মিসরে মুসলিম ব্রাদারহুড প্রধানের যাবজ্জীবন

কারারুদ্ধ মোহাম্মদ বাদিমিশরে নিষিদ্ধ ঘোষিত রাজনৈতিক দল মুসলিম ব্রাদারহুডের প্রধান মোহাম্মাদ বাদি এবং অপর দুই নেতাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন দেশটির একটি আদালত। বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা এবং এক আইনজীবীর বরাত দিয়ে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা  এ খবর জানিয়েছে।

সোমবার মিসরের গিজা অপরাধ আদালতের রায়ে বলা হয়, ২০১৩ সালে নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে পরিকল্পিত সহিংস হামলা চালানোর অভিযোগে মুসলিম ব্রাদারহুডের প্রধান মোহাম্মদ বাদি, দলের মুখপাত্র মাহমুদ গোজলান এবং দলের গাইডেন্স ব্যুরোর সদস্য হোসাম আবুবকরকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

২০১৩ সালে জুলাইয়ে এক অভ্যুত্থানে মিসরের নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুসরিকে ক্ষমতাচ্যুত করে দেশটির সেনাবাহিনী। পাবলিক প্রসিকিউটর দফতর জানিয়েছে, তখন গির্জা ও নিরাপত্তাবাহিনীর ওপর হামলার পরিকল্পনা করার অভিযোগ করা হয় বাদিসহ আরও ৩৭ জনের বিরুদ্ধে।

২০১৩ সালের ১৪ আগস্ট রাজধানী কায়রোর রাবা এলাকায় বিশাল বিক্ষোভ প্রদর্শন করে মুসলিম ব্রাদারহুড। সেখানে নিরাপত্তাবাহিনী গুলি চালালে কয়েকশ’ মানুষ নিহত হন বলে অভিযোগ রয়েছে।

ওই মামলায় মুসলিম ব্রাদারহুডের অপর মুখপাত্র যুক্তরাষ্ট্র ও মিসরের যৌথ নাগরিক মোহাম্মদ সুলতান, তার বাবা সালাহ সুলতান এবং আহমেদ আরেফকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। ২০১৫ সালে মিসরীয় কর্তৃপক্ষ মোহাম্মদ সুলতানকে যুক্তরাষ্ট্রে ফেরত পাঠালেও তার বাবা এখনও কারাগারে বন্দি রয়েছেন।

এর আগে ২০১৫ সালে ওই মামলায় মোহাম্মদ বাদিসহ ১৩ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ৩৪ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। পরে ওই মামলাটি পুনরায় শুনানির নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ। সোমবার গিজা আদালত ফাঁসির রায় বাতিল করে তিনজনকে যাবজ্জীবন, ২৭ জনকে বিভিন্ন মেয়াদের কারাদণ্ড এবং ২১ জনকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন।

রায় ঘোষণার পর মুসলিম ব্রাদারহুডের আইনজীবী আবদেল মাকসুদ জানিয়েছেন, ‘এ রায়ের বিরুদ্ধে সব অভিযুক্তরাই আপিল করবেন।’

উল্লেখ্য, ২০১৩ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে প্রেসিডেন্ট মুহাম্মদ মুরসিকে ক্ষমতাচ্যুত করে মিসরীয় সেনাবাহিনী। তখনকার সেনাপ্রধান ফাত্তাহ আল সিসি দেশটির ইতিহাসের প্রথম গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নির্বাচিত প্রেসিডেন্টকে ক্ষমতাচ্যুত করার প্রক্রিয়ায় নেতৃত্ব দেন। এই ঘটনার কিছুদিনের মধ্যেই আগস্টে মুসলিম ব্রাদারহুড বিক্ষোভে নামলে প্রায় ১০০০ মানুষ নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে প্রাণ হারান। সেনাবাহিনী ক্ষমতা নেওয়ার পরপরই মুসলিম ব্রাদারহুডকে নিষিদ্ধ করে।   

/এসএ/