ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয়ে পর্যালোচনার ইঙ্গিত যুক্তরাষ্ট্রের

রেক্স টিলারসন২০১৫ সালের চূড়ান্ত পরমাণু সমঝোতার আওতায় দেওয়া প্রতিশ্রুতি মেনে চলছে ইরান। মঙ্গলবার মার্কিন কংগ্রেসকে এমনটাই জানিয়েছে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। ওই চূড়ান্ত সমঝোতাটি জেসিপিওএ নামে পরিচিত। এর আওতায় ইরানের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা স্থগিতের কথা বলা হয়েছিল। তবে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন বলেছেন, এই নিষেধাজ্ঞা স্থগিত করা হলে তাতে মার্কিন স্বার্থ রক্ষিত হবে কিনা; তা নিয়ে পর্যালোচনা করা হচ্ছে। প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার পল রায়ানের কাছে লেখা চিঠিতে ট্রাম্প প্রশাসনের এমন অবস্থান তুলে ধরেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন।

২০১৫ সালে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, চীন, রাশিয়া, ফ্রান্স ও জার্মানির সঙ্গে এ চুক্তিতে আবদ্ধ হয় ইরান। চুক্তিতে বলা হয়, তেহরান তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি সীমিত করবে। বিনিময়ে দেশটির ওপর থেকে অর্থনৈতিক অবরোধ তুলে নেওয়া হবে। ইরানকে পরমাণু কর্মসূচি থেকে বিরত রাখার জন্য ২০০৬ সাল থেকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অব্যাহত প্রচেষ্টার ধারাবাহিকতায় এ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নির্দেশে জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের নেতৃত্বে ইরানের সঙ্গে পশ্চিমা দেশগুলোর ওই সমঝোতা নিবিড়ভাবে পর্যালোচনা করা হচ্ছে।

ইরানের জেসিপিওএ মেনে চলা সংক্রান্ত সনদ ৯০ দিন পর পর কংগ্রেসকে পাঠানোর বাধ্যবাধকতা রয়েছে হোয়াইট হাউসের।

প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার পল রায়ান’কে লেখা ওই চিঠিতে রেক্স টিলারসন বলেছেন, ইরান ২০১৫ সালের ওই চুক্তি মেনে চললেও সন্ত্রাসবাদের পৃষ্ঠপোষক দেশ হিসেবে তাদের ভূমিকা নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে। বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে তারা এখনও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের পৃষ্ঠপোষকতা করে যাচ্ছে।

চলতি বছরের মার্চে মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের রিপাবলিকান সদস্যদের উদ্দেশে ট্রাম্প বলেন, ইরানের সঙ্গে পরমাণু সমঝোতা একটি ভয়ানক চুক্তি। এর চেয়ে খারাপ চুক্তি আর হতে পারে না।

নির্বাচনি প্রচারণা চলাকালেও ইরানের সঙ্গে স্বাক্ষরিত ওই চুক্তির কঠোর সমালোচনা করেন ট্রাম্প। এমনকি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে এ সমঝোতা ছিঁড়ে ফেলবেন বলেও হুমকি দেন ট্রাম্প। এর জবাবে তখন তেহরান বলেছিল, আমেরিকা এ সমঝোতা ছিঁড়ে ফেললে ইরান তাতে আগুন ধরিয়ে দেবে।

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মাদ জাওয়াদ জারিফ সম্প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, তার দেশের বিজ্ঞানীরা পরমাণু সমঝোতার আগের সময়ের চেয়ে এখন ২০ গুণ বেশি মাত্রায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার প্রযুক্তি রপ্ত করেছে। ফলে এই সমঝোতা কোনও কারণে বাতিল হয়ে গেলে পূর্ণ মাত্রায় পরমাণু কর্মসূচি আবার চালু করবে তেহরান। সূত্র: রয়টার্স।

/এমপি/