বিষাক্ত গ্যাসের হামলায় ২০ স্বজন হারানো ইউসুফের আর্তনাদ (ভিডিও)

 Untitled-1

৪ এপ্রিল, সেই বিভীষিকাময় দিন। ক্ষমতাশালীদের বিষাক্ত গ্যাসে স্ত্রীকে হারিয়েছেন ইউসুফ। হারিয়েছেন জমজ সন্তানদেরও। এখানেই শেষ নয়। সবমিলে পরিবারের ২০ সদস্যকে হারিয়েছেন ইউসুফ। তিনি মনে করেন, আসাদ সরকারই এই হামলা চালিয়েছে। তবে পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় যে মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু হয়েছে, তাকেও ভালো চোখে দেখছেন না তিনি।

আসাদবিরোধী বিদ্রোহীরা এই হামলায় সরকারী বাহিনী ও রাশিয়াকে দুষলেও এই দাবি অস্বীকার করে সিরীয় সেনাসূত্র ও রুশ কর্তৃপক্ষ। হামলায় প্রাণহানির ঘটনায় বুধবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠক হয়। ওই হামলায় সিরিয়ার বিদ্রোহীদের দায়ী করে রাশিয়া। মস্কোর দাবি,বিদ্রোহীরা ওই রাসায়নিক গ্যাস মজুত করে রেখেছিল। সিরীয় বিমান হামলায় সেই গুদাম আক্রান্ত হলে বিস্ফোরণ ঘটে। তবে রাশিয়ার এমন দাবি জোরালোভাবে প্রত্যাখ্যান করে নিরাপত্তা পরিষদের অন্য সদস্য দেশগুলো। তারা আসাদকে থামাতে রাশিয়ার প্রতি আহ্বান জানায়। ইতালিতে অনুষ্ঠিত জি সেভেন বৈঠকে রাশিয়ার ওপর সেই চাপ আরও জোরালো করা হয়েছে। হামলার দিন ইউসুফের পরিবারের অন্তত ২০ জন সহ মোট ৮৬ জন বিষাক্ত গ্যাসে প্রাণ হারিয়েছিলেন।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরাকে ইউসুফ বলেন, ‘এই হামলার জন্য সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদই দায়ী। আমি যতটা সম্ভব মিডিয়ার মাধ্যমে আসাদ সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবো।’

বর্তমানে তুরস্কে অবস্থান করা ইউসুফ বলেন, ‘আমি আমার দেশকে ছাড়বোনা। আমি সিরিয়ায় ফিরে যাবো। ৬ বছর আগে শুরু করা আন্দোলন আরও জোরদার করবো।’

ইউসুফের পরিবারের জীবিত অন্যান্য সদস্যরাও সিরিয়ায় অবস্থান করছেন। এরমধ্যে একজন আলা। তার স্ত্রীসহ তিনি ও তার পরিবারের অনেকেই এই গ্যাস দ্বারা আক্রান্ত হয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমি যখন আমার স্ত্রীকে হাসপাতালে নেই তখন সে গর্ভবতী ছিল। আমরা জানতাম না যে আমাদের সন্তানও গ্যাসে আক্রান্ত। আজ আবার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর তিনি জানতে পারেন তাদের সন্তান মারা গেছেন।’

ইউসুফের মতো অনেক পরিবারই এই যুদ্ধের কারণে শুধু দুঃখভারাক্রান্তই নয়, বরং আতঙ্কিতও। আন্তর্জাতিক অঙ্গন থেকে অনেক আশ্বাস আসার পরও নির্ভার হতে পারছেন না তারা।

রাসায়নিক হামলার জবাবে যুক্তরাষ্ট্রের মিসাইল হামলা নিয়ে জানতে চাওয়া হলে ইউসুফ বলেন, এটা পরিস্থিতির উন্নতি করবে না, বরং আরও খারাপ করবে। কারণ এক কিছুক্ষণ পরেই সেই বিমানঘাটি থেকে অভিযান শুরু করে সিরিয়া এবং মানুষ হত্যা করতে শুরু করে।’

সিরিয়ার এই পরিস্থিতি খুব শিগগিরই ভালো হবে না বলে মনে করেন ইউসুফ।

 

সূত্র: আল-জাজিরা

/এমএইচ/বিএ/