সিএনএন-এর দাবি

অপসারণ ঠেকাতে আইনজীবীদের গবেষণায় বসিয়েছেন ট্রাম্প

nonameমার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিএনএন দাবি করেছে, ডোনাল্ড ট্রাম্পকে পদচ্যুত হওয়া (অভিশংসন) থেকে বাঁচাতে ট্রাম্প প্রশাসনের আইনজীবীরা কাজ শুরু করেছেন। তবে হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তারা ট্রাম্পের অভিশংসনের সব ধরনের আশঙ্কা নাকচ করে দিয়েছেন। তা সত্ত্বেও সিএনএন বলছে, ট্রাম্পকে সুরক্ষা দেওয়ার প্রস্তুতি হিসেবে অভিশংসন প্রক্রিয়া নিয়ে গবেষণা শুরু করেছেন হোয়াইট হাউসের আইনজীবীরা। তবে নিজেদের দাবির পক্ষে কোনও প্রকাশ্য সূত্রকে উদ্ধৃত করতে সক্ষম হয়নি ওই টেলিভিশন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুই সূত্রের বরাত দিয়ে খবরটি জানিয়েছে তারা।

উল্লেখ্য, শীর্ষ মার্কিন মূলধারার সংবাদমাধ্যমগুলোর সঙ্গে নির্বাচনী প্রচারণার কাল থেকেই ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব চলছে। তাদের বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত নেতিবাচক কাভারেজ তৈরির অভিযোগ তুলে তিনি ধারাবাহিকভাবে নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। সিএনএন আলোচ্য মার্কিন মিডিয়াগুলোর মধ্যে শীর্ষস্থানীয়।

সিএনএন-এর নিজের দাবি অনুযায়ীই অভিশংসনের আলোচনায় অংশ নেওয়া দুই মার্কিন কর্মকর্তা তাদের বলেছেন, ট্রাম্পের অভিশংসনের সম্ভাবনা ক্ষীণ বলেই এখনও মনে করছে তার প্রশাসন। তাদের বিশ্বাস, তেমন সম্ভাবনা তৈরি হলেও কংগ্রেসে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প রিপাবলিকানদের সমর্থন পাবেন। কর্মকর্তাদের মতে, এমনকি ডেমোক্রেটরা এ মুহূর্তে অভিশংসন আলোচনা ঠাণ্ডা করার চেষ্টা করেছে। ডেমোক্রেটরা বলছেন, এখনও এটার সময় হয়নি। তবে সিএনএন-এর দাবি অনুযায়ী কোনও ধরনের আশঙ্কা ছাড়াই ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে ট্রাম্প প্রশাসনের আইনজীবীরা তাকে রক্ষার প্রচেষ্টা হাতে নিয়েছেন।

ওই আলোচনায় অংশ নিয়েছেন দাবি করে, সিএনএন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে বলছে, শিগশির অভিশংসনের আশঙ্কা না থাকলেও  হোয়াইট হাউসের আইনজীবীরা এক সপ্তাহ ধরে অভিশংসন বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন।  অভিশংসন প্রক্রিয়া কার্যকরের ব্যাপারে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ শুরু করেছেন।

হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো বিবৃতি দেওয়া হয়নি। এদিকে সিএনএন জানায়নি, তারা ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে কিনা। ট্রাম্পবিরোধী সিএনএন-এর দাবি, ওই সংবাদমাধ্যমে  প্রতিবেদন প্রকাশের পর কর্মকর্তারা দাবি করেন ওই তথ্য সত্য নয়। হোয়াইট হাউস আইনজীবীরা অভিশংসন প্রক্রিয়া নিয়ে গবেষণা করছে না। সিএনএন-এর দাবি অনুযায়ী আইনজীবীদের এ আলোচনা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের আইনি সুরক্ষা জোরদার করার ক্ষেত্রে মূলত হোয়াইট হাউসের একটি অভ্যন্তরীণ প্রচেষ্টা। মার্কিন নির্বাচনে রুশ সংশ্লিষ্টতা তদন্তে নতুন করে বিচার বিভাগের বিশেষ কৌঁসুলি নিয়োগের পর প্রক্রিয়াটি জোরালো হয়েছে।

মার্কিন সংবিধানের ১৯৬৭ সালে প্রণীত এক সংশোধনীতে বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট যদি তার ক্ষমতা ও দায়িত্ব পালনে অক্ষম হন, তাহলে তাকে অপসারণ করা যাবে। কিছু ডেমোক্রেট আইনপ্রণেতা দাবি করেছেন, ট্রাম্প সম্ভবত প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালনের জন্য মানসিকভাবে সুস্থ নন। কিন্তু এই প্রেক্ষিতে কাউকে অপসারণের নজির নেই। এর বাইরে রয়েছে অভিশংসনের মাধ্যমে অপসারণ।

অভিশংসন প্রক্রিয়ার অধীনে, কংগ্রেসের প্রতিনিধি পরিষদের জুডিশিয়ারি কমিটি প্রথমে শুনানি শুরু করবে। এরপর প্রতিনিধি পরিষদের সদস্যরা প্রেসিডেন্টকে অভিশংসন করার প্রশ্নে ভোট দেবে। সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের ভোটে প্রেসিডেন্টকে অভিসংশিত করা যাবে। তবে তখনই প্রেসিডেন্ট অপসারিত হবেন না। পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে অভিশংসন প্রস্তাব সিনেটে যাবে। সেখানে প্রেসিডেন্টকে চূড়ান্তভাবে অপসারণের জন্য দুই-তৃতীয়াংশ সিনেটরের ভোট প্রয়োজন হবে। ট্রাম্পের ক্ষেত্রে এইসব হিসেব মিলিয়ে তার অপসারণকে আপাতত অসম্ভব বলেই মনে করছেন রাজনীতি বিশ্লেষকরা। 

/এমএইচ/বিএ/