হামলার পর প্রাথমিকভাবে আফগান সেনা মুখপাত্র নাসরাতুল্লাহ জামশিদি জানিয়েছিলেন হামলাকারীরা ৮ সেনাকে হত্যা করে এবং ১১ জনকে আহত করে। পাল্টা হামলায় এক হামলাকারী নিহত এবং ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয় বলেও জানান তিনি।
তবে শনিবার নাম প্রকাশ না করে এক আফগান কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানান, হামলায় অন্তত ১৪০ জন নিহত হয়েছে। আবার হামলার দায় স্বীকার করে শনিবার তালেবানের মুখপাত্র জাবিহউল্লাহ মুজাহিদের দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়, ওই ঘটনায় অন্তত ৫০০ সেনা নিহত হয়েছে। আর সর্বশেষ আফগান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, হামলা শতাধিক হতাহত হয়েছে। কিন্তু ঠিক কতজন নিহত কিংবা কতজন আহত হয়েছে তা নির্দিষ্ট করে বলা হয়নি।
এদিকে মাজার ই শরিফ সেনাঘাঁটিতে তালেবান হামলায় শতাধিক সেনা সদস্য হতাহতের ঘটনায় একদিনের জাতীয় শোক পালন করছে আফগানিস্তান। দেশটির প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানির নির্দেশ অনুযায়ী জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রেখে শোক পালন করছে পুরো জাতি। নিহত সেনাদের স্মরণে রবিবার (২৩ এপ্রিল) জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি। শনিবার (২২ এপ্রিল) সেনাঘাঁটিটি পরিদর্শনের পর তিনি এ নির্দেশ দেন।
উল্লেখ্য, আফগানিস্তানের বালখ প্রদেশের রাজধানী মাজার-ই-শরিফের সেনা ঘাঁটির একটি মসজিদের কাছে শুক্রবার (২১ এপ্রিল) এ হামলা হয়। সামরিক পোশাকে এবং দুটি সামরিক যানে করে সেনাঘাঁটির গেটে হাজির হয় ছয়-দশজনের মতো হামলাকারী। নিরাপত্তারক্ষীকে তারা জানায় ওই গাড়িগুলোতে করে আহত সেনাদের নেওয়া হচ্ছে এবং তাদের জরুরি ভিত্তিতে ভেতরে ঢোকা প্রয়োজন। পরে সেনা সদস্যদের লক্ষ্য করে গ্রেনেড হামলার পাশাপাশি গুলি করতে থাকে তারা। সেসময় বেশ কয়েকজন হতাহত হন।
শনিবার, হামলাস্থল পরিদর্শনে যান আশরাফ ঘানি। নিহত সেনাদের স্মরণে রবিবার সারাদেশে একদিনের শোক পালনের ঘোষণা দেন তিনি। জ্যেষ্ঠ নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠকও করেন আশরাফ ঘানি। এ ঘটনায় ‘গুরুতরভাবে’ তদন্ত চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয় সেসময়।
শুক্রবারের ওই হামলার দায় স্বীকার করে তালেবান জানায়,তাদের হামলাকারীরা আত্মঘাতী বিস্ফোরণ ঘটিয়ে প্রথমেই ঘাঁটির প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেঙ্গে দিয়েছে। সম্প্রতি আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলে তালেবানের কয়েকজন শীর্ষ নেতাকে হত্যার জবাবে এ হামলা চালানো হয়েছে বলেও দাবি করেছে সংগঠনটি।
আফগানিস্তানে মোতায়েনকৃত বিদেশি সেনা সদস্যরা প্রায়ই ঘাঁটিটি ব্যবহার করে থাকে বলে জানিয়েছে রয়টার্স। এ ঘাঁটিতে তারা আফগান বাহিনীকে প্রশিক্ষণ ও সহায়তা দিয়ে থাকেন।
/এফইউ/