম্পর্কে অবহিত করা হয়েছে।
ইউনিভার্সিটি অব হংকং-এর আইন বিষয়ের অধ্যাপক বেনি তাই রয়টার্সের কাছে দাবি করেছেন, তার সঙ্গেও পুলিশের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয়েছে। ২০১৪ সালের বিক্ষোভের আরেক প্রভাবশালী নেতা নাথান ল রয়টার্সকে জানিয়েছেন, দুই সাবেক ছাত্রনেতার বিরুদ্ধে বেআইনি কর্মকাণ্ড সংঘটন সংক্রান্ত অভিযোগ আনা হয়েছে।
গত ৫০ বছর ধরে চলা চীনের ‘এক দেশ, দুই ব্যবস্থা’ নীতির প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হংকংয়ের সংবিধান। দেশটির প্রধান নির্বাহী নির্বাচনে জনগণের সরাসরি ভোটের ব্যবস্থা নেই। ১ হাজার ২০০ জনের একটি কমিটি এই ভোটাধিকার ভোগ করেন। কমিটিটি বেইজিংপন্থী হওয়ায় সব সময়ই তারা চীনের পছন্দের কাউকে হংকংয়ের প্রধান পদে দেখতে চায়। এবারের নির্বাচনেও চীনপন্থী নেতা ক্যারি লামই নতুন নেতা হয়েছেন। ১ জুলাই তার আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্বগ্রহণের কথা রয়েছে।
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের খবর বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, হংকংবাসীর এমন একটি নতুন নেতৃত্বের প্রত্যাশা ছিল; যারা চীনের বিরুদ্ধে জনসাধারণের জোরালো অবস্থানকে সামনে নিয়ে আসতে পারবে। তবে জনসাধারণের প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। রাজনীতি বিশ্লেষকরা মনে করছেন,‘কেবল বেইজিংয়ের সমর্থনের কারণেই তিনি নির্বাচিত হয়েছেন।’
/এফইউ/বিএ/