টিউলিপের ভাষণের পর ‘জয় বাংলা’ ধ্বনি ব্রিটিশ পার্লামেন্টে

nonameযুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টে বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসের কথা তুলে ধরেছেন ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিক। চলতি সপ্তাহেই পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অব কমন্সের একটি বিশেষ ইভেন্টে তিনি এ নিয়ে কথা বলেন। লন্ডনের হ্যাম্পস্টেড অ্যান্ড কিলবার্ন আসনের এমপি এবং বঙ্গবন্ধুর নাতনি টিউলিপ সিদ্দিকের ওই বক্তব্যের পর ‘জয় বাংলা’ ধ্বনি তুলে স্লোগান দেন বেশ কয়েকজন এমপি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগ্নি টিউলিপ সিদ্দিক বলেন, ‘সন্ত্রাসীরা ইসলাম বা মুসলমানদের প্রতিনিধিত্ব করে না। নিজেদের স্বার্থেই তারা সহিংসতা অবলম্বন করে।’

তিনি বলেন, ‘এর আগে অন্য কোনও ইভেন্টে কখনও একসঙ্গে এত সংখ্যক এমপিকে আমি দেখিনি।’ বাংলাদেশের উন্নতি ও সমৃদ্ধি উদযাপনে এ সময় সেখানে উপস্থিত ৬০ জন এমপি’র মধ্যে অনেকেই ‘জয় বাংলা’ ধ্বনি তুলে স্লোগান দেন। এদের মধ্যে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত অন্য দুই এমপি রুশনারা আলী এবং রূপা হকও ছিলেন।

লন্ডনের বেথনাল গ্রিন অ্যান্ড বো আসনের এমপি এবং বাংলাদেশে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর বাণিজ্য দূত রুশনারা আলী বলেন, ‘একজন ব্রিটিশ নাগরিক হিসেবে আমি গর্বিত। একজন বাংলাদেশি হতে পেরে আমি অবিশ্বাস্য রকমের গর্বিত। যে বিষয়টি আজ আমাদের সবাইকে এখানে একত্রিত করেছে, সেটা হচ্ছে বাংলাদেশের প্রতি ভালোবাসা। বিশাল আত্মত্যাগের বিনিময়ে এই দেশের জন্ম হয়েছে।’

আওয়ামী লীগ আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে রুশনারা আলী আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে যে-ই ক্ষমতায়  থাকুক না কেন, যুক্তরাজ্য তার সঙ্গে কাজ করে। এর কারণ হলো, আমাদের অগ্রাধিকার হচ্ছে বাংলাদেশের উন্নতি ও সমৃদ্ধি। ’

প্রায় একই ভাষায় কথা বলেন লন্ডনের ইলিং সেন্ট্রাল অ্যান্ড অ্যাকটন আসন থেকে নির্বাচিত লেবার পার্টির এমপি রূপা হক। তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ নিয়ে নিজের অনুভূতির কথা জানান। এ সময় তিনি যে ‘গণহত্যা ও লড়াই’-এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটেছে, সেটা কখনও ভুলে না যাওয়ার আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, ‘একটি নবীন দেশ হিসেবে বাংলাদেশ অভাবনীয় উন্নতি করছে। শিগগিরই ব্রিকসে আমরা দুটো ‘বি’ পাবো। ব্রিকসভুক্ত ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে বাংলাদেশের নামও যুক্ত হবে। ’

ব্রেক্সিট ইস্যুতে লিভ ক্যাম্পেইন চলাকালে যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশিদের মালিকানাধীন কারি শিল্পের ওপর নেতিবাচক প্রবণতা তৈরি হওয়া লজ্জাজনক হিসেবে অভিহিত করেন রূপা হক। এ সময় তিনি এ শিল্পের স্বার্থ রক্ষায় লড়াইয়ের অঙ্গীকার করেন।

বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে এ আয়োজনে প্রতিনিধিত্ব করেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। বক্তব্যের শুরুতেই তিনি ২২ মার্চ লন্ডনে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের বাইরে হামলার তীব্র নিন্দা জানান। তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনার সরকার সব ধরনের সহিংসতার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ’

নিজের বক্তব্যে বাংলাদেশের জন্য যুক্তরাজ্যকে ‘খুবই বিশেষ’ একটি দেশ হিসেবে আখ্যায়িত করেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে যুক্তরাজ্যের অবদানের কথা স্মরণ করে তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তুলে ধরেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদানের কথা।

শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘একটি ধর্মনিরপেক্ষ ও প্রগতিশীল বাংলাদেশের জন্য সরকার কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছে। ’

পুরো আয়োজনের সঞ্চালনায় ছিলেন লেবার পার্টি থেকে নির্বাচিত এমপি জিম ফিটজপ্যাট্রিক। যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশি কমিউনিটির নেতৃবৃন্দ এবং রাজনৈতিক নেতারা এতে অংশ নেন। যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার নাজমুল কাউনাইন-ও এতে অংশগ্রহণ করেন।

/এমপি/ এপিএইচ/