২০১৬ সালের ১ নভেম্বর নওয়াজ শরিফ ও তার পরিবারের সদস্যদের বিদেশে অবৈধ বিনিয়োগের অভিযোগ তদন্তে একটি তদন্ত কমিশন গঠন করেছে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। বহুল আলোচিত পানামা পেপারস প্রকাশের পর বিরোধী দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই), জামায়াতে ইসলামিসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ সিদ্ধান্ত দেয় আদালত। সে অনুযায়ী আজ বৃহস্পতিবার এ ব্যাপারে রায় দেবে সুপ্রিম কোর্ট।
২০১৮ সালে পাকিস্তানে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। তার আগে আদালতের পক্ষ থেকে এমন সিদ্ধান্ত এলে সংকটের মুখে পড়বে নওয়াজের দল ক্ষমতাসীন পাকিস্তান মুসলিম লীগ।
নওয়াজ শরিফের কন্যা মারিয়াম নওয়াজ অবশ্য দাবি করেছেন, এই রুলিং নিয়ে তার বাবা উদ্বিগ্ন নন। তবে নওয়াজের দলের মধ্যে এ নিয়ে অস্বস্তি কাজ করছে।
পাকিস্তান মুসলিম লীগের কাউন্সিলর থেকে শুরু করে এমপি পর্যন্ত প্রায় সবাই নওয়াজের ভাগ্য নিয়ে উদ্বিগ্ন। কারণ আদালতে তার দুর্নীতির অভিযোগ থেকে দায়মুক্তি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত নয়। এদের অনেকেই সংবাদমাধ্যমগুলোর কাছে ‘অজানা আতঙ্কের’ কথা বলেছেন। কারণ আদালতের এ সিদ্ধান্ত সম্পর্কে আগাম অনুমান করা খুব সহজ নয়।
এদিকে বুধবার লাহোরে আয়োজিত মুসলিম লীগের এক সমাবেশে নওয়াজের প্রতি সমর্থন জানান দলটির নেতাকর্মীরা। এ সময় তারা স্লোগান দেন, নওয়াজের অসংখ্য ভক্ত তার জন্য জীবন দিতে প্রস্তুত।
৩ এপ্রিল ২০১৬ তারিখে দুনিয়ার প্রভাবশালী রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান এবং রাঘববোয়ালদের আর্থিক কেলেঙ্কারির তথ্য ফাঁস করে সাড়া ফেলে দেয় আলোচিত ‘পানামা পেপারস’। ফাঁস হওয়া ওই গোপন নথিতে অর্থ পাচারে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের ছেলের নাম উঠে আসায় নিজ দেশে চাপের মুখে পড়েন তিনি। শেষ পর্যন্ত বিষয়টি আদালতে গড়ায়। বিরোধী দলগুলো থেকে তার পদত্যাগ দাবি করা হয়।
পদত্যাগের দাবি সম্পর্কে তখন নওয়াজ শরিফ বলেছিলেন, ‘পানামা পেপারস নিয়ে কান্নাকাটি করার কোনও ভিত্তি নেই বিরোধীদের। বিশেষ করে পানামা পেপারস নিয়ে তদন্ত করার জন্য যখন আমি প্রধান বিচারপতিকে চিঠি লিখে কমিশন গঠন করার কথা বলেছি। আমি সত্যিকার অর্থেই চাই সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে তদন্ত কমিটি দ্রুত গঠন হোক। বিরোধীদের সমালোচনা দেশকে উন্নতির দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য নয়। বরং এটা হচ্ছে ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করার জন্য।
সূত্র: ডন, এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।
/এমপি/ এপিএইচ/